#আত্মউপলব্ধিঃ
ভারত-পাকিস্তানকে আমরা সবসময় গালাগাল করে উদ্ধার করি।
কিন্তু এটা তো জানেন সবাই, তাদের কোন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়ম নেই।
কিন্তু তাদের নির্বাচনে সেভাবে কখনো কারচুপি হয়েছে বলে শুনিনি।
এর একটাই কারণ, পারষ্পরিক রাজনৈতিক শ্রদ্ধাবোধ - যেটা ভারতের কংগ্রেস-বিজেপির মধ্যে আছে, পাকিস্তানের মুসলিম লীগ-পিপিপির মধ্যে আছে...সেটা আমাদের আ'লীগ-বিএনপির মধ্যে নাই।
মহাত্মা গান্ধী ভারতের অবিসংবাদিত নেতা। তিনি কংগ্রেসের নেতা ছিলেন, তাই বলে বিজেপি তাকে অসম্মান করেছে ? কিংবা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তানের জাতীয় নেতা এবং মুসলিম লীগের নেতা, কই কোনদিন শুনিনি বেনজির ভুট্টোর দল তাকে নিয়ে বাজে কথা বলেছে ... বরং এই দুই নেতার জন্মদিনে দলগুলো প্রতিযোগিতায় নামে কিভাবে তাদের আরো সম্মানিত করা যায়।
আমাদের দেশের রাজনীতি হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি। এদেশে বঙ্গবন্ধুর মত জনমানুষের নেতা কিংবা দেশের ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমানের মত হাল ধরা নেতা ছিলেন, এটা যেমন আমাদের সৌভাগ্য আবার দূর্ভাগ্যও। সৌভাগ্য একারণে যে তারা আমাদের দেশটাকে মুক্তিযুদ্ধের ভঙ্গুরদশা থেকে বের করে এনেছিলেন, দূর্ভাগ্য একারণে তারা বাঙালির নেতা, যে জাতি কিনা তাদের নাম বিক্রি করে খেতে ব্যস্ত, তাদের নাম ব্যবহার করে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাদের অবদানের চেয়ে কে কোন দল করতেন/বানিয়েছেন তা নিয়েই হানাহানিতে ব্যস্ত।
পরষ্পরকে শেষ ও নিশ্চিহ্ণ করে দেয়ার জন্য যে আজব রাজনীতি চলছে দেশে তার ফলাফল নিয়ে কিছুই বলার নেই, সময় হলেই সব দেখা যাবে। তবে এটা সাধারণের জন্য খুবই খারাপ হচ্ছে। এদেশে নামেমাত্র মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে - বাস্তবে ভিন্নমত দেখালেই "রাজাকার/জামাতি" তকমা লাগিয়ে গায়ে হাত তোলা রীতিমতো ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় কেউ। মেধার চেয়ে বাহুবল ও রাজনৈতিক পরিচয় আজ মূখ্য। রাজনীতিতে নতুন মুখ যারা আসছে তারা বেশিরভাগই ক্যাডার, গুন্ডা ও বখে যাওয়া ছেলেপিলে। এরা যদি রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হয় এদেশের...তবে এদেশে তালেবানও হবে না, সোমালিয়ার চেয়েও নিচে নেমে যাবে।
একটা সময় গিয়েছে, যখন ভাবতাম - ভালো অবস্থানে যাব - রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করব - দেশের হয়ে কিছু করে দেখাব। এখন সত্যি বলতে সেই ইচ্ছে মরে গেছে। দেশের জন্য কি করব ? বিভিন্ন দলের "সোনাবাহিনী"রা আমাদের করতে সুযোগ দিচ্ছে কই ?
পরিশেষে একটা কথাই বলার, দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী - আপনারা দয়া করে একসাথে কথা বলুন। পাড়ার বাড়ির গিন্নিদের মতো ঝগড়া করে মুখ দেখাদেখি বন্ধ করে বসে থাকবেন না। সাধারণ মানুষের রক্তে কেউই নিজেদের হাত কম রাঙাননি। আপনারা যদি দেশকে ভালোবেসে একসাথে উদ্যোগ নেন...দেশবাসী কিছুই মনে রাখবে না। দেশটাকে ভালোবাসুন, সবাই তাকিয়ে আছে আপনাদের দিকে।
ইতি--
দেশের এক অতি সাধারণ নাগরিক