ছাত্রছাত্রী ও জনতার আন্দোলনে প্রায় প্রতিদিন বাসা থেকে বের হয়েছি, কখনো অহেতুক রাস্তায় হেটেছি, কখনো অফিসে গিয়ে বসেছি, আবার বাসায় থাকলে ছাদ থেকে কাছে দূরে দেখেছি। মালিবাগ থেকে বাড্ডা, শাহবাগ হেঁটে রিক্সার ঘুরেছি। ৩ তারিখে বাড্ডা যেতে অনেক কষ্ট পেয়েছি, রামপুরা গেলে আর যেতে দিচ্ছিলো না, পরে হেঁটে রামপুরার নানান বস্তি এলাকা পার হয়ে (রামপুরাতে এখন এত খালি জায়গা আছে এটা আমার জানা ছিলো না), হাতিরঝিল পার হয়ে বন্ধু কবিরের বাসায় যাই, সেখানে নিজে ভাত তরকারী রান্না করে দুই বন্ধু খেয়েছি, এই দিনে ফেরত বাসায় আসা খুব ভয়াবহ ছিলো, এক সাহসী রিক্সাচালক ভাইকে পেয়ে সাহস পাই এবং ফিরে আসি।
এখানে আমি একটা কথা লিখতে ভুলে যাচ্ছি তা হচ্ছে এই দিনে এত ভেজাল করে বন্ধু কবিরের কাছে যাবার উদ্দেশ্য শুধু মানুষ দেখা ছিলো না, মুলত আমার কাছে কোন টাকা ছিলো না, বিকাশ বা ব্যাংক একাউন্ট থেকেও কোনভাবেই টাকা উঠাতে পারছিলাম না, পকেট একদম ফাঁকা, এদিকে বাসার জন্য কিছু বাজার জরুরী ছিল, ফলে বন্ধু কবিরের কাছ থেকে সেই দিন ২ হাজার টাকা নন ফেরত যোগ্য লোন (!) নিয়েছিলাম, ফোনে জানিয়েছিল 'বাসায় টাকা আছে, লাগলে নিস'! হা হা হা...... এই টাকা ফেরত না দিলেও চলবে, বন্ধু কবিরের দূর্দিন যেন আর না আসে! দূর্দিন এলে দিবো!
যাই হোক, পরের দিন ৪ আগষ্ট আবারো রামপুরা হয়ে সোজা পথে ব্র্যাক ইউনিভারসিটির পাশে এক বন্ধু বাবুল ভাইয়ের কাছে যাই, এবারের মুখ্য উদ্দেশ্য মানুষ দেখা! এই দিন পথ দখল ছিলো ছাত্রছাত্রীদের, আগের কয়েকদিনের ম্যাচাকারের পরে ছাত্রজনতা পুরাপথ দখলে নেয়, সেখানে তিন বন্ধু বসে (ইউনিভারসিটির পাশের বিল্ডিং এর নীচে ফুটপাতে) মানুষ দেখি। পরে বন্ধু কবিরকে নিয়ে রিক্সা নিয়ে শান্তিনগর, বেইলী রোড এলাকাতে আসি, দেখতে থাকি, অরো কয়েকজন বন্ধু আসে তাদের সাথে আড্ডা দেই।
এই ৪ আগষ্ট ছাত্রী সহ মায়েরদের অংশগ্রহন চোখে পড়ার মত ছিলো, ছাত্রছাত্রীদের সাথে আপামর মানুষের রাস্তায় অবস্থান দেখে রিক্সায় বসে বন্ধু কবিরকে বলেছিলাম, আপা শেখ হাসিনার এখানেই শেষ, আর কিছুতেই টিকতে পারবে না, পারবে না! এর পরের দিন ৫ আগষ্ট, আপা পালাইলেন, সবাই সেটা জানেন!
রাস্তায় ভিডিও করা দুরহ ছিলো, নেট লাইনতো বন্ধ ছিলো। পরে ৪ আগষ্টের কিছু ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দেই। আহ, একটু আগে আবারো সেই অগ্নিমুখ গুলো দেখলাম।
সবাই ভাল থাকবেন, সুন্দর আনন্দে আপনাদের জীবন কাটুক।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:১৬