somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কমল থেকে জিয়াঃ একজন নেতার উত্থান

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কমলের জন্মঃ

১৯ জানুয়ারী ১৯৩৬ সালে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজিলার বাগবাড়ী গ্রামে মানসুর রহমান এবং জাহানারা খাতুনের ঘর আলো করে জন্ম নিলো পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান জিয়াউর রহমান, যিনি জিয়া নামেই বেশি পরিচিত। শহীদ জিয়ার ডাক নাম ছিলো কমল। ছোটবেলা থেকে নম্র এবং মৃদুভাষী কমলের কিছু অংশ কেটেছে বগুড়ায় এবং কিছু অংশ কেটেছে কলকাতায়।

মানসুর রহমান ছিলেন একজন কেমিস্ট এবং সরকারী চাকুরে, সেই সুত্রে কলকাতাতেই থাকতেন তিনি সপরিবারে, কিন্তু ১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জাপানিজ এয়ারফোর্সের আক্রমনে তিনি তার পরিবারকে পাঠিয়ে দেন বগুড়ায়। এরপর জার্মান বাহিনীর পরাজয়ের পর এবং জাপানিজদের আক্রমণ শেষ হবার পরেই তিনি তার পরিবারকে ডেকে পাঠান কলকাতায়। সেখানেই কলকাতার বিখ্যাত হেয়ার স্কুলে ভর্তি করে দেন জিয়াউর রহমানকে এবং ১৯৪৭ সালের দেশভাগের আগ পর্যন্ত সেখানেই পড়াশুনা করে কমল।

এখানে উল্লেখ্য যে এই হেয়ার স্কুলে পড়ার সময়েই ভারতবর্ষের দুইজন ক্যারিশ্ম্যাটিক নেতার প্রভাব পরিলক্ষিত হয় কমলের আচরনে। হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা কমল কে ভাবিয়ে তোলে এবং তিনি হয়ে পড়েন একজন অন্তর্ঘাতী চরিত্রের মানুষ।

দেশ বিভাগের পরে মানসুর রহমান পরিবার নিয়ে পাড়ি জমান তৎকালীন পাকিস্তানের রাজধানী পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে। সেখানেই জিয়াউর রহমান একাডেমী স্কুল থেকে সেকেন্ডারী কোর্স সম্পন্ন করেন ১৯৫২ সালে এবং ১৯৫৩ সালে তিনি করাচি ডি. জে. কলেজে ভর্তি হন এবং ঐ একই বছর কাকুল সামরিক একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন।


কমলের সেনাবাহিনীতে যোগদান এবং পরাশুনাঃ

কাকুল সামরিক একাডেমীতে যোগ দেয়ার পরেই তিনি বুঝতে পারেন পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৈষম্য। সেই সাথে কি কারনে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীরা পিছিয়ে পড়েছিলো। ১৯৫৫ সালে কাকুল মিলিটারী একাডেমী থেকে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন তিনি। এই সময় তিনি তার ক্লাসের সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করেন।

এরপরেই জিয়া এক সংক্ষিপ্ত সফরে পূর্ব পাকিস্তানে এসে বুঝতে পারেন মধ্যবিত্ত বাঙালীদের সেনাবাহিনীর প্রতি বিতৃষ্ণ অনুভূতি, যা এই মধ্যবিত্ত সমাজের তরুণদের মিলিটারীতে চাকুরীর ব্যপারে নিরুৎসাহিত করে রেখেছিলো। অথচ সমগ্র দেশের সম্পদ চলে যেত পশ্চিম পাকিস্তানে। আর এটা নিয়ন্ত্রণ করতো পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে উত্তর পশ্চিম পাকিস্তানী এবং পাঞ্জাবীদের প্রভাব ছিলো সব থেকে বেশি, সেনাবাহিনীতে তাদের প্রভাব কমানোর জন্যে জিয়া চেষ্টা করতেন বাঙ্গালী তরুণদের মিলিটারী জবের প্রতি আরো উৎসাহিত করতে। কিন্তু সংক্ষিপ্ত সফরে এই ধরনের কাজে সফলতা আসেনি।

করাচিতে আরো দুই বছর সার্ভিস দেয়ার পর তাঁকে বদলী করা হয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। তিনি তখন পশ্চিম জার্মানী এবং গ্রেট ব্রিটেন থেকে আলাদাভাবে সামরিক প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। এবং ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান মিলিটারী ইন্টিলিজেন্সে কাজ করেন।


কমলের বিয়েঃ

আগস্ট ১৯৬০ সালে দিনাজপুরের বিখ্যাত মজুমদার বাড়ীর সিকান্দার মজুমদার এবং তৈয়বা মজুমদারের সন্তান খালেদা মজুমদারকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। ২৪ বছরের তরুন জিয়া তার থেকে নয় বছরের ছোট ১৫ বছরের তরুণী খালেদাকে নিজের ব্যাক্তিত্ত্ব, সৌন্দর্য এবং আদ্র মানসিকতা দিয়ে আকর্ষণ করেন। সেখানেই অতি সাধারনভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তাদের বিয়েতে জিয়াউর রহমানের বাবা অংশগ্রহন করতে পারেন নি এবং জিয়াউর রহমানের মা তার আগেই মৃত্যুবরন করেন।

এরপর খালেদা মজুমদারের পড়াশুনা সম্পন্ন করার পর তিনি স্বপরিবারে ১৯৬৩ সালে চলে আসেন করাচিতে।একটি চমকপ্রদ তথ্য দিয়েই শেষ করছি। জিয়াউর রহমান একমাত্র সৈন্য যিনি দুইটি দেশের জীবিত সেনা অফিসারদের সর্বোচ্চ সামরিক পদক একই সাথে অর্জন করেন। একটি ১৯৬৫ সালে ইন্দো-পাক যুদ্ধে হিলাল ই জুরাত এবং অন্যটি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তম পদক।



ফেবু নোট হতে সংগ্রহীত ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৯:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×