পার্সোনালিটি ও তার ডিসওর্ডার নিয়ে আপনাদের আগ্রহ থাকতে পারে আমার আগে ভাবনায় ছিল না। গত কয়েকটি পোস্ট করার পর তার পাঠক সংখ্যা দেখে পোস্ট লেখার কস্টটা আমি ভুলে গেছে।
শেষ পর্বটা আরো দুইদিন আগে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকভাবে গুছাতে একটু সময় লেগে গেছে । দেরী হওয়ার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
ডিসওর্ডার জানার আগে পার্সোনালিটি কি জানতে এখানে ক্লিক করুন ।
ডিসওর্ডার এর ১ম অংশ জানতে এখানে ক্লিক করুন ।
ডিসওর্ডার এর ২য় অংশ জানতে ক্লিক করুন ।
পার্সোনালিটি ডিসওর্ডারঃ (গতপর্বের পর থেকে)
অবসেশনাল পার্সোনালিটি ডিসওর্ডারঃ
- এ পার্সোনালিটির বৈশিষ্ট হচ্ছে এরা সব জিনিসই নিখুতভাবে করতে চায়, পেতে চায়।
- নিখুতভাবে করতে গিয়ে অনেক কাজই শেষ পর্যন্ত করে উঠতে পারে না।
- কোন কাজের উপায় ঠিক করতে এদের প্রচুর সময় লেগে যায়।
- অনেকাংশে কৃপন স্বভাবের হয়।
- স্নেহ ভালবাসা আদানপ্রদানে যথেস্ট সংকোচ থাকায় এদের বন্ধু বান্ধব সংখ্যা খুব সীমিত।
- আবেগের বহিঃপ্রকাশের দরন এরা নীরস ব্যাক্তি বলে মনে হয়।
- আনন্দ উৎসবে মাতামাতি করতে এরা মোটেই পছন্দ করে না।
- এরা নৈতিক মানকে অতি উচু স্থানে দেয়।
- এরা কঠোর প্ররিশ্রমী হয়।
- এদের কাজ করার প্রচুর ধৈয্য ও ক্ষমতা থাকে।
- এরা সব কাজে রুটন মেনে চলতে পছন্দ করে।
- সময়ানুবর্তিতা , পরিস্কার - পরিচ্ছন্নতা ও নিজের কাজকর্মে এরা অন্যের হস্তক্ষেপ মোটেই পছন্দ করে না।
- এ টাইপের লোকেরা সব কিছু সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করে।
আগ্রেসিভ পার্সোনালিটি ডিসওর্ডারঃ
- এদের কোন ধরনের সংযমই থাকে না।
- এরা নিজেরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
- সব কিছুতে বাধার সৃস্টি করে।
- এরা কোন দ্বায়িত্ব গ্রহন করতে ঞ্জের উপর ভরসা পায় না।
- অসনভব ক্ষোভ প্রকাশ করে।
- এ ধরনের ব্যাক্তিরা একরোখা।
- রাগী প্রকৃতির।
- এরা স্বভাবতই বদ মেজাজি এবং সব বিপদজনক পরিস্থিতিতে এরা রাগ ও ক্ষোভের সাথে মোকাবেলা করতে পছন্দ করে।
- বিরোধিতা ঝগড়াঝাটি, মারপিট, অশান্তি সৃষ্টি করা এ ধরনের ব্যাক্তিদের পার্সোনালিটি।
প্যারানয়েড পার্সোনালিটি ডিসওর্ডারঃ
এই পার্সোনালিটির লোকদের সিজয়েড পার্সোনালিটির প্রায় সব লক্ষনইই উপস্থিইত থাকে। এরাও সিজয়েডদের মত চুপচাপ, নির্জন্তাপ্রিয়, কল্পনাবিলাসী, আত্নকেন্দিক। তার সাথে আবার সন্দেহ, হিংসা , জেদ, রাগ এইসব যুক্ত থাকে।
- এরা সব সময় অন্যের কাজের পিছনে একটা অসত উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করে।
- এরা মনে করে অন্যেরা তাদের পিছনে লেগেছে , ক্ষতি করার চেস্টা করছে।
- এরা কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না।
- অনেক ক্ষেত্রে নিক স্বামী বা স্ত্রীর সতীত্ব নিয়ে সন্দেহ করে।
- এরা কোন ভুল করলেও নজের দোষ স্বীকার করে না।
- সমালোচনা এতটুকু সহ্য করতে পারে না।
- নিজের অবস্থান গর্ভের চোখে দেখে।
- এরা অন্যদের ব্যংগ করে এবং তীব্র কটু ভাষায় কথা বলতে দ্বিধা করে না।
সারকথাঃ
প্রতিটি মানুষের জন্যি পার্সোনালিটি অনেক গুরুত্বপুর্ন ব্যাপার। পার্সোনালিটিকে বাদ কোন পার্সন ভাবা যায় না। যে মানুষ নিজের পার্সোনালিটি যত ভাল বুঝবে ততই সে অন্যের পার্সোনালিটি সম্পর্কে অবগত থাকবে। এতে তার চলার পথটা অনেক সুন্দর হবে।
অন্যদের সাথে মানিয়ে চলতে তার সুবিধা হবে।
অফটফিকঃ
মনোবিজ্ঞান নিয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কৌতুহল আমার সবসময়ই বিরাজমান। এটাতে অন্য রকম একটা তৃপ্তি পাই। পরিচিতদের মাঝে সাইকোলজিক্যাল কোন প্রবলেম দেখা দিলে তাকে ধরিয়ে দিতে পারি টুকটাক পরামর্শ দিতে পারি।
ব্যাক্তিগত একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করিঃ
আমার এক কাছের ছোট ভাইয়ের বেশ কিছুদিন আগে অদ্ভুত একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল।তার এক দূর সম্পর্কের ভাবি দেখতে মোটামুটি সুন্দর ছিল। মহিলার স্বামী সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকত। ভাবি তাই ওর সাথে প্রচুর গল্প করত, হাসি ঠাট্টা করত।এই ভাবে সে তার ভাবির উপর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং একপ্রকার সে সবার কাছে গোপন করে তার ভাবির সাথে যোগাযোগ রাখে ্যেটা শুধু কথাবার্তার মধ্যে বেশ কিছুদিন সীমাবদ্ধ ছিল। ভাবি তাকে ততদিনে বেশ কিইছু স্বপ্ন দেখিয়ে ফেলে এবং একপ্রকার ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে সবসময়।
ফলাফল ভাবির উপর দুর্বল হয়ে পড়ে ছেলেটি।
কিন্তু ভাবি যে তার সাথে তার সাথে ভান করতেছে , তাকে ব্যবহার করতেছে এটা সে বুঝতে পারছে না। দু চোখ স্বপ্নের জগতে থাকলে যা হয় সেটাই ঘটছে।
কিছু ব্যাপার নিয়া তার সাথে তার ভাবির কথা কাটাকাটি হয়। এর রেশ ধরে ভাবির সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।ভাবি ভাবির মত সব কাজ ঠিকমত চালিয়ে নিয়ে যায়। কিছু ছেলেটি বিচ্ছিন্নতা সইতে না পেরে মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে, পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যায়, জীবন যাপনে স্বাভাবিকতা হারায়।
তার এইসকল পরিবর্তন আমার চোখে পড়ে।এরপর আমি তাকে চাপ প্রয়োগ করি সমস্যাটা খুলে বলার জন্য।
সব শুনে আমি কিছু সাজেস্ট করি। প্রথম অবস্থায় তার কোন গুরুত্ব নেই। কিছুদিন যেতেই দেখি তার মধ্যে কিছুটা বধোদয় হয় এবং পরিবর্তন খুব ধীরে ধীরে ঘটে।
প্রায় ছয় মাস লাগে তার পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে।
অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করলাম এই কারনে যে গতকাল তার সাথে দেখা হয়েছিল। জানতে চাইলাম ভাবি রোগটা কি গেছে।
মুচকি হেসে উত্তর দিলঃ
ভাই যে কি বলেন!




অনেকেরই মনোবিজ্ঞান এ খুব কৌতুহল।
তবে যাদের চিত্ত দুর্বল, কিছুটা কল্পনাপ্রবল তারা মনোবিজ্ঞানে ডিসওর্ডার, ডিজিজ এই সব নিয়ে ঘাটাঘাটি না করাই ভাল। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪৯