somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবন-মৃত্য ভাগ্যের চরম পরিহাস।

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবন-মৃত্য ভাগ্যের চরম পরিহাস।
আমার এক মুরব্বি বেচে থাকা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন,আমরা যে বেচে আছি,এইটাই সবচেয়ে বড় বাস্তবতা।আজ বেচে আছি,আপনাদের সাথে মনের ভাব আদান-প্রদান করছি,কাল বেচে থাকব কিনা জানিনা।মৃত্যর সাখে সাথে শেষ হয়ে যাবে,আমার দুনিয়ার সমস্ত লেনদেন।সবাই একসময় ভুলে যাবে,তুহিন বলে একজন ছিল,যে হাসত,কাদত,সবার সাথে মিশত।তার পর একদিন,জহির রায়হান এর হাজার বছর ধরে উপন্যাসের মত আমার উঠানেও আসর বসবে পুথি পড়ার।অথচ আমি থাকবনা।আমি নেই ভাবতেই আমার বুকের ভিতর ব্যাথা করে।কবরের গহিন অন্ধকারে শুয়ে থাকব আমি,একা নিঃস্ব অবস্থায়,কেউ খোজ নেবেনা।অথচ যতদিন বেচে আছি শুভাকাঙ্খীর অভাব নেই।চারপাশে সবাই আছে,একটু জর হলেও আহাজারি করার জন্য সবাই ব্যস্ত।গতকিছু দিনের কিছু মৃত্য আমাকে বিমর্ষ করেছে।আমার গ্রামের এক মহিলা ভিক্ষা করে।তিন কুলে কেউ তার নাই।আমার দাদা থেকে,আমাদের বাড়ীর এক কাজের লোকের সাথে তার বিয়ে দেই।দুইটা ছেলে হলে স্বামী মারা গেল।মহিলা আবার ভিক্ষা শুরু করল।বড় ছেলে পাচ বছর বয়ষে মারা গেল।ছোট ছেলে কে নিয়ে সে বেচে ছিল,ভিক্ষা করে যা পাই দুই জনের চলে যায়।ছেলের বয়ষ এখন পনের।লোকের ক্ষেতে মজুরি দেই।যা পাই মায়ের হাতে তুলে দেই।ছেলে মাকে বলে,মা তুমি আর ভিক্ষা করনা,আমি যা পাই তাতে আমাদের দুইজনের চলে যাবে।মা হাসে আর বলে আরেকটু বড় হও,তখন আর ভিক্ষা করবনা।ছেলের বয়স ১৮।মা চিন্তা করল,ছেলেকে বিয়ে দিতে হবে,কিন্ত ফকিরের ছেলের জন্য মেয়ে পাওয়া অত সহজ না।ভাবল ঈদ এর পর আর যাবে না পরের দুয়ারে হাত পাততে।হায়রে জীবন,মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক।ছেলে শুনে খুব খুশি হল যখন ঈদের নামাজ পড়ে আসার পর মা বলল আর যাবে না ভিক্ষা করতে।ছেলে পাশের বাড়ীর একজনের সাইকেল নিয়ে বাজারের দিকে রওনা হল,মায়ের ভিক্ষার টাকায় গোস কেনার জন্য।বাড়ী থেকে বের হয়ে বাজারে পৌছানর আগে ঘাতর ট্রাক আঘাত করল,বিধবা মায়ের সপ্ন,তার বেচে থাকা একমাত্র সন্তান।হাসপাতালে পৌছানর আগেই মারা গেল ছেলেটি।আর সেই মা,না এখনও মরেনি,বেচে আছে।আবার ভিক্ষা করছে।
আরেকটি মৃত্যর কথা লিখে শেষ করব,আমার বাড়ির পাশে একজন লোকের নাম পেটুক,যদিও আসল নাম খোকন।কিন্তু প্রচুর খেতে পারে বলে তার নাম হয়ে গেছে পেটুক।খাওয়ার গুন থাকলেও কাজ করার গুন তার নাই।তার বউ লোকের বাড়ী কাজ করে,একটা ছেলে ১২/১৩ বছর বয়ষ।গত সপ্তাহ থেকে ভ্যান চালান শুরু করেছিল।পেটুক এবার পেট ভরে খেতে পারবে এই আশা করেছিল।কিন্তু আবারো সেই ভাগ্য।গতকাল ছেলেটি ট্রাকে এ্যাকসিডেন্ট করে মারা গেছে।
আসলে এই আমাদের ভাগ্য।যার উপর আমাদের মোটেই নিয়ন্ত্রন নেই।
আজ আমি প্রথম এসেছি এখানে।আর এসেই মৃত্য দুনিয়ার সবচেয়ে অপ্রিয় বিষয় কে আপনাদের সামনে তুলে ধরে আপনাদেরকে বিরক্ত করলাম।
জীবন মৃত্যর সন্ধিক্ষনে আমার বসবাস।
আমি যদি এই মুহুর্তে মারা যায়,তারপর কি হবে,কেন জানিনা,এই কয়দিন বারে বারে মৃত্যর কথা মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে আমি আর বাচঁবনা,হারিয়ে যাব।আমি এখন কাঁদছি।খুব সুখে ছিলাম আমি।আর আজ আমি অসহায়,চাকুরি নাই,মাঝে মাঝে উপোস দেই।চাকুরির জন্য চেস্টা কম করছিনা,কিন্তু কোন কিছুতে কিছু হচ্ছে না।একখন্ড জমি আছে আমাদের।বিক্রি করার জন্য খুব চেস্টা করছি হচ্ছে না।কম্পিউটার টা নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম,যদি মোবাইলে গান ভরে দিয়ে কিছু পয়সা ইনকাম হয়,হচ্ছিল,কিন্ত আমার সামর্থ নাই আগাম টাকা দিয়ে ঘর নেওয়ার।যার ঘরে বসেছিলাম,সে কম্পিউটার কিনেছে।তাই আবার বাড়িতে ফিরে আসলাম।আমি যদি হারিয়ে যাই,আর যদি না কথা হয়,আমার জন্য দোয়া করেন।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×