ইংরেজিতে কথাটা হলো, ইগনোরেন্স ইজ ব্লিস- না জানাটাই শান্তি। করোনাকালে এর চেয়ে সত্যি কিছু নেই। ডিসেম্বরে যখন চায়নার খবর আসছে , তখন, একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে টের পেয়ে গেছি কি হতে চলেছে। আমি ডব্লিউ এইচ ও নই, আমি সিডিসি নই, মহামারীর প্রাতিষ্ঠানিক কোন হর্তাকর্তা নই যে বিশ্বকে সাবধান করার আগে প্রভুদের অনুমতি প্রয়োজন হবে। যদিও তখনও সার্স কোভিড ২ অচেনা , তবু আগের সার্স আর মার্স এর অভিজ্ঞতা থেকে বেশ দুই যুগ ধরেই আমার মত গবেষকরা সাবধান করে যাচ্ছিলেন - এইটা হবে কিনার প্রশ্ন নয়, কোন বছরে হবে, এইটা প্রশ্ন। আমি বলতে এবং লিখতে শুরু করলাম। পাগলের মত দিন রাত ২৪ ঘন্টা পড়ছি, লিখছি, বলছি । খাওয়া , ঘুম, বিশ্রাম বন্ধ। ৩ সপ্তাহ পর কি দেখলাম? একলা আমিই কষ্টে মৃতপ্রায়। যাদের রক্ষা করার জন্য ঘুম হারাম করে ফেলেছি, তাদের অনুভূতি হলো - কিছু হবে না। অথবা, আমাদের হবে না। এইগুলা চীনে টিনে হয়। ওরা তো পোকা টোকা খায়, বাদুর টাদুর ধরে স্যুপ করে। এরপর আমি বোধিপ্রাপ্ত হইলাম। এখন , সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় এই সব খারাপ কাজ করি না। হাসপাতালের মানুষ গুলো মরে গেলে অবাক হইনা। অসুস্থ , মৃতদের ফেলে গেলে কষ্ট পাই না। আক্রান্তরা লুকিয়ে পালিয়ে মরে গেলে, বেঁচে গেলে - চিন্তিত হইনা। ৯৫% মুসলমানের দেশে ৯৯% মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেখে অবাক হইনা। মহামারী নিয়ে ব্যবসা, প্রতারণা দেখে প্রতিবাদ করিনা। যে মানুষ নিজের প্রাণটাকেই মূল্য দেয় না, সে আর কি নিয়ে দ্বিধান্বিত হবে? বিবেক, নীতি, আদর্শ, পরের ক্ষতি না করা, আপনজনের সেবা- কোন কিছুই কি নিজের প্রাণের চেয়ে প্রিয় হয় আসলে? সেই প্রাণ্টাই তুচ্ছ হলে, বাকি সবই তুচ্ছ। অতএব, আর কিছু জানতেই চাই না। এই পৃথিবীতে যারা বোঝে, তারা হলো অভিশপ্ত মানুষ। অথবা অমানুষ। না জানাটাই - শান্তি!
----- ৮ই জুলাই ২০২০
একজন অভিশপ্ত অ-মানুষ
(সারাজীবন মানুষ পড়া, মানুষ লিখা আমি এখন ভিড় দেখলে আতংক লাগে। সামুর নির্জনতা ভালো লাগছে। ফিরতে ইচ্ছে করছে।)