-একা দাড়িয়ে আছি
বৃষ্টির ঝাঁঝ কাটেনি এখনো শহর থেকে, ভিজে বাতাস। শহুরে মাঝরাত এখন, আমি আর গলির মোড়ের ডাস্টবিনে দু চারটা কুকুর জেগে আছি।গ্রামের রাত শান্ত,অন্ধকার,খানিক বিরতিতে ভেসে আসা রাতজাগা পাখিদের ডাক ,আর শহরে ; সোডিয়ামের নকল আলোয় চাঁদের আলোও মুখ লুকায়, রাস্তাগুলো জনশুন্য।
বাসা থেকে বের হবার সময় সালমান খান কে দেখলাম স্কাই ডাইভিং করে ডিউ ছিনিয়ে নিতে,আর তারপরই ডায়ালগ " আজ কুচ তুফানি কারতে হে"। আমার তুফানিটা হবে এরকম , রাস্তার পাশে দাড়িয়ে হাত উচু করে ট্যাক্সি থামাবো ,তারপর যেখানে দাড়িয়ে আছি, ঐ জায়গায়ই যেতে চাইবো ।
মন্দ হয়নি অভিজ্ঞতা, কেউ গালি দিলো, কেউ পাগল, আর এক সুন্দরী মেয়ে বল্লো মাতাল,, , সুন্দরীর ট্যাক্সিতে উঠতে না পারার আফসোসে সালমান খানকে দুটো গালি দিলাম, সাথে সিগারেট জ্বালিয়ে দু মিনিটের আয়ু কমিয়ে দিলাম। যাই হোক'আফসোস খারাপ ব্যাপার ।
আচ্ছা, রেনু ; মনে আছে তুমি যখনি রিক্সা ঠিক করতে যেতে,আমি রিক্সাওয়ালাকে তাড়িয়ে দিতাম,আরেক্টু পথ একসাথে হাটবো;তাই। আবার " ওইদিকের রাস্তা ব্লক , পানি উঠছে ;এদিক দিয়ে চল'বলে দুরের পথ দিয়ে নিয়ে যেতাম? ---মনে নেই হয়তো ।
তুমি আমাকে আলজেইমির রোগের উইশ না করে সিজোফ্রেনিক টাইপের কিছু হওয়ার জন্য বললেও পারতে,হ্যালুসিনেশানে হয়তো তোমাকে খুজতাম । অনেকদিন দেখিনি , শেষবার যখন কথা হয়েছিলো, ফোন কেটে যাবার পরেও বুঝতে পারিনি, অনেকক্ষণ ধরে রেখেছিলাম । অদ্ভুত না! চুপ করে থেকেও কথা বলে যাওয়া।মুঠোফোনে বন্দী ভালোবাসা ; অথচ কত কথা বলার ছিল,রাতের সাথে শব্দের তালে কথার সৃষ্টি হত ।
আচ্ছা রেনু, খুব বেশী ভালোবাসা কি বোকামি ? যদি হয় তবে তুমি আমাকে কখনো বোকা ডাকোনি কেন ?
ভাবতে ভাবতে কখন বাসায় ফিরেছি ঠিক নেই। এখন রাত পৌনে তিনটা । ক্ষুধা মানুষের সবচেয়ে বড় জৈবিক চাহিদা । কিছু খেতে হবে, আমি চুলার পাশে দাড়িয়ে আছি । তোমার লেখা সবচে বড় চিঠিটা পুড়িয়ে চুলা জ্বালাবো, তারপর চুলোয় আলু পুড়িয়ে খাবো । আলু পোড়ার গন্ধ পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় ।।