somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ বিবর্ণ কৃষ্ণচূড়া - শেষ পর্ব

১৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিবর্ণ কৃষ্ণচূড়া - ১ম পর্ব
বিবর্ণ কৃষ্ণচূড়া- ২য় পর্ব

ওদের দু’জনের গল্পঃ

নাজিফা ভেবে পায় না এটাকেই কি বলে ভালোবাসা? দমবন্ধ করা অনুভূতির কথাটা কাউকে বলার জন্য ছটফট করে ওর ভেতরটা। সমস্যা হচ্ছে কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না ও। এমন এক ছেলের জন্য ওর গলা মুচড়ে কান্না আসে যে ছেলেটার নাম ছাড়া বলতে গেলে কিছুই জানে না সে। ছেলেটা এত নিভৃতচারী যে কোন বিষয়ে সে পড়াশোনা করে সেটা পর্যন্ত বলেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত সাবজেক্ট। কোথায় গিয়ে খুঁজবে ও আবিরকে? যদি এমন হয় যে আবির বলে কেউ নেই, ওর সাথে নোংরা ফাজলামি করছে কেউ? হতেও পারে, হয়ত ওর কোচিং এর কোন ছেলেই কাজটা করছে। ভাবতে গিয়েই নাজিফার ভেতরটা ঠান্ডা হয়ে যায়। নাহ, এত বড় অপমান নিশ্চই আল্লাহ তার সাথে হতে দেবে না। আবিরকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে আছে ও। কিন্তু ভয়ে আবিরকে দেখা করার কথা বলতে পারে না। আবির যদি ওকে পছন্দ না করে? ওকে দূর থেকে দেখেই যদি চলে যায়? আবির কালকে ওকে একটা কবিতা পাঠিয়েছে, “তুমি একটি কৃষ্ণচূড়ার কলি”। নাজিফা পড়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছে। কান্না সামলে আবার পড়েছে, আবার কেঁদেছে। সুখের কান্না, ভালোবাসার কান্না, উদ্বেগের কান্না। এই প্রথম কেউ তাকে বলেছে সে সুন্দর, ভালোবাসার চাদরে মোড়া রক্তিম ফুলের কলির মতই সে সুন্দর। কিন্তু বুকের কাঁপন বলছে অন্য কথা। দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকা ঘাসের ডগায় জমে থাকা ভোরের শিশির বিন্দুকে সূর্যের আলোর প্রতিফলনে হীরে বলে ভ্রম হয়, কিন্তু কাছে আসলে তা সামান্য জলকণা মাত্র। হাওয়ার সামান্য কাঁপনেই তা ঝরে মাটিতে পড়ে নিমিষে মিশে যায়। আবির আবিরের মতই রঙিন, নাজিফা দেখেছে ওকে। আবিরকে অবশ্য বুঝতে দেয়নি ও। গুগলে অনেক খুঁজে আবিরের কয়েকটি ছবি দেখেছে ও। আবির বন্ধুদের সাথে গিয়েছিলো খাগড়াছড়ি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে সবুজ পাহাড়ের ওপর গাঢ় নীল রঙের টিশার্ট পড়া দীর্ঘাকায় কোঁকড়া চুলের হাস্যজ্জ্বল এক তরুন দুই বন্ধুকে জাপ্টে ধরে আছে। আরেকটি ছবি দেখে নাজিফার চোখের পলক পড়ছিলো না, সানগ্লাসে কি হ্যান্ডসামই যে লাগছে আবিরকে। এই ছেলে তার ভালোবাসা কামনা করে? নাজিফার মনে হয় ও বোধহয় রূপকথার রাজ্যে ঢুকে পড়েছে কোনভাবে। ওর বান্ধবীদের কারো বয়ফ্রেন্ড এত সুন্দর না। সবার ঈর্ষামেশানো দৃষ্টি কল্পনায় এখনই উপভোগ করে নাজিফা। আবির রূপকথার রাজপুত্রের মতই স্বপ্নিল। হাতে মোবাইল নিয়ে কাঁপতে কাঁপতে আবিরের নাম্বার বের করে ও। আজ ও শুনবে ভালোবাসার কন্ঠস্বর... প্রথম ভালবাসা।


মোবাইলের স্ক্রিনে ক্যান্ডি ক্রাশ গেম মুছে গিয়ে বাতি জ্বলতে নিভতে শুরু করে, ফুটে ওঠে পানির বুকে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম ছায়ার এক ছবি। আবির নিঃশ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে থাকে। অনেকদিন আগেই ফোন নাম্বার আদান প্রদান হলেও কেউ কাউকে ফোন করেনি। এতদিন শুধু ক্ষুদেবার্তাই পাঠিয়েছে আর প্রতীক্ষায় থেকেছে কাঙ্ক্ষিত ফোনটির। আবিরের গলা শুকিয়ে কাঠ।
“হ্যালো”
ওপাশে শুনশান নিরবতা।
“হ্যালো” আবির আবার বলে। “কৃষ্ণচূড়া?”
“হ্যাঁ”। প্রাণপণে কান্না সামলে বলে নাজিফা।
“কাঁদছো কেন কৃষ্ণ?”
“তোমাকে দেখবো”।

আবির চুপ হয়ে যায়। কি বলবে সে? কবিতার কথা মনে পড়ে যায়। কবিতাও ছোট্ট করে বলেছিলো, “তোমাকে দেখবো আবির, ভালোবাসবো তোমাকে”। চিরদিন কি দূর থেকে ভালোবাসা যায় না? কেন ভালোবাসা শুধু ভালবাসার স্পর্শের জন্য উন্মাতাল হয়? কেন ভালোবাসাকে প্রতিটি ইন্দ্রিয় দিয়ে জানতে হয়? কেন ভালোবাসাকে মানুষ হাত বাড়ানো দূরত্বে পেতে চায়? কেন শত চেষ্টা করেও ভালোবাসার ডাক অগ্রাহ্য করা যায় না? কেন নেশাগ্রস্ত মানুষ বার বার করা ভুল আবারো করে কষ্ট পেতে চায়? আবির এসব কথাই বলতে চায় নাজিফাকে, কিন্তু সে শুনতে পেলো তার কন্ঠ বলছে, “কখন দেখবে বলো”।

“আজকে বিকেলে?”

“কোথায় বলো”।

“ধানমন্ডি লেকে?”

“ওখানে তো অনেক ভীড়-ভাট্টা”।
“তাতে কি? ভীড় তো আমাদের চেনে না, আমরাও ভীড়কে চিনি না”।

আবির হেসে ফেলে। সত্যি তো। ভীড়ের মাঝে একা একা কি সে কখনো হাঁটেনি? আজ না হয় দুজন মিলেই একলা হবে। “ঠিক পাঁচটায় থেকো। আমি আসবো”।

“তুমি আমাকে চিনবা কিভাবে? কি রঙ এর কাপড় পড়বো?”
“আমি তোমাকে চিনে নেবো। তুমি শুধু থেকো”।

আবিরের অস্থিরতা কমে না। কৃষ্ণচূড়া তার দুর্বলতাকে মেনে নেবে তো? কিছু বলবে না বলবে না করেও সে বলে ফেলে, “কৃষ্ণ, আমি দেখতে ভালো না”।
“আমার চেয়ে খারাপ নিশ্চই না!”

“কৃষ্ণ, তুমি অনেক সুন্দর। তোমার কোন খুঁত নেই। আমার...আমার সমস্যা আছে”।

“আবির, তুমি যেমনই হও আমার চোখে তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ছেলে। তুমি আমার প্রথম ভালোবাসা। কি সমস্যা তোমার?”

কথাগুলো আবিরের গলায় এসে আটকে যায়। শুধু বলে, “আমি দেখতে ভালো না। আমার ভয় হয় তুমি আমাকে পছন্দ করবা না। তুমি আঘাত দিলে আমি সইতে পারবো না কৃষ্ণ। তার চেয়ে আমরা চলো দূর থেকেই ভালোবেসে যাই”। আবিরের কন্ঠে মিনতি ঝরে পড়ে।

নাজিফা কিছুতেই শুনবে না। সে বারংবার আবিরকে বলতে থাকে যে ভালোবাসার চোখে আবিরই তার স্বপ্নের রাজপুত্র। আর আজীবন কি এভাবে মুঠোফোনে ভালোবাসা সম্ভব? আবির হাল ছেড়ে আত্মসমর্পণ করে শেষমেষ।
“ওকে। ঠিক বিকাল পাঁচটায়। দেরী করেও লেট কইরো না কিন্তু!”


বিকাল পৌঁনে পাঁচটাতেই উদ্বিগ্নমুখে নাজিফাকে রবীন্দ্রসরোবরে বসে থাকতে দেখা যায়। তিনবার ড্রেস চেঞ্জ করে শেষপর্যন্ত কালো রঙের লং সালোয়ার কামিজটায় থিতু হয়েছে সে। কালো রঙের নাকি কি যেন ইফেক্টে মানুষকে একটু শুকনা দেখা যায়। আপুকে দিয়ে চোখে আইলাইনার আর কাজল লাগিয়ে নিয়েছে। চুলগুলোও আপু হেয়ার স্ট্রেটনার দিয়ে টেনে সুন্দর করে এক পাশে আটকে দিয়েছে। হিল পড়ে সে মোটেই অভ্যস্ত না, আজকে পড়ে মহা ঝামেলায় আছে। বেরুবার মূহুর্তে আপু কপালে একটা কালো ছোট্ট টিপ লাগিয়ে দিলো, তাতে তাকে আরো মিষ্টি দেখাচ্ছে। আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই অবাক, লাজুক একটা মেয়ের প্রতিচ্ছবি। রাঙা একটা আভা তাকে ঘিরে আছে। প্রথমবারের মত তার নিজেকে দেখে মনে হলো, সে তো দেখতে খারাপ না। গায়ের রঙটাও আসলে শ্যামলাই, কালো মোটেই না। নাজিফার সবকিছু নিয়ে টেনশন লাগছে। বাসায় বলে এসেছে বন্ধুর জন্মদিনে যাচ্ছে, ঠিক সাড়ে সাতটার মাঝে বাড়ি না ফিরলে নির্ঘাত আম্মু ভাইয়াকে পাঠিয়ে দেবে। আবির দেরী করলে মূল্যবান আড়াই ঘন্টার মাঝে বেশ কিছু মিনিট নষ্ট হবে। আকাশের মতিগতিও বোঝা যাচ্ছে না; একটু আগেই রোদ ছিল, এখন কোথাথেকে যেন মেঘ এসে আকাশ ঢেকে ফেলেছে। আচ্ছা এই মেঘগুলোর কি বিচার বুদ্ধি কিচ্ছু নাই? আর আবিরটাই বা কই? টেনশনে ঘামতে থাকে নাজিফা।


আবির খুব কাছে দাঁড়িয়েই নাজিফাকে দেখছে, মেয়েটা টেনশনে ইতিউতি চাইছে। আবিরের পিঠের ব্যাগে পাঁচটা গোলাপ, কবিতায় মোড়ানো। হাতে গোলাপ নিয়ে আসতে লজ্জা লাগে, তাই ব্যাগ বয়ে আনা। আবিরও মেঘলা আকাশ দেখে একটু বিরক্ত। ভেবেছিলো অনেকক্ষণ সানগ্লাস পড়ে থাকবে। চাচাতো ভাই ইংল্যান্ড থেকে সানগ্লাসটা পাঠিয়েছিলো, ওকে পড়লে দারুন লাগে দেখতে। প্রিন্টের শর্ট শার্ট আর জিন্সে ওকে আজকে ভালোই দেখাচ্ছে, বের হবার সময় আম্মা আর মহুয়া দুইজনেই হাসাহাসি করছিলো যে সে নাকি জামাই সাজে বাইরে যাচ্ছে। পাঁচটা বাজার আর মাত্র দুই মিনিট বাকি। আবির আস্তে আস্তে নাজিফার পিছে দাঁড়ায়। সমস্ত সাহস একত্রিত করে সে ডাকে, “কৃষ্ণ?”

ডাক শুনে নাজিফা চমকে তাকালো। আবির এসেছে? আলোয় উদ্ভাসিত সদ্য ফোঁটা গোলাপের মতই ওকে আনন্দিত দেখায়। “আসছো??”

“হু, আসলাম তো”।

নাজিফা হড়বড় করে কথা বলতে থাকে, অর্থহীন কথা। অতিরিক্ত উত্তেজনায় কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। অর্ধেকের বেশীই আবির বুঝতে পারছে না। জন্মদিন, আম্মু, দুপুর, টেনশন – টুকরো টুকরো শব্দগুলোকে নিজের মত করে বাক্য বানিয়ে হু হু করে যায় ও। নাজিফা হঠাৎ খেয়াল করে যে আবিরকে ও কোন কথাই বলতে দিচ্ছে না। লজ্জিত হয়ে কথা থামায়, “আচ্ছা, এবার তুমি কথা বলো। তুমি তো কথাই বলো না!”

“কি বলবো? তুমি বলো, আমি না হয় আজ থাকি শ্রোতার ভূমিকায়”।

“এভাবে কবিতা কবিতা করে কথা বলবা না। আমি জানি তুমি অনেক ভালো ল্যাখো, আমি তো নরমালি কথা বলি”।

আবির হাসে।

“এত্ত মিথ্যা বলো তুমি! তোমার কি সমস্যা? কই?” দম না ফেলেই আরেক প্রসঙ্গে রওনা দেয় নাজিফা, “আচ্ছা এই বিকাল বেলায় তুমি সানগ্লাস পড়ে আছো ক্যান? মানুষ কি ভাবতেছে?”

আবিরের বুক কিন্তু এবার আর কাঁপে না। সামনে বসা কিশোরীর দিকে তাকিয়ে থাকে ও। মেয়েটা অস্থির হয়ে কথা বলছে, কি ব্যাগ্রতা আবিরের সামনে নিজেকে প্রমাণ করার। ভালোবাসার শক্তি আসলেই অসীম। আবির আস্তে করে সানগ্লাস খুলে নাজিফার দিয়ে তাকায়।


নাজিফা প্রথমে থতমত খেয়ে যায়, আবির কি ওর সাথে দুষ্টামি করছে নাকি? করতেই পারে! চোখের মণি ওলট পালট অনেকেই করতে পারে। উচ্চস্বরে হেসে ওঠে সে।
“অ্যাই চোখ এভাবে ট্যারা করে রাখছো ক্যান?? আমাকে ভয় দেখাও! ঠিক করো!”

আবিরের কান লাল হয়ে যায়। অদ্ভুত দৃষ্টিতে ও তাকিয়ে থাকে নাজিফার দিকে।

“আরে বাপ হইছে তো! এরকম হাস্যকর ভাবে তাকায় থাকবা না। উইয়ার্ড লাগতেছে”।

আবিরের অনেক কষ্ট হয় কথাটা বলতে, “কৃষ্ণ, আমার চোখ এরকমই”।

নাজিফা হতভম্ব হয়ে যায়। এই তাহলে আবিরের সমস্যা। এত ভয়ংকর কথা এতদিন এই ছেলে তাকে বলেনি? না হয় সে একটু কালো, তাই বলে বিধাতা তার সাথে এত বড় রসিকতা করবে? ট্যারা ছেলে? এজন্যই সে কোথাও ছবি দেয়না, খাগড়াছড়ির ছবিগুলোতেও ছিল সানগ্লাস পড়া। নাজিফার মাথা ঘুরতে থাকে। এই ছেলে নিয়ে সে বান্ধবীদের সামনে যাবে কিভাবে? গ্রুপ ডেটে এই ছেলে তো তাকিয়ে থাকবে নাজিফার দিকে অথচ বান্ধবী ভাববে যে তাকিয়ে আছে তার দিকে! এই ছেলের সাথে রাস্তায় বেরুলে তো টিজ শুনতে শুনতে তাকে মরে যেতে হবে।

“তুমি...তুমি ট্যারা? জন্মগত?”

তীব্র অসহায়ত্বে আবিরের শরীর কাঁপতে থাকে। আসার আগে রিক্সায় বসে কৃষ্ণচূড়ার অনেকরকম প্রতিক্রিয়া সে কল্পনা করেছে। তার মাঝে বিষ্ময়, করুণা, আহত, আদর, মায়া, গাঢ় ভালোবাসা সবই ছিল, কিন্তু অবজ্ঞা মিশ্রিত ঘৃণার কথা একবারো তার মনে আসেনি। সে কি বোকা! ভেবেছিলো যে ভুক্তভোগী একটি মেয়ে হয়ত তার কষ্ট বুঝতে পারবে। তার শারীরিক দুর্বলতাকে ছাপিয়ে তার ভালোবাসাই হবে মেয়েটির কাছে মুখ্য। সাত বছরের ছেলেটির কথা মনে পড়ে তার, খেলতে গেলেই “ট্যারা আইছে” “ট্যারা আইছে” বলে বাকি ছেলেরা চেঁচাতো, কেউ খেলায় নিত না। ষোল বছরের শান্ত কিশোরের চেহারা তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে যে দুরন্তপনার অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে সারাদিন বই এ মুখ গুঁজে থাকতো কারণ আড্ডায় সবাই তাকে “ট্যারা আবির” ডাকতো। শৈশব-কৈশোরে দৌড়ে গিয়ে মায়ের কোলে মুখ গুঁজে থাকতো। তাকে কখনো কিছু বলতে হয়নি, তার মা কিভাবে কিভাবে যেন সব বুঝে যেত।

সানগ্লাসটা তুলে ঝট করে উঠে দাঁড়ায় ও। “তুমি দেখতে অপরূপা নও, নিশ্চই জানো তুমি। আমি তোমাকে একদিন কাঁদতে দেখেছিলাম রিক্সায়। দেখে মনে হয়েছিলো তুমি আমারই মত একজন, আমারই মত বুকে কষ্ট চাপা দিয়ে রাখো। আমি ভুল বুঝেছিলাম। তুমি আর বাকি সবার মতই। নিজের যত খুঁতই থাকুক, মনের মানুষটা হতে রূপকথার রাজপুত্র। কোথায় তোমার ভালোবাসার চোখ যাতে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ছেলে? মুখেই তোমাদের বড় বড় কথা, আসলে শারীরিক সৌন্দর্যের উর্ধ্বেও যে অন্যকিছু আছে সেটা বোঝার ক্ষমতাই নাই তোমার। আমি তোমার গায়ের রঙ দেখিনি, দেখেছিলাম তোমার মনের রঙ। কিন্তু সেটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। তুমি আমার কৃষ্ণ না, কখনো ছিলেও না। কখনো তুমি কারো কৃষ্ণ হবেও না”।


নাজিফা কাঁদতে থাকে। আবির নামের কোঁকড়া চুলের তরুন দৃঢ় পদক্ষেপে চলে যাচ্ছে। নাজিফার তাকে ডাকার কোন সাহস নেই। আকাশ বুঝি নিচের মানুষ নামক নির্বোধ প্রাণীগুলোর কর্মকান্ডেই লজ্জিত হয়ে অঝোরে কান্না শুরু করলো। আশেপাশে মানুষ ছুটাছুটি করছে। নাজিফা রবীন্দ্র সরোবরের মাঝখানের সিঁড়িটাতেই বসে থাকে। বৃষ্টির যদি ক্ষমতা থাকে তার ক্ষুদ্রতা ভাসিয়ে নিয়ে যাবার, তাহলে যাক না।


রিক্সায় বসে এক তরুন হাউমাউ করে কাঁদছে। বৃষ্টির ফোঁটা আর তার অশ্রু মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। সৃষ্টিকর্তার তৈরী করা নিখুঁত মনের একজন তরুন।


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ গুগল মামু

৪১টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×