আমরা জানি মানুষ প্রথম আকাশে উড়তে পারে ১৭৮০ সালে বেলুন আবিষ্কারের মাধ্যমে।১৯০৩ সালে রাইটরা আবিষ্কার করে উড়োজাহাজ।
যা মানুষের শূন্যে উড়ার স্বপ্নকে আরও সহজ করে তুলে। আমাদের জানা ইতিহাস তাই বলে।কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু রহস্যময় নিদর্শন পাওয়া যায় যার ফলে আমরা ধারনা করতে পারি আমাদের জানা ইতিহাসের অনেক আগেই মানুষ উড়তে পারত।আমি প্রতিটি ধর্মর উপর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই ধর্মগ্রন্থ বা পুরাণে এমন অসংখ্য কাহিনীর বর্ণনা দেওয়া আছে যা যদি সত্যি হয় তাহলে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় আরও হাজার হাজার বছর আগেই মানুষ বিমান বা এজাতীয় কোনও উড্ডয়ন যন্ত্রের মাধ্যমে উড়তে পারত।উদাহরনস্বরুপ বলা যায় হিন্দু দেবতাদের রথ, মুসলমানদের বোরাক বা বিভিন্ন পুরাণে বর্ণিত দেবতাদের অগ্নিরথের কথা।এগুলো কিন্তু স্পষ্টতই উড়ার প্রমাণই দেয়। কারণ আপনি আর যাই করেন না কেন অলৌকিক এমন কিছু বিশ্বাস করতে পারেন না যার আসলেই কোনও ভিত্তি বা ব্যাখ্যা দেওয়া একেবারেই অসম্ভব।
এবার আসুন আমরা এমন কিছু নমুনা দেখি যা দেখে মনে হতে পারে আসলেই প্রাচীনকালে বিমানজাতীয় কিছু ছিল।
মিশরের বিমান-
নীচের মডেলটি
১৮৯৮ সালে মিশরের সাক্কুয়ারার একটি মন্দির থেকে আবিষ্কার করা হয়। কাঠের এ মডেলটি লম্বায় ৫.৬ ইঞ্চি এবং এর পাখার দৈর্ঘ্য ৭.২ ইঞ্চি।পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় এটি তৈরি করা হয়েছিল আনুমানিক ২০০ খ্রি:পুর্বাব্দে।বর্তমানে এটি রক্ষিত আছে কায়রো জাদুঘরে।
এই মডেলটি পুনরায় নজরে পড়ে ড: খলিলের যিনি বিভিন্ন প্রাচীন মডেল নিয়ে গবেষণা করেন। মিশর সরকার এই আবিষ্কারকে অত্যন্ত গুরুত্ব-সহকারে দেখে এবং একাধিক বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে। যারা পরীক্ষানিরীক্ষা করে রায় দেয় এটি একটি বিমানের মডেল!এ সিদ্ধান্তের পিছনে তারা ব্যাখ্যা দেয় এই মডেলটির গঠন একটি আধুনিক পুশার গ্লাইডার(ইঞ্জিনবিহীন ছোট খেলনা বিমান যা উড়তে পারে) এর অনুরূপ।এই টাইপ গ্লাইডার বাতাসে ভেসে থাকতে সক্ষম এমনকি যদি এতে ছোট ইঞ্জিন বসানো হয় তাহলে ৪৫-৬৫ কিমি বেগে উড়তেও সক্ষম।
তবে সবচেয়ে কৌতূহলজনক হল এই মডেলটির পাখার গঠন।মডেলটিতে আকা পাখার নীচের দিকে বাঁকানোর অনুপাত একটি বিমানের গতিকে বাধাগ্রস্থ না করেই সর্ব্বোচ্চ উচ্চতায় তুলতে সক্ষম।যা আধুনিক কনকর্ড বিমানে ব্যবহৃত হয়! যদি আমরা তারপরও ধরি এটি কোনও বিমানের মডেল নয় ছিল কোনও খেয়ালী শিল্পীর কাজ তবু প্রশ্ন থেকে যায় কি দেখে সেই শিল্পী এমন একটি মডেল এঁকেছিলেন ২০০০ বছর আগে? কি করেই বা এই মডেলটি বর্তমান সময়ের বিমানের মডেলের মত আধুনিক ও নিখুঁত হল?
এইটা কি হেলিকপ্টার না?
প্রাচীন মিশরীয়রা বিমান আবিষ্কার করতে পেরেছিল কিনা তা নিশ্চিত করে বলার কোনও উপায় নেই কারণ মিশরের কোথাও কোনও বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় নি। তবে নীচের ছবিটি দেখুন।
এটি মিশরের অ্যাবিডস এর এক মন্দিরের দেয়ালে খোদাইকৃত চিত্র।
উপরের ছবিটি দেখুন। হুবহু আধুনিক হেলিকপ্টারের মত না?নীচেরটাও কি বিমানের মত দেখায় না? ড: রুথ হভার প্রথম যখন এই চিত্রের ছবি প্রকাশ করেন তখন সবাই ধরে নিয়েছিল এটা কোনও হোয়াক্স। হভার হয়ত ছবিকে কিছু পরিবর্তন করে হেলিকপ্টার আকৃতি করেছেন। কিন্তু পরে নৃতত্ত্ববিদরা পরীক্ষা করে দেখেন এই ছবিটি সত্যি সত্যি খোদাইকৃত আছে ঐ মন্দিরে।তবে এতদিন এটা প্রকাশ না পাওয়ার পিছনের কারণ হল চিত্রটির উপর আরেকটি চিত্রকর্ম আকা হয়েছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ঐতিহাসিক গন এই চিত্রটির ব্যাখ্যা দেন এভাবে- দেয়ালটিকে প্যালিম্পসেস্ট রূপে ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ দেয়ালে একাধিকবার চিত্র খোদাই করা হয়। একাধিক চিত্রের মিশ্রণে তৈরি এই হাইয়ারগ্লিপিকস।
আমার কাছে ব্যাখ্যাটা মানসিক ডাক্তারদের অবচেতন আর চেতন মনের সংঘর্ষ জাতীয় কপচাকপচির মতই মনে হয়েছে আর কিছুই না। একাধিক চিত্রের মিশ্রণে একটি হেলিকপ্টার আর বিমান ও ফ্লাইং সসারই কেন হবে?অন্য কিছু কেন নয়? ব্যাখ্যা না দিতে পার ওমনি বসিয়ে দাও উল্টাপাল্টা ট্যাগ।যত্তসব।
এখন কথা হল এই চিত্র কি প্রমাণ দেয় প্রাচীন মিশরীয়রা হেলিকপ্টার আবিষ্কার করেছিল?
হ্যাঁ এবং না দুটো উত্তরই আসে। এই চিত্রটি কোনও খেয়ালি শিল্পীর কল্পনা হতে পারে। তবে একটা কথা হল শিল্পীরা কোনও মডেল অনুসরণ করেই ছবি আকে। যা কোনোদিন দেখে নাই তা কি তাদের পক্ষে আকা সম্ভব? এমন হুবহু মিল কি সত্যিই কোনও খেয়ালি শিল্পীর কাজ? সত্যিই কি সবকিছু এত সহজ?
চলুন আমরা এবার দঃ আমেরিকান বিমানের মডেল দেখি।
নীচের এই অলংকারটি(?) পাওয়া গেছে মধ্য আমেরিকাতে।
এটি প্রি কলম্বিয়ান এরোপ্লেন মডেল নামে পরিচিত। যা পাওয়া গেছে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-৮০০ সালের মধ্যে। এটি সোনার তৈরি বলে এর সঠিক বয়স নির্ধারণ করা সম্ভব হয় নি। যদি আমরা পাওয়ার সময়ই তৈরি করা হয়েছে ধরি তবু এর বয়স কমপক্ষে ২৫০০ বছর হয়।প্রত্নতত্ত্ববিদ-গন মডেলটির গায়ে প্রাণী আকৃতি বস্তু বলে ট্যাগ বসিয়ে দিয়েছেন।কিন্তু সত্যিই কি এটি কোনও জীব জন্তুর মডেল?
বেশীরভাগ প্রত্নতত্তবিদদের ধারনা এটি মাছের মডেল।এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে এটি দেখতে মাছের মত। এর লেজ আছে। আছে পাখনা।আছে চোখের স্পষ্ট চিহ্ন। যদিও বেশকিছু বিসদৃশতা লক্ষ করা যায় মাছের সাথে তবু বলা যায় ঐসময় নিশ্চয় এমন মাছ ছিল।
ভাল কথা। আসুন দেখি এটি মাছ কিনা।
এই মডেলটির সামনে রয়েছে দুটি গোলাকৃতি বস্তু।
যা চোখ বলে ধরা হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি সাধারণত মাছের চোখের অবস্থান হয় বডিলাইনের মাঝামাঝি। মাথার সামনে নয়। কেউ কেউ আবার বলেছেন তাহলে মডেলটির নাকের উপর যে দুটো পেঁচানো চিহ্ন আছে তাই চোখ। কিন্তু এখানেও সমস্যা আছে। কারণ নাকের ঐ পেঁচানো চিহ্ন মডেলটির পাখনার মধ্যেও আছে।দুই স্থানে চোখ হয় কিভাবে? লেজের ক্ষেত্রে পার্থক্যটা আরও বেশী।কোনও মাছের লেজই একটি অংশে সোজা খাড়া নয়।কিন্তু এই মডেলটির লেজ এমন।এই লেজের কাঠামোর সাথে এলভেটর(বিমান যন্ত্রাংশ) এর বেশ ভালো তুলনা চলে।লেজটির আয়তাকৃতি গঠন এবং এর গায়ে কিছু দুর্বোধ্য চিহ্ন লেজটিকে জ্যামিতিক সেপড বলেই ধারনা দেয়। যা কোনও প্রাণীর লেজের চেয়ে যন্ত্রাংশর সাথে অধিক তুলনীয় বলে ধরা যেতে পারে। এবার আসি পাখাটির গঠন নিয়ে। পাখাটি পাশ থেকে দেখলে মনে হয় সমান্তরাল কিন্তু সামনে থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় নীচের দিকে সামান্য বাঁকানো যা বিমানের পাখার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এতকিছুর পর যদি ধরা হয় এটি মাছ তবে রয়েছে এরচেয়েও বড় সমস্যা।এই বস্তটির মাথা খণ্ডিত।
মাছই যদি হয় তবে কেন এর মাথা কেটে শিল্পী মডেলটি তৈরি করতে যাবেন?
সবচেয়ে বড় কথা হল খণ্ডিত অংশের ভিতরের গঠন আরও জটিল।ভিতরে রয়েছে অর্ধবৃত্তাকার খাজ।আছে স্কুপ। এটি এমন নয় যে কোন চিড় যার ফলে এটিতে চেইন আটকানো যাবে। যা মডেলটিকে অলংকার প্রমাণে সহায়তা করতে পারে।তাছাড়া কাঠামোটির আরও ভিতরে রয়েছে আয়তকার আরও একটি বস্তুর চিহ্ন।
এখন সবকিছু বিবেচনায় নিলে বস্তুটিকে কোনও প্রাণীর মডেল এর চেয়ে কোনও যন্ত্র বিশেষ করে বিমান কাঠামো বলে ধারনা করাই অধিক যুক্তিসংগত হতে পারে। এই মডেলটি এরোডাইনামিকস এর অনেক ইঞ্জিনিয়ার দ্বারাই পরীক্ষা করানো হয়েছে।তেমনি একজন "আর্থার ইয়ং"। ইনি "বেল হেলিকপ্টার এন্ড আদার এয়ারক্রাফট" এর একজন ডিজাইনার।যিনি পরীক্ষা করে বলেছেন এই মডেলটিতে একটি আধুনিক বিমানের অনেক বৈশিষ্ট্য আছে।
তবে কি এটা একটি বিমান বলে আমরা নিশ্চিতভাবে ধরে নিব?
না!
কারণ হিসাবে প্রথমই বলা যায় পাখার অবস্থান। এর পাখা আরও সামনে থাকার কথা। নাহলে উড়া সম্ভব না। তাছাড়া সামনের (যে অংশটাকে আমরা নাক ধরছি)অংশটা কোনও বিমানের মডেলের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়।আরও কিছু বৈশিষ্ট্য যা বিমানের মডেলের সাথে মিলে না।
তবে আমরা এবার যদি একটু অন্যরকমভাবে মডেলটির কল্পনা করি তাহলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে।ধরি নাকটি একটি জেট।বিমান নামানোর সময় জেট প্রবাহ কাজে লাগানো হতে পারে। কিন্তু এটা তখনি সম্ভব যখন ধরা যাবে নাকটি তথা জেটটি বস্তুটির একটি মোভেবল অংশ। যা বিমানটি নামার সময় পিছনে থাকে। এবং এই কাঠামোর ফলে পাখার অবস্থানও সঠিক অবস্থানে চলে আসে।
যা উড্ডয়নের জন্য সহায়ক।এখন শুধু বাকি থাকে নাক তথা জেট এবং পাখাতে অবস্থিত পেঁচানো দুটি চিহ্নের ব্যাখ্যার। এ দুটোর ব্যাপারে বলা যায় এগুলো বিমান উঠানামার সংকেত হিসাবে ব্যবহৃত হত।
অনেক তো জ্ঞান কপচানো হল এবার চলুন ভারতে চলে আসি।
প্রাচীন ভারতীয় রাজা অশোক ৯জন বিজ্ঞানীর একটি গুপ্ত সংঘটন চালু করেছিলেন। ধারনা করা হয় তারা প্রত্যেকেই একটি করে বই লেখেন। যার একটি হল সিক্রেট অফ গ্যাভিটেশন।এই বইটির কথা ইতিহাসবিদ গন জানতেন এবং ধারনা করা হত বইটি খুব সম্ভবত তিব্বতের কোথাও আছে।
যাই হোক কয়েক বছর আগে চীন সরকার কিছু প্রাচীন সংস্কৃত ডকুমেন্ট আবিষ্কার করে তিব্বতের লাসা থেকে।এবং এগুলো অনুবাদের জন্য পাঠানো হয় চণ্ডীগড় ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডঃ রুথ রেয়নার কাছে। যিনি জানান এই ডকুমেন্টগুলোতে স্পেশসীপ কিভাবে নির্মাণ করতে হবে তা নিয়ে তথ্য আছে!
চীন সরকার এটাকে গুরুত্বের সাথে নিলেও ভারত তখনও তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দেখায় নি। পরে চীন দাবি করে তারা এই ডকুমেন্টগুলো তাদের স্পেস প্রোগাম কোর্সে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
ডকুমেন্টগুলোতে অবশ্য স্পষ্ট কোনও বিবরণ নাই যে প্রাচীন ভারতীয়রা বিমানে/উড্ডয়ন যন্ত্রে করে কোনও গ্রহে বা চাদে গিয়েছিল কিনা বা আকাশেই উড়েছিল কিনা তবে একথা স্পষ্ট আছে যে তারা কোনও মানুষকে গ্রহে বা চাদে পাঠাতে সক্ষম ছিল।
এখন যেটা ধারনা করা হয় সম্রাট অশোকের বইটিই চীন আবিষ্কার করেছে।
আর যাতে রয়েছে স্পেসসীপ তৈরির নানা কথা।
প্রাচীন ভারতের সম্পূর্ণ ইতিহাস আমরা জানি না। অনেক কিছু নিয়েই আছে বিতর্ক।যদিও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রামের গুরুত্ব অনেক তবে ইতিহাসবিদদের দৃষ্টিতে এটা নিশ্চিত না রাম ও লক্ষন এর যুদ্ধ মিথ নাকি সত্যি। তবে ইদানীং রাম এর অস্তিত্বের কথার ভাল কিছু প্রমাণ পাওয়া যায়। রামায়ণে একাধিকবার বিমানের কথা আছে পুষ্পক এর কথা আছে যাও একধরনের বিমান। আছে বিমানের আকৃতি ও গঠনের কথা।
রামায়ণের বর্ণনায় ডাবল ডেক বিশিষ্ট বৃত্তাকার বিমানগুলোতে আছে গুম্বজ। যা আমাদের ফ্লাইং সসারের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এছাড়াও আরও তিন ধরনের বিমানের কথা আছে যার একটির বর্ণনা সিগার সেপড এয়ারশিপ এর সাথে মিলে।
প্রাচীন ভারতীয় আরেক গ্রন্থ সমর সূত্রধারাতে বিমান নির্মাণ,আরোহণ-অবতরণ সহ বিমানের নানা খুঁটিনাটি দিক নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করা হয়েছে।
ওখানে বলা আছে হালকা শক্ত ও টেকসই ধাতু দ্বারা তৈরি বিমান দেখতে হবে পাখির মত।এর ভিতর রাখতে হবে হিটিং সিস্টেমসহ পারদ ইঞ্জিন। পারদ উত্তপ্ত হলে বিমান বৃত্তাকার ভাবে উড়তে এবং নামতে পারবে। বিমান তেরচাভাবে পিছনে বা সামনে যেতে সক্ষম।এবং এতে করে মানুষ আকাশে উড়তে পারবে ও স্বর্গীয় দেবতfরা ধরাতে আসতে পারবে। ফ্লাইং সসারের সাথে তাজ্জব মিল! তাই না?
ইঞ্জিনের গঠন নিয়েও বিস্তারিত লেখা আছে বইটিতে।তাতে বলা আছে বৃত্তাকার বিমান কাঠামোর ভিতরে সোলার মার্কারি(পারদ) বয়লার সহ মার্কারি ইঞ্জিন বসাতে হবে। চারটি পারদ বিশিষ্ট শক্তিশালী কনটেইনার স্থাপন করতে হবে ভিতরে।যেগুলো সৌর শক্তিতে উত্তপ্ত হয়ে ইঞ্জিন চালু হবে! সোলার প্ল্যান্ট? কত হাজার বছর আগে? খায়সে! ভাল কথা সমর সূত্রধারা কিন্তু বেদ থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে লেখা। এই লেখার আরও হাজার হাজার বছর পর মার্কারি ইঞ্জিন আবিষ্কার নিয়ে গবেষণা শুরু করে নাসা!
১৮৭৫ সালে ভারতের এক মন্দির থেকে প্রাচীন এক গ্রন্থ পাওয়া যায়। যা রচনা করেছেন সাধু বারতবাজি খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ বছর আগে। বইটি কোনও মৌলিক গ্রন্থ নয় এটি লেখতে তিনি প্রাচীন বেদ ও রামায়ণের সাহায্য নিয়েছিলেন।মজার ব্যাপার হল বইটির নাম বৈমানিক শাস্ত্র। বইটি বিমান নির্মাণ,বিমান অদৃশ্যকরণ,শত্রু বিমান ধ্বংস-করন সহ মোট আটটি অধ্যায়ে সাজানো।বইটিতে তিন ধরনের বিমান(রুকমা,সাকুনা,ত্রিপুরা)
এর গঠনের কথা উল্লেখ আছে। আছে বিমানের নানা যন্ত্রের বর্ণনা এবং বিমানের জ্বালানির কথাও উল্লেখ আছে।
বই এর বর্ণনামতে একটি বিমান ছিল বৃত্তাকার এবং এগুলো দ্বারা আকাশে উড়া যায়!
বিমানের জ্বালানিতে ব্যবহার করা হত পারদ আবার কখনও হলুদেটে সাদা তরল। খুব সম্ভবত তিনি গ্যাসোলিন এর কথা বলেছেন। উনার বিবরণ দ্বারা বুঝা যায় বিমানগুলোতে কম্বাসচন ইঞ্জিন এবং পালস-জেট ইঞ্জিন দুই ধরনের ইঞ্জিনই ব্যবহার করা হত। যে পালস-জেট ইঞ্জিন নিয়ে হাজার বছর পর নাৎসিরা গবেষণা শুরু করে।তাদের রকেটে ব্যবহার করার জন্য। যেভাবেই হোক হিটলার প্রাচীর ভারতের এই গ্রন্থগুলো সম্পর্কে জানতেন এবং এগুলো সংগ্রহ করার জন্য তার প্রতিনিধিদের ভারতবর্ষে পাঠিয়েছিলেনও।
এছাড়াও রামায়ণ বেদ মহাভারতে নানা স্থানে বিমান(কখনও বা পুষ্পক কখনও বা অগ্নিরথ মূলত সবই এক)এর কথা আছে। তবে পুরাণ নিয়ে আমি নিজে তেমন একটা বিশ্বাসী না তাই এসব নিয়ে কথা বাড়ালাম না।
এখন মূল কথা হল বৈমানিক শাস্ত্র ও সমর সূত্রধারার প্রাচীনতা নিয়ে কোনও সন্দেহ না থাকলেও বিমান গঠন এর বর্ণনা ও যেসমস্ত নকশা আকা আছে তার বৈজ্ঞানিক সত্যতা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন আছে। বর্ণিত বিমানগুলো কি সত্যিই উড়তে পারত? এগুলো কি নির্মাণ সত্যিই সম্ভব?
সব প্রশ্নের উত্তরই সন্দেহের মুখে।বৈমানিক শাস্ত্র নিয়ে অনেক সন্দেহ আছে।আধুনিক বিমানের গঠনের সাথে বৈমানিক শাস্ত্রে আকা বিমানের গঠনের তেমন একটা মিল নাই। তবে মজার ব্যাপার হল বৈমানিক শাস্ত্র ফলো করে সত্যিই কিন্তু বিমান তৈরি করা হয়েছিল।
কবে জানেন?
১৮৯৫ সালে। এবং সেই বিমান মুম্বাই বিচে উড়েছিল ১৫০০ ফিট উপরে। তারপর হয়েছিল ধ্বংস।আবিষ্কারক হল শিবসংকর তেলপদ। একজন ভারতীয়!
মাই গড! অবাক হওয়ার মত ব্যাপার,তাই না? রাইট ভাইগন যে তাহলে পথে বসে যায়। কারণ বিমান আবিষ্কারের কৃর্তত্ব দেওয়া আছে তাদের। যারা আবিষ্কার করে ১৯০৩ সালে। কিন্তু মূল সমস্যাটা হল শিবসংকর এর এই বিমান উড়া নিয়ে আছে নানা সন্দেহ। যদিও অনেকেই নিজ চোখে তার বিমান উড়তে দেখেছেন কিন্তু বেশীরভাগই আবার দাবী করেন বিমান একটা তিনি তৈরি করেছিলেন বটে নাম ছিল তার মারুত শক্তি তবে তার এই বিমান উড়তে পারত না। শিবসংকর এর উড়োজাহাজ নিয়ে গবেষণা অবশ্য থেমে গিয়েছিল বারোদার রাজার জন্য। ধারনা করা হয় ব্রিটিশ সরকারের পরোক্ষ নির্দেশে উনাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে ইতিহাসের এইদিকটা থেকে যায় অন্ধকারেই।
পৃথিবীতে অনেক কিছুই আছে যার ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব না। এই মডেলগুলোও তেমন। হয়ত প্রাচীনকালে বিমান ছিল হয়ত ছিল না। তবে এই নিদর্শনগুলো আমাদের জন্য রেখে গেছে অনেক প্রশ্ন। আমরা যে ইতিহাস জানি মানবসভ্যতার তা কি ঠিক? নাকি মাঝখানে অনেককিছুই বাদ পড়ে গেছে?
তথ্যসূত্র- সূত্র১
সূত্র২
সূত্র৩
এছাড়া্ও আরো কিছু সাইট থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে।
এই সিরিজের আগের পর্ব-
বাগদাদের ব্যাটারি এবং পীরি রইস এর ম্যাপ।রহস্যময় দুনিয়া-২