somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মা ও দেশ : দুটি তুলনাহীন মূল্যবান সম্পদ

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুইটা জিনিস আমাকে খুবই ইমোশনাল করে দেয়। আবেগে আপ্লুত হই। সেই দুইটা জিনিস হচ্ছে মা আর মাটি। মা এবং দেশ এই দুইটা জিনিস সবার ভাগ্যে সয় না। যাদের ভাগ্যে এই দুইটা জিনিস আছে তারা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যবান।

১.
আজ যখন অফিসে বসে একটা গান শুনছিলাম। তখন মাকে খুব মনে পরছিলো। সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে আমার মা কেমন আছেন তার খবর হয়তো মুহুর্তেই নিতে পারি বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই সুসময়ে। কিন্তু চাইলেই আমি মায়ের মুখটা দেখতে পারিনা, মাকে ছুঁতে পারিনা, মায়ের আঁচলে মাথা রাখতে পারিনা। বিষয়টা ভাবতেই চোখটা টলমল হয়ে গেলো। পাশের এক কলিগ জিজ্ঞেস করলো, হেই, আর ইউ ওকে? আমি খুব উদাস দৃষ্টি নিয়ে বললাম, আই আ্যাম অলরাইট। কিন্তু আমি জানি আসলে আমি অলরাইট নয়।

তার কিছুক্ষন পরে আমি ওকে জিজ্ঞেস করমাল, তোমার মা কি বেঁচে আছেন? তখন সে একটু উদাস হয়ে গেলো। আমার মনে হলো কোথাও একটা খোঁচা লেগেছে ওর। সেটা কাটিয়ে উঠে বললো, ওর বয়স যখন তিন তখন ওর মা মারা যান। আমি আর কথা বাড়ালাম না।

শুধু চিন্তা করলাম আমি কত সৌভাগ্যবান। আমি দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলাম যদি কেউ দেখে ফেলে যে আমি কাঁদছি।

২.
আরো একবারের ঘটনা। তখন আমি সদ্য বিদেশে এসেছি। কাজের কারনে একজন তার পাসপোর্ট সহ বিভিন্ন ডকুমেন্টস দিলো। ইউকেতে রেসিডেন্স পারমিট কার্ড বলে একটা কার্ড দেয়া হয়। সেই কার্ডের মধ্যে তার স্ট্যাটাসের জায়গায় লেখা "রিফিউজি"। আমি খুবই অবাক হলাম কারন আমাদের সিলেটে একটা সাধারন গালি ছিলো রিফুজি বা রিফিউজি। যাদের ঘর বাড়ি নাই এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে সিলেটে বাস করে তাদেরকে ছোট করার জন্য বলা হতো "রিফুজি"। তারপর ওকে আমি জিজ্ঞেস করলাম। তোমার দেশ কোথায়? সে জানালো তার দেশ নাই। বুঝলাম কোথাও কোন সমস্যা আছে। তখন জিজ্ঞেস করলাম তোমার দেশ নাই কেনো? সে বললো, আমরা তোমাদের মতো ভাগ্যবান নই বলে। আমি যেখানে জন্ম গ্রহন করেছি, আমার বাপ-দাদারা যেখানে জন্ম গ্রহন করেছেন আমাদেরকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করে দেয়া হয়েছে। আমরা খুবই দুর্ভাগ্যবান। কারন আমার জন্ম প্যালেস্টাইনে।

আমার তখনো মনে হয়েছিলো আমি কত ভাগ্যবান। আমি সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম নিজের একটা দেশ থাকা কত প্রয়োজন। একটা দেশের জন্য, একটু মটির জন্য, এক টুকরা সবুজ জমিনের জন্য মানুষের কত কান্না, কত যুদ্ধ, কত মৃত্যু। যাদের কারনে আজ আমরা দেশ পেয়েছি, যাদের জন্য আমরা পরিচয় দিতে পারি "বাংলাদেশী" সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আমাদের কত কৃতজ্ঞ থাকা উচিত তা হয়তো বিশেষ বিশেষ সময়ে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে বোধগম্য হয়।


--উপপাদ্য
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×