somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন, বাঁচি

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনে আসলে কোন কিছু নিয়েই বেশি সিরিয়াস হতে নেই। কারন সিরিয়াস ব্যপারটা আমাদের জীবনে আপেক্ষিক।
যেমন:
*আমরা যখন এস এস সি পরীক্ষা দেই তখন এত সিরিয়াস থাকি যে মনে হয় -
" ইয়া আল্লাহ! জীবনে আর কিছুই চাই না। শুধু একটা জি পি এ 5 দাও। যা অন্যায় করসি সব মাফ কইর‍্যা দাও। এখন থেকে পাচ ওয়াক্ত পড়ুম।"
* এবার কলেজে উঠার পর এস এস সির এত হম্বিতম্বি সব শেষ।এইচ এস সি তে এসে মনে হয় " আরে ধুর্ররররর। এস এস সি আর এমন কি! এইডা তো পুলসিরাত। ইয়া আল্লাহ, যেম্নেই হোক জি পি এ 5 পাইতেই হবে। নাহলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নাই নাই।"
* এবার এডমিশনের সময়। এডমিশনের সময় মনে হয়- " কি পইড়্যা আইছি? শুধু গদ বাধা। এক্কেরে কিছুই ছিল না। আল্লাহ তুমি এই মহাসাগর থেকে উদ্ধার কর। যে কোন পাবলিক ভার্সিটি তে চান্স পাইতেই হবে। এছাড়া আমি আর জীবনে কিছুই চাই না। নাইলে এই জীবন রাখা বৃথা।"
* যে যার মত পাবলিক বা প্রাইভেটে টিকার পর এরপর হয়ে যায় দুই ক্যাটাগরির মানুষ।
-১ম ক্যাটাগরি:
জীবনের মোড়ে রঙিন স্বপ্ন দেখা শুরু। গার্লফ্রেন্ড / বয়ফ্রেন্ড চাই (এক বা একাধিক).....হোক তা প্রেম করার জন্য অথবা বিছানায় নেবার জন্য। তখন মনে হয় -
' তমুকেরে আমার GF/BF হিসেবে পাইতেই হবে। নাইলে এই জীবন যৌবন সব বৃথা। দুনিয়া একদিকে হেতি একদিকে। চাই চাই নাহলে বাচিবো না। '
-২য় ক্যাটাগরি:
পড়া ছাড়া কিছুই বুঝে না।
পড়াই জীবন
পড়াই মরন
পড়াই রেপুটেশন।
যদি একটুও reputation কম পড়ে যায় তাইলে ইজ্জৎ লইয়া টানাটানি। এসময় মনে হয়-
" যেভাবেই হোক মাস্টার্স, পি এইচ ডি করাই লাগবে। পারতেই হবে। নাহলে মইর‍্যা যামু।"
* এরপর আস্তে আস্তে সময় আসে চাকুরি জীবনে প্রবেশের। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলেমেয়ের উপর মা বাবার এতটাই এক্সপেকটেশন যে সেই এক্সপেকটেশন এর বলি দান হয়ে হন্য হয়ে ছুটি আমরা। ফ্যামিলির হাল ধরার কথা যখন খুচাইতে থাকে তখন মনে হয়- " যেভাবেই হোক একটা না একটা চাকরী করতেই হবে। নাহলে মান সম্মান সব যাবে। বন্ধু আত্মীয় এদের কাছে মুখ দেখাই কি করে। মরা ছাড়া গতি থাকবে না।'
*তারপরে আসে চাকরিতে পদোন্নতির চিন্তা। যেভাবেই হোক পদোন্নতি করতেই হবে। নাহলে রেপুটেশন শেষ হয়ে যাবে।মরা ছাড়া গতি নাই।
* এরপর সময় আসে বিয়ে থা করার। এইটার আবার দুই ক্যাটাগরি:
-প্রথম ক্যাটাগরি:
এদের মনে হয় একটা জুতের মতো বউ/ স্বামী না হইলে এই জীবনটা বৃথা। ছেলে হোক বা মেয়ে হোক কার কি ডিমান্ড আশা করি তা আর নতুন করে বলা লাগবে না। এর আগেও বলেছি সবাই জানেন। তখন মনে হয় কি আর হবে এই জীবন রেখে! তারপর শুরু হয় গরু খোঁজার মতো জীবন সঙ্গী খোজা।
-২য় ক্যাটাগরি:
যাদের রিলেশন তাদের আবার তাদের পার্টনার কে ঘষামাজা করে নিজের যোগ্য করে তুলার আপ্রাণ প্রয়াস। যেই মানুষটারে ভালোবেসেছিল (?) তারে এই কয় বছরে ঘইষা, মেজে, পুরাই বদলায়ে তারপরে বিবাহ (অধিকাংশ ক্ষেত্রে)।

* জীবন সঙ্গী কেউ না কেউ তো হইল। কয়েক বছরের ভিতরে বাচ্চাকাচ্চাও হইল। এরপর সেগুলার উপর স্টীম রোলার চালানোর প্রস্তুতি নেই আমরা। কারন বাচ্চা রেজাল্ট ভালো না করলে রেপুটেশন থাকবে না। তখন মরে যাইয়াও শ্রেয় মনে হয়। পারলে বাচ্চারেও মাইরা ফেললে ভালো.....
----------
তাহলে কি বুঝা যায়! যেই কথা গুলা লিখা হয়েছে সেগুলা অধিকাংশ মানুষের একটা জীবন Summary.. এছাড়াও অনেক ঘটনাই এরমাঝে ঘটে। কিন্তু এই জীবনে এক আপেক্ষিক বিষয় "সিরিয়াসনেস" নিয়া আমরা কতবার মরি! কখনো কি একবারো সিরিয়াস ভাবে নিজের মতো করে বাচার চেষ্টা করি? কখন আমাদের আফসোস হবে তা জানেন! যখন বৃদ্ধ বয়স আসবে। সেই বৃদ্ধ কালে কোন এক সময় আনমনে নিজেরই মনে হবে "নিজেকেই আর জানা হইল না ঠিকমতো। নিজের মতো করে বাচা হলো না। একটা ভালো মানুষ হওয়া গেল না।" এই আফসোস নিয়েই দুনিয়ার বুক থেকে বিদায় নিতে হয়। খুব কম মানুষই পারে এই সিস্টেমের বেড়াজাল থেকে বের হয়ে আসে।
অনেকেই আমার এই বিশ্লেষণ এ আমার সাথে একমত না হতেই পারেন। সেটা যার যার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ। তবে
"নিজের মতো করে বাচা!"
"নিজের জন্য বাচা"
নিজেকে জানার মধ্যে কতবড় মুক্তি, কত আনন্দ তার কোন সীমা নেই। অধিকাংশই তা জানে না। মরতে মরতে একসময় মরার সময় ঘনিয়ে আসে। আমি নিজেও জানি না সেই আনন্দ আসলে কতটা বিশালতায় নিয়ে যায়। তবে আচ করতে পারি মাঝে মাঝে। কিন্তু এটাও জানি হয়তো সিস্টেম আমাকেও ছাড়বে না। তারপরেও একটা কথা থাকে যে "ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।"
ভাবতে থাকুন-
ভাবতে শিখুন-
ভাবুন
নিজেকে জানুন-
পারলে বাঁচুন......।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:৪৪
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×