somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৩৪

২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদি বাংলার ইতিহাস
(প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৩৪

মেঘনাঃ
মেঘনা নদী চাঁদপুরের দক্ষিণে মোহনার কাছে অনেক চওড়া এবং ত্রি-ধারায় বিভক্ত। এ ধারাগুলো হচ্ছে ইলশা, শাহবাজপুর ও বামনি। ইলশা নদী প্রায় ৬ কি.মি. বিস্তৃত। এ নদী ভোলা জেলাকে মুল ভূখণ্ড থেকে বিভক্ত করেছে।
শাহবাজপুর নদী ৮ কি.মি. বিস্তৃত। মেঘনা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী। সুরমা-কুশিয়ারা মিলিত হয়ে ভৈরবের উত্তর দিক থেকে মেঘনা নাম ধারণ করে ৪৬০ কি.মি.-এর অধিক দৈর্ঘ্যে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে পড়ছে। ভৈরবের ১৫/১৬ কিলোমিটার উত্তরে রাজাপুর-ডুবাজাইল ও কুলিয়ারচরের নিকটে কুশিয়ারা ও জোয়ালভাঙ্গা নদী সুরমার মূল জলধারার সঙ্গে মিলিত হয়ে সেখান থেকে মেঘনাকে বেশ প্রশস্ত করেছে। এ স্থান থেকে মেঘনার প্রশস্ততা ও গভীরতা আগেও ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। মির্জা নাথান তাঁর ‘বাহারিস্তান-ই-গায়েবী’র ১ম খণ্ডে উলেখ করেছেন যে, সম্ভবত ১৬০৯ সালে, নদীতে প্রচণ্ড ঢেউয়ের জন্য তিনি হাতির বহরসহ নদী পার হতে সাহস করেননি। খাবার ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করে হাতি চরে রেখে তাঁর সৈন্যবাহিনী নিয়ে নদী পার হয়েছিলেন। এ স্থানেই নৌসেনাপতি এতিমাম খাঁর দু’টি দ্রুতগামী নৌযান মালসামানসহ আনুমানিক বর্তমান বড়ইছাড়া গ্রাম ও পানিশ্বরের মধ্যবর্তী কোনো স্থানে ডুবে যায়। কাজেই, এতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, এখান থেকেই মেঘনা প্রশস্ত বড় নদী ছিল। কিন্তু ডুবাজাইলের উত্তর দিক থেকে নদী খুবই অপ্রশস্ত ছিল। লোকমুখে শোনা যায় যে, গরুর জোয়াল নদীতে ফেলে তার উপর দিয়ে লোকজন নদী পারাপার হতো বলে নদীর নাম জোয়ালভাঙ্গা। মেজর রেনেলের ম্যাপে অঙ্কিত মেঘনার উপরের দিকে অর্থাৎ কুশিয়ারার নকশার সরু রেখার মতো নদীর সঙ্গে স্থানীয় প্রবাদের কথা মিলে যায়। দীর্ঘ সময়ের ভিতর মেঘনার গতিপথ বিশেষ বদলায়নি। নদীবাহিত পলির পরিমাণ খুব বেশি। সেজন্য নদীর দুই তীর খুব বেশি ভাঙনের সম্মুখীন না হলেও পলির দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। বর্তমান বরিশাল ও ভোলা জেলা এবং আশেপাশের দ্বীপাঞ্চল মেঘনা ও পদ্মাবাহিত পলির দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছে। মেঘনার পূর্বতীরে পড়েছে হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এবং চাঁদপুর জেলা। তার সমান্তরালে পশ্চিম তীরে পড়েছে নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, বরিশাল ও ভোলা জেলা। ইবনে বতুতা বাংলাদেশ ভ্রমণ করার সময় দেখেছেন, বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও মেঘনা নদীর তীরে। চর পড়ে মেঘনা নদী প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্বদিকে সরে গেছে। বতুতার সময়ে (১৩৩৫ খ্রিষ্টাব্দে) মেঘনা নদীর সেই বিশালত্ব আর না থাকলেও আজো মেঘনা দেশের দীর্ঘতম নদী। কিন্তু মেজর রেনেল তাঁর তৈরি বাংলাদেশের নকশায় মেঘনাকে একটি রেখানদী হিসেবে অঙ্কিত করেছেন। সম্ভবত এই নকশা কুশিয়ারার উপরের দিকের বলে মনে হয়। মেঘনা নদীর দুই দিকেই প্রায় বিশটির অধিক শাখানদী রয়েছে। এগুলো বহন করে নিয়ে এসেছে প্রতিনিয়ত প্রচুর পানি। বর্তমানে দুই তীরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়টি উলেখযোগ্য নদীবন্দর যেমনঃ আজমেরীগঞ্জ, আশুগঞ্জ, ভৈরব, চাঁদপুর ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের আলোচ্য সময়ে অর্থাৎ ১২০৪ সালের পূর্বে একমাত্র সোনারগাঁও বন্দর ছাড়া মেঘনার তীরে আর কোনো বন্দরের উল্লেখ পাওয়া যায় না।

নদীর ‘মেঘনা’ নামটি খুব প্রাচীন নয়। এক সময় এ নদীর উপর একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল মগদের। ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দের পর কোনো এক সময় মগদের দেয়া নাম বলে মনে হয়। নীহাররঞ্জন রায় দ্বিতীয় শতকে টলেমী কর্তৃক উলিখিত গঙ্গার অন্যতম প্রবাহমুখের নাম ‘মগা’ হতে মেঘনা নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করতেন। কারণ ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে মির্জা নাথান তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘বাহারিস্তান-ই-গায়েবী’তে এই নদীর নাম পিঙ্কিয়া বা পাঙ্কিয়া বলে উলেখ করেছেন। এই নামটি সম্ভবত গারোদের দেয়া। নদীটির অস্তিত্ব বেশ পুরাতন বলেই অনুমান করা হয়।বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোর মধ্যে মেঘনা ছিল গভীরতম নদী এবং আজো তাই আছে। প্রাচীনকালে নদী হিসেবে এর অস্তিত্ব না থাকলেও সমুদ্রের খাড়ি হিসেবে গভীর জলাভূমির অস্তিত্ব থাকাই স্বাভাবিক।


নাফঃ
নাফ নদী বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে একটি খরস্রোতা নদী। এটি টেকনাফের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে পতিত হয়েছে। এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬ কি.মি. এবং মোহনায় প্রায় ৩ কি.মি. চওড়া। এই নদী ইতিহাসের অনেক ঘটনার নিরব দর্শক। ১৬৬২ খ্রিষ্টাব্দে এই নদীতে সম্রাট শাহজাহানের তৃতীয় পুত্র শাহ সুজাকে সপরিবারে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। মাতামুহুরী (২৮৭ কি.মি.) মাতামুহুরী ভারতের লুসাই পার্বত্য অঞ্চল হতে উৎপনড়ব হয়ে মিজোরামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বৃহত্তর চট্টগ্রামের মধ্যে প্রবেশ করে চট্টগ্রাম বন্দরের নিকট বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশে কাপ্তাই-এ এই নদীর উপর বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। দক্ষিণ দিক হতে আগত উপনদীগুলোর মধ্যে রয়েছে টেংগা, সুভলং, রানিকং, কাপ্তাই, ইছামতি এবং উত্তর দিক হতে মিলিত হয়েছে সাজাক,হরিণা, কাসারঙ, রেনজি ও হালদা। ধুরং ও সারতা হালদার উপনদী।

কর্ণফুলীঃ
কর্ণফুলী নদীর দৈর্ঘ্য ১৮০ কি.মি. এই নদী পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পাশ দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হচ্ছে।

ফেনীঃ
ফেনী নদী ত্রিপুরার পাহাড়ি অঞ্চল হতে উৎপনড়ব হয়ে ফেনী জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে, এ পর্যন্ত বাংলাদেশের নদ-নদী সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে কিছু পরিচিতি তুলে ধরা হলো। এবার পশ্চিম বাংলার প্রবহমান নদ-নদী সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হচ্ছে। পশ্চিম বাংলার অসংখ্য নদ-নদীর মধ্যে উলেখযোগ্য হলো- ইছামতি, কীর্তিপাশা, ময়ূরাক্ষী, চুর্ণী, রূপনারায়ণ, দ্বারকেশ্বর, সুবর্ণরেখা, কংসাবতী, মধুমতী, কৌশিকী, দামোদর, অজয়, মহানন্দা,লৌহিত্য (বহ্মপুত্র), ভাগীরথী, সরস্বতী, গঙ্গার উত্তর প্রবাহ ইত্যাদি।

গঙ্গা-ভাগীরথীঃ
গঙ্গা বাংলার শ্রেষ্ঠ নদী। রাজমহলের সোজা উত্তর-পশ্চিমে গঙ্গার তীর প্রায় ঘেঁষে তেলিগড় ও সিμিগলির সংকীর্ণ গিরিবর্ত্ম- বাঙলার প্রবেশপথ। এই পথের প্রবেশদ্বারেই লক্ষ্মণাবতী-গৌড়, পাণ্ডুয়া, টাণ্ডা, রাজমহল মধ্যযুগে বহুদিন একের পর এক বাংলার রাজধানী ছিল। সামরিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কারণে এসব স্থানে রাজধানী স্থাপন করার প্রয়োজন হয়েছিল। হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে এই গিরিবর্ত্ম দুটি ছেড়ে রাজমহলকে স্পর্শ করে গঙ্গা বাংলার সমতলভূমিতে এসে প্রবেশ করেছে। ফান ডেন ব্রোকের (১৬৬০) নকশায় দেখা যায়, রাজমহলের কিঞ্চিৎ দক্ষিণ হতে আরম্ভ করে,মুর্শিদাবাদ-কাশিমবাজারের মধ্যে গঙ্গার তিনটি দক্ষিণবাহিনী শাখা কাশিমবাজারের একটু উত্তর হতে একত্রে বাহিত হয়ে সোজা দক্ষিণবাহিনী হয়ে চলে গেছে সমুদ্রে, বর্তমান গঙ্গাসাগর-সংগমতীর্থে। রেনেলের নকশায় দেখা যায়, রাজমহলের দক্ষিণ-পুর্বে তিনটি বিভিনড়ব শাখা একটিমাত্র শাখায় রূপান্তরিত এবং তাই (সুতি হতে গঙ্গাসাগর) দক্ষিণবাহিনী গঙ্গা। যাই হোক, রেনেল কিন্তু এই দক্ষিণ বাহিনী নদীটিকে গঙ্গা বলছেন না; তিনি গঙ্গা বলছেন আর একটি প্রবাহকে, যে প্রবাহটি অধিকতর প্রশস্ত, যেটি পূর্ব-দক্ষিণবাহিনী হয়ে বর্তমান বাংলার হৃদয়দেশের উপর দিয়ে তাকে দ্বিধাবিভক্ত করে বহু শাখায় বিভক্ত হয়ে সমুদ্রে নেমে গেছে, আমরা যাকে বলি পদ্মা। ফান ডেন ব্রোক এবং রেনেল দু’জনের নকশাতেই দেখা যায় গঙ্গার সুবিপুল জলধারা বহন করছে পদ্মা; দক্ষিণবাহিনী নদীটি ক্ষীণতরা।

গঙ্গা
প্রাচীনকাল থেকে গঙ্গার দু’টি প্রবহমান ধারার একটি ভাগীরথী অন্যটি গঙ্গা। ফান ডেন ব্রোকের আড়াইশ’ বছর আগে কবি কৃত্তিবাসের কাল (১৪১৫-১৬ খ্রি.), কৃত্তিবাসের পিতৃভূমি ছিল বঙ্গে (পূর্ব-বাংলায়), তাঁর পূর্বপুরুষ নরসিংহ ওঝা বঙ্গ ছেড়ে গঙ্গাতীরে ফুলিয়া গ্রামে এসে বসতি স্থাপন করেন যার দক্ষিণে পশ্চিমে বয়ে গেছে গঙ্গা তরঙ্গিণী। নিঃসন্দেহে পূর্বোক্ত দক্ষিণবাহিনী নদী আমরা যাকে বলি ভাগীরথী (বর্তমান হুগলিনদী) তার কথাই বৃত্তিবাস বলছেন। এগারো পার হয়ে কৃত্তিবাস যখন বারো বছরে পা দিলে তখন ‘পাঠের নিমিত্ত গেলাম বড়ো গঙ্গাপার’ এবং সেখানে নানা বিদ্যা অর্জন করে তদানীন্তন গৌড়েশ্বর রাজা কংস বা গণেশের সভায় রামায়ণ রচনা করলেন। নিশ্চিত যে, এই বড় গঙ্গাই পদ্মা; স্পষ্টতই গঙ্গার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ববাহিনী দুই প্রবাহকেই কৃত্তিবাস যথাক্রমে ছোটগঙ্গা ও বড়গঙ্গা বলছেন এবং তদানীন্তন ভাগীরথী-পথের সুন্দর বিবরণ দিয়েছেন। পঞ্চদশ শতকের গোড়াতেই পদ্মা বৃহত্তরা নদী, তাই বড়গঙ্গা। কিন্তু যত প্রশস্ত, যত দুর্দম দুর্দান্তই হোক না কেন, ঐতিহ্যমহিমায় কিংবা লোকের শ্রদ্ধাভক্তিতে বড়গঙ্গা ছোটগঙ্গার সমকক্ষ হতে পারে নি। হিন্দুর স্মৃতি ঐতিহ্যে গঙ্গার জলই পাপমোচন করে, পদ্মার নয়। গঙ্গা স্নিগ্ধা, পাপহরা; পদ্মা কীর্তিনাশা। পদ্মা ভীষণা ভয়ংকরী উন্মত্তা। গঙ্গা-ভারীরথীই যে প্রাচীনতম এবং পুণ্যতোয়া নদী, এটিই যে হিন্দুর পরম তীর্থ জাহ্নবী, এ সম্বন্ধে প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্য এবং লিপিমালা একমত।৬৭ পদ্মাকে কখনও কখনও গঙ্গা বলা হয়েছে, কিন্তু ভাগীরথী-জাহ্নবী একবারও বলা হয়নি; ধোয়ীর পবনদূতে ত্রিবেণীসংগমের ভাগীরথীকেই বলা হয়েছে গঙ্গা; লক্ষ্মণসেনের গোবিন্দপুর পট্টোলীতে বর্ধমান ভূক্তির বেতড্ড চতুরকের (হাওড়া জেলার বেতড়) পূর্ববাহিনী নদীটির নাম জাহ্নবী; বল্লালসেনের নৈহাটি লিপিতে গঙ্গাভাগীরথীকেই বলা হয়েছে ‘সুরসরিৎ (স্বর্গনদী বা দেবনদী); রাজেন্দ্রচোলের তিরুমরয লিপিতে উত্তর-রাঢ় পূর্বসীমায় গঙ্গাতীরশায়ী, যে-গঙ্গার সুগন্ধ পুষ্পবাহী জল অসংখ্য তীর্থঘাটে ঢেউ দিয়ে দিয়ে প্রবাহিত হতো।

পঞ্চদশ শতকে ভাগীরথী সংকীর্ণ হতে আরম্ভ করলেও কিন্তু তখন তার প্রবাহ ইদানীংকালের মতো ক্ষীণ নয়। সাগরমুখ হতে আরম্ভ করে একেবারে চম্পা-ভাগলপুর পর্যন্ত সমানে বড় বড় বাণিজ্যতরীর চলাচল তখনও অব্যাহত ছিল। ফান ডেন ব্রোকের নকশায় এই পথের দুই ধারের নগরবন্দরের এবং পূর্ব ও পশ্চিমাগত শাখা-প্রশাখা নদীগুলির সুস্পষ্ট পরিচয় আছে। ফান ডেন ব্রোকের কিঞ্চিতধিক দেড়শত বৎসর আগে বিপ্রদাস পিপিলাই তাঁর মনসামঙ্গলে এই প্রবাহের বর্ণনা দিয়েছেন। “বিপ্রদাসের চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যতরী রাজঘাট, রামেশ্বর পার হয়ে সাগরমুখের দিকে অগ্রসর হচ্ছে; পথে পড়ছে অজয় নদী, উজানী, শিবানদী বর্তমান সপ্তগ্রাম, কুমারহাট, ডানে গুগলী, বামে ভাটপাড়া, পশ্চিমে বোরো, পূর্বে কাকিনাড়া, তারপর মূলাজোড়া, গাড়–লিয়া, পশ্চিমে পাইকপাড়া, ভদ্রেশ্বর, ডানে চাঁপদানি, বামে ইছাপুর, বাকিবাজার। চানক, মাহেশ, খড়দহ, শ্রীপাট, রিসিড়া (রিষড়া), সুকচর, কোনড়বগর, কোতরং, কামারহাটি। পশ্চিমে ঘুষুড়ি, তারপর চিত্রপুর (চিৎপুর), কলিকাতা প্রভৃতি।” মহাভারতের বনপর্বের তীর্থযাত্রা অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, যুধিষ্ঠির পঞ্চশতমুখী গঙ্গার সাগরসংগমে তীর্থসড়বান করেছিলেন। যা হোক, বিপ্রদাসের উপরিউক্ত বর্ণনার সঙ্গে ফান ডেন ব্রোকের নক্শার বর্ণনা অনেকক্ষেত্রেই অভিন্ন। বর্তমানে এই ভাগীরথী জঙ্গীপুর, লালবাগ, কাটোয়া, নবদ্বীপ ও কলিকাতা নগরীর পার্শ্ব দিয়ে ডায়মন্ড হারবারের নিকট সমুদ্রে পড়েছে।

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৩৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×