বিশ্বকাপ শুরু হবার বেশ আগে থেকে আমি যে ম্যাচ টা দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম সেটা হলো গতকালের অার্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ। সামু, ফেসবুক, অফিসে অার্জেন্টিনার সাপোর্টার দের অার্জেন্টিনা বন্দনা (আসলে চাপাবাজি) শুনতে শুনতে আমি নিজেও খানিকটা প্রভাবিত হয়েছিলাম হয়ত। কিন্তু অফিসে কাজের ঝামেলার জন্য বাসায় যেয়ে খেলা দেখতে না পেরে প্রথম দফা হতাশ হতে হল। মনকে প্রবোধ দিলাম এই কথা বলে যে সামুতে চোখ রাখলেই হবে। মাঠে যদি অার্জেন্টিনা সামান্য হাওয়াও ছাড়তে পারে, অার্জেন্টিনার সাপোর্টাররা সামুতে টাইফুন, সুনামি, নার্গিস, বিলকিচ বইয়ে দেবে।
কাজে অনেক ব্যস্ত ছিলাম, হঠাৎ সামু ট্যাব ওপেন করে দেখি সুনামির পুর্বাভাস , একজন পোস্ট দিয়েছে ব্রাজিলের সাপোর্টাররা গেলো কই? খেলা শুরু হতে না হতেই গোল, নাইজেরিয়াকে কোপায়ে.....।
ভাবলাম কিরে খেলা হচ্ছে নাইজেরিয়ার সাথে ব্রাজিলের সাপোর্টারদের খোঁজে কেন? আজ মনে হয় নাইজেরিয়াকে কোপায়ে তামা তামা করে দিচ্ছে। যাইহোক ঢুকলাম খেলা দেখতে। দেখি কি অার্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা মাঝমাঠে গা গরম করতেছে। মধ্য লাইন বরাবর ৪/৫ জন খেলোয়াড় দাড়ানো, একটু সামনে মেসি, মাঝের ৪/৫ জনকে দেখে মনে হলো কাবাডি খেলতেছে । দাগ ছেড়ে ভিতরে যাচ্ছেই না, আর নাইজেরিয়ার কোন খেলোয়ার তাড়া করলে বল গোলকিপারের কাছে ব্যাক পাস। পার্ফেক্ট কাবাডি খেলা।
ঘাসের জমিতে গরু/ঘোড়া বাধা থাকলে একই জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে যেমন খুরের আঘাতে মাঠের ঘাস উঠে ঐ জায়গাটা কাদা কাদা হয়ে যায়, তেমনি অার্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা মাঝমাঠ কাদা করতে করতে যখন নাইজেরিয়ার খেলোয়াড়রা বিরক্ত হয়ে তাড়া করে সেই ফাকে কাদুড়ে গুলো মাঝে মাঝে সামনে বল বাড়ায়, কিন্তু বিখ্যাত ফরোয়ার্ডরা গোলপোস্ট আর খুজে পায়না। ফলাফল মাথার চুল ছিড়ে একাকার ।
এইভাবে চলতে থাকলে তো ভেরন কে আর আলাদা করে চেনা যাবে না, সবকয়টা ফরোয়ার্ড ই এক একটা ভেরন হয়ে যাবে।
যাইহোক অার্জেন্টিনার খেলা দেখে হয় সাপোর্টাররা খুবই পরিতৃপ্ত এই কারনে আরাম করে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে (বিশ্বকাপ নিশ্চিত) অথবা আমার মতই হতাশ।
তবে সামু যে ভয়াবহ টাইফুন, সুনামি, নার্গিস, বিলকিচ এর হাত থেকে রেহাই পেয়েছে এর জন্যই শুকরিয়া.............
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১০ বিকাল ৫:২৭