কি ছেড়ে কি লিখবো? প্রতিদিন যত ঘটনা ঘটে প্রতিটাই আলোচনার দাবী রাখে, অথচ আলোচনা করা উচিত না, সব বিষয়ে মতামত রাখাও পাগলের লক্ষণ! মেয়েদের দিকে তাকিয়ে হাসা বা হয়ত কিছু বলার জন্যও প্রাণ যাচ্ছে, রাতে পুঁটিমাছ আনার জন্যও প্রাণ দিতে হচ্ছে। তবে গতকাল ওয়ারীতে এক এপার্ট্মেন্টে স্বামী স্ত্রী দুইজনের লাশ ও পাশে পাওয়া চিরকুট থেকেও এখন এই সমাজ বুঝা যাচ্ছে!
খবরটা পড়ে দেখলাম, ঘটনা এই রকম। ছেলেটার বয়স ৩২, মেয়েটার বয়স ২৮। ২০১০ সালে মুঈদ ও রত্না প্রেম করে বিয়ে করে, দুইজনেই শিক্ষিত। দুই পরিবার মেনে নেয়নি। সেই থেকে সম্পর্ক ছিন্ন। যোগাযোগ বন্ধ। মুঈদ চাকুরী করত হয়ত কিন্তু ক্যানসারে অসুস্থ্যতায় সে আর উপার্জন করতে পারছিল না, এদিকে অভাবে পেয়ে বসে, বাসা ভাড়া সহ খাবারের টাকাও যোগাড় হচ্ছিলো না, এক সময়ে ধারনা করা হচ্ছে মুঈদ মারা যায়, স্ত্রী রত্না সেই লাশ নিয়ে ঘরেই হয়ত ২/৩ দিন ছিলো, পরে শেষটা ভেবে, সে হয়ত হার্ট এটাক কিংবা আত্মহত্যা করে নিয়েছে।
আমি মুঈদের ভাই বোনদের স্ট্যাটাস দেখলাম, মেরিকা থাকা সহ ভাইয়েরা বেশ ধনী শিক্ষিত, তারা তাদের এক ভাইকে প্রতিমাসে ৩০/৪০ হাজার টাকা দিতেই পারত বা বাবার সম্পত্তিতো ভাগে পেতই, যা হয়ত তাদের হাতের ময়লা। কিন্তু কেহই তাদের এই ভাইটাকে মনে রাখে নাই বা প্রয়োজন মনে করেও নাই। একটা ভাই যে এই শহরে আছে তাও কেহ খুঁজে বের করে নাই। মুঈদের বাবা মা বেঁচে নাই নিশ্চয়, অন্তত মা থাকলেও খুঁজে বের করতেন বা মুঈদও মায়ের কাছে যেত। অন্যদিকে অবাক হবার ব্যাপার স্ত্রী রত্নার পরিবারের কেহও তাদের এই মেয়ের খবর রাখে নাই, সেও তার স্বামীর মত তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিলো।
বিষয়টা শুধু চিন্তা করেন, প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে এবং সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন। এখানে নিজকে দাঁড়া করে চিন্তা করে দেখুন, আমরা কি সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই শহরে হাজারো লক্ষ এপার্ট্মেন্টের এই হচ্ছে শেষ কথা, প্রায় সবাই নিজেরা নিজেরা, স্বামী স্ত্রী আর ১/২ সন্তান, বলা চলে প্রায় সবাই বিচ্ছিন্ন, কেহ কারো খবর রাখছে না!
(কারে কি বলবো? আমি নিজেও এই পথে, সত্য স্বীকারে দোষ দেখি না, ভাই বোনকে একটা ফোন করবো, তাও যেন হাতে উঠে না, দূরে বসে কান্দি কিন্তু কাছে যাই না! কি যে এক পাষান্ড হয়ে উঠছি দিনের পর দিন, নিরবেই এমনি হয়ত সংবাদ হয়ে একদিন দুনিয়া ছেড়ে চলে যাব!)