somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীদের সাথে সাথে রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবসা বন্ধ হলে অসুবিধা কী?

০৯ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি নিজে চেষ্টা করি যতটা সম্ভব কথা না প‌্যাচাতে। আমার মনে হয় তথ্যবৈচিত্র্য বাড়তে শুরু করায় বরং সরাসরি কথা বলার প্রয়োজন বেড়েছে। যারা মনে করেন সরাসরি কথা বলার অর্থ সরলীকরণ তারা অসৎ। রাজনৈতিক ইতিহাসের যতটুকু অভিজ্ঞতা এবং তা থেকে বস্তুবাদী অ্যাজাম্পশান যতটুকু করা হয়েছে এবং বর্তমান উপাত্ত থেকে যতটা করা যায়, তাতে করে ধর্মীয় রাজনীতি/ধর্মের রাজনৈতিক ব্যাবহার বা রাজনৈতিক ধর্মের যে কোন ধরণের দাবী বা প্রয়াসকে কোনরকম ভনিতা ছাড়া সরাসরি ভন্ডামী বলে চিহ্নিত করা যায়। এক্ষেত্রে পপুলার উদাহরন হচ্ছে আরব বিশ্বের রাজনীতি। সেখানে রাজনৈতিক-সামজিক ইতিহাস জাতীয়তাবাদী উত্থানের স্পিরিট হিসাবে ধর্মকে টেনে এনেছে। কিন্তু সেখানকার সামাজিক রাজনৈতিক ইতিহাসের অভিজ্ঞতাকে যদি কেউ যে কোন মুসলীম সংখ্যাগরিষ্ট অঞ্চলের রাজনীতি ব্যাখ্যার মেথড হিসেবে ব্যবহার করতে চান সেটা হবে সরলীকরণ। শুধু সরলীকরণ না সেটা হবে একই সঙ্গে আরব বিশ্ব এবং তার সাথে তুলনায় নিয়ে আসা অন্য কোন সমাজের বা দেশের ইতিহাস ও সমাজতত্ত্ব নিয়ে মিথ্যাচার।

ইতিহাসে "রাজনৈতিক ইসলাম" নামে কোন কিছুকে আমরা কখনো কোনদিন কোন গণআন্দোলন সংগঠিত করতে দেখিনি। বিশেষত উপনিবেশ বিরোধী সংগ্রামে আমাদের জানা ইতিহাসে আমরা খুব স্পষ্ট করে যাদেরকে দেখেছি তাঁরা হয় বিভিন্ন মাপের জাতীয়তাবাদী অথবা সমাজতন্ত্রী। পিএলও,হামাস, হিজবুল্লাহ এরা সবাই আরব জাতীয়তাবাদী। রাজনৈতিক ইসলাম বলে সাইয়েদ কুতুব-মওদুদী সাহেবরা সিআইএ'র টাকায় গত সত্তর-আশি বছরে যে "প্রপঞ্চ" তৈরী করেছেন তাকে দুর্ভাগ্যবশত: কোনদিনই গণবিরোধী অবস্থানের বাইরে অন্যকোনকিছু করতে দেখা যায় নি। হিন্দু মৌলবাদ এবং ইহুদী-খ্রীষ্টিয় মৌলবাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

আজকে যারা লন্ডনের পাতাল রেলে, ছায়ানটের অনুষ্ঠানে, উদিচীর অনুষ্ঠানে, মুম্বাইতে বোমা মারছেন খুনোখুনি করছেন তারা যে কোন বিচারেই ঐ সমস্ত ঘটনার বেনিফিসিয়ারীদের পক্ষে সার্ভিস দিয়ে চলেছেন। তাঁদেরকে প্রকৃত সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অবস্থানে, যেমন ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জিকে ঠেকানো, গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির আন্দোলন এইসবে দেখা যাচ্ছে না।

এই পয়েন্টে কতিপয় ধান্দাবাজ নৃবিজ্ঞানী এবং পরিভাষাবাগীশ কিছু অসৎ সমাজগবেষক (!) যতই আগডুম বাগডুম করুক না কেন, খুব পরিস্কার খোলাখুলি অবস্থানের বাইরের কষ্টকল্পিত আগডুম বাগডুমকে প্রমাণ জ্ঞান করতে আমার বাধে। বর্তমান বাংলাদেশের একটা কৃষক আন্দোলন যেখানে কৃষকরা সারের দাবীতে বীজের দাবীতে আন্দোলন করে চলেছে সেখানে কৃষকদের পক্ষে ধর্মীয় মৌলবাদের কোনরকম প্রত্যক্ষ উপস্থিতি এইসব অসৎ বুলিবাগীশরা দেখাতে পারবেন না। আর শ্রমিক আন্দোলনকে তো মৌলবাদীরা রীতিমতো ভয় পায়। কোথাও শ্রমিকরা ক্ষেপে উঠলেই হুজুররা লানৎ বর্ষন করতে শুরু করেন। আমার নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় অন্তত গত দেড় দশকে আমি কোন শ্রমিক আন্দোলনে হুজুরদের দেখতে পাইনি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পেয়েছি। পাইনি। দুটোকে সমান্তরাল বা এক সমতলে আনা তো যায়ই না বরং তাদের অবস্থান বিপরীতমুখী।

কি খবরের কাগজে কি বাংলাব্লগে কোথাও কেউ এই বিষয়ে সরাসরি কিছু বলে না। যারাই টুপিদাড়িতে বিপ্লব দেখতে পাচ্ছেন বা পেতে পারেন জাতীয় বটম লাইনের কাছাকাছি আসেন বা আসতে চান, তারা সকলেই সহজ কথাকে হাস্যকরভাবে প্যাঁচাতে থাকেন। তাঁদের প্রধান অ্যাডমায়ারার হিসেবে আমরা চিহ্নিত রাজাকার আর ধর্মব্যবসায়ীদের দেখতে পাই।

গত ২৯ তারিখের নির্বাচনের পর থেকে এঁদের মধ্যে এক ধরণের মায়াকান্না দেখা যাচ্ছে, যে রাজাকার নির্মুল করতে গিয়ে যেন "ইসলাম" নির্মুল না হয়। অত্যন্ত আপত্তিকর কথা। বিশেষ করে মুসলমানদের জন্য। ধর্ম ব্যবসার বিলুপ্তির সাথে ধর্মকে জড়ানোর অর্থ সেই ধর্ম এবং তার অনুসারীদের অপমান করা।

আমি সাদাকালো বুঝি। ধুসরকে আলাদা করে বুঝি না। ধুসর বলতে হয় আরো একটা স্বতন্ত্র রং অথবা সাদা থেকে কালোর একটা ভ্যারিয়েশনকে বুঝি। আমি মনে করি সংগঠিত খুনি চক্র জামায়াতে ইসলামীর সাথে যদি উদিচি-ছায়ানট-সিপিবি থেকে একেবারে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জেলায় জেলায় বোমা হামলা কারীরা একসাথে অন্তর্হিত হয় তবে সেটা মানুষের জন্য সৌভাগ্যই বয়ে আনবে। অন্যকথায় এদেশে যদি সত্যি সত্যি মানুষের জন্য মঙ্গলজনক কিছু করতে হয় তাহলে এক নম্বর কর্তব্যই হবে এই ধর্মব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলগুলিকে শিকড়সুদ্ধ উপড়ে ফেলা।
১৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×