এই ছুটিতে হঠাৎ করে ''একাত্তরের দিনগুলি'' আবার পড়লাম। ভালো লাগা বই, পছন্দের বই বার বার পড়া উচিত বলে আমি মনে করি। এক বসায় অনেকবার পড়বার কথা বলছিনা, দুবছর কিম্বা তিনবছর বাদে পড়বার কথা বলছি। সময়ের সাথে সাথে আমাদের মনোজগতের মাঝে অনেক পরিবর্তন হয়। সে পরিবর্তনগুলো আমরা সচরাচর সনাক্ত করতে পারি না। নিজের মাঝে পরিবর্তন সনাক্ত করবার জন্য পরিচিত, ভালো লাগা বই একটা চমৎকার পদ্ধতি। একই শব্দ, একই লাইন আমরা নতুন আঙ্গিকে দেখি প্রতি পঠনে।
শহীদ জননী যখন ''একাত্তরের দিনগুলি'' বইটা লিখেছিলেন তখন নিশ্চয়ই প্রতিদিন নিজের জীবনের ঘটনাগুলো, কষ্টগুলো, আনন্দগুলো তুলে ধরছিলেন। তিনি নিশ্চয়ই ভাবেননি, তিনি ইতিহাস লিপিবদ্ধ করছেন। বইটা যখন প্রথম পড়েছিলাম, ভেবেছিলাম যুদ্ধের দিনগুলোর ইতিহাস পড়ছি। এখন পড়তে গিয়ে (কতবার পড়েছি ?) আবিষ্কার করলাম বইটা নিজেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। একজন মায়ের রোজনামচা নেই বইটা আর, একটা দেশের রোজনামচা, একটা মুক্তিকামী মিছিলের কণ্ঠস্বর হয়ে গেছে, ''একাত্তরের দিনগুলি''।
আমাদের এক জীবনে, আমরা কয়টা জীবন্ত বই পড়বার সুযোগ পাই। আমি একটা পড়বার সুযোগ পেয়েছি। আমি নিজেকে ভাগ্যবান ভাবি এই কারণে।
(সচলায়তনের জন্মদিনে সবার জন্য নিজের ভাললাগাটুকু উপহার দিচ্ছি। সচলায়তনে প্রথম প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০০৭ রাত ১২:০২