আসুন একটু পড়াশুনা করি। সমাজে দূর্নীতিবাজেরা কিভাবে টিকে থাকে? সকাল থেকে এই নিয়ে চিন্তা করছিলাম। পরে ডিপসিক থেকে একদম পরিস্কার উত্তর পেলাম। দূর্নীতিবাজরা বিভিন্ন কৌশল ও পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে টিকে থাকে এবং তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। নিচে দূর্নীতিবাজদের টিকে থাকার প্রধান কৌশলগুলি আলোচনা করা হলো:
১. **ক্ষমতা ও প্রভাবের ব্যবহার**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই উচ্চ পর্যায়ের ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রমকে রক্ষা করে। তারা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক বা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
২. **আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার**
দূর্নীতিবাজরা আইনের দুর্বলতা ও ফাঁকফোকর ব্যবহার করে তাদের অপকর্মকে বৈধতা দেয়। তারা আইনি প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করে এবং আদালতের মাধ্যমে মামলাগুলোকে জটিল করে তোলে, যাতে শেষ পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে।
৩. **সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই সমাজের উচ্চ স্তরের ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং তাদের অর্থনৈতিক শক্তিকে ব্যবহার করে সমাজে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করে। তারা বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করে।
৪. **গোষ্ঠীগত সমর্থন**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই একটি গোষ্ঠীগত সমর্থন ব্যবস্থা গড়ে তোলে, যেখানে তারা একে অপরের অপকর্মকে সমর্থন করে এবং রক্ষা করে। এই গোষ্ঠীগুলি তাদের সদস্যদের মধ্যে আনুগত্য ও বিশ্বাস বজায় রাখে এবং বাইরের সমালোচনা থেকে নিজেদের রক্ষা করে।
৫. **প্রযুক্তি ও তথ্য ব্যবস্থাপনা**
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দূর্নীতিবাজরা তাদের কার্যক্রমকে আরও গোপনীয় ও জটিল করে তোলে। তারা ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থ পাচার করে এবং তথ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের অপকর্মকে আড়াল করে।
৬. **সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। তারা সংকটকালীন পরিস্থিতিতে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করে এবং সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বকে কাজে লাগায়।
৭. **মনস্তাত্ত্বিক কৌশল**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই তাদের অপকর্মকে বৈধতা দেওয়ার জন্য মনস্তাত্ত্বিক কৌশল ব্যবহার করে। তারা নিজেদেরকে সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করে এবং তাদের কার্যক্রমকে সমাজের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় বলে প্রচার করে।
৮. **আন্তর্জাতিক সংযোগ**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই আন্তর্জাতিক সংযোগ ব্যবহার করে তাদের অপকর্মকে বৈধতা দেয়। তারা বিদেশী সংস্থা ও ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং তাদের কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যায়।
৯. **সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা ও দুর্নীতিকে কাজে লাগায়। তারা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও অনিয়মকে ব্যবহার করে তাদের কার্যক্রমকে রক্ষা করে।
১০. **সামাজিক সচেতনতার অভাব**
দূর্নীতিবাজরা প্রায়ই সমাজের সচেতনতার অভাবকে কাজে লাগায়। তারা সাধারণ মানুষের অসচেতনতা ও নিষ্ক্রিয়তাকে ব্যবহার করে তাদের অপকর্মকে চালিয়ে যায়।
দূর্নীতিবাজদের টিকে থাকার এই কৌশলগুলি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের কার্যক্রম প্রতিরোধ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
(পুরাই থিসিস, আগুন!)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০