মেলবর্নে এসে সংসার পেতেছি খুব বেশী দিন না, মাত্র চার মাস। আমি ছিলাম ধানমন্ডিবাসি, সকালে ঘুম থেকে উঠতে মোবাইলের অ্যালার্মের সাথে স্কুলগামী প্রাইভেট গাড়িগুলোর হর্ণের সম্মিলিত কর্কশ ধ্বনির প্রয়োজন পড়তো। কাজের জায়গা ছিলো বাসা থেকে কাটায় কাটায় সাড়ে সাত মিনিটের (পরীক্ষিত!) হাঁটা পথ। ঢাকাবাসীদের নিয়ম অনুযায়ী আমি দৈনিক পত্রিকা পড়তে পড়তে সেই রাস্তা গাড়ি বা রিক্সা যেটাতেই হোক ২০-২৫ মিনিটে পাড়ি দিতাম। কাজ শেষে ৪০ মিনিটে বাসায় ফিরতাম (তখন আবার স্কুল ছুটি!)। টিভি ফুল ভলিউমে ছেড়ে খাবার খেতাম, কারণ সারা বছর বাসার পাশে কোন না কোন বিল্ডিং এর কাজ হচ্ছে; একবার বানাও, আবার ভেঙে আবার বানাও- কোন বিরাম নেই। বোনের সাথে মাঝে মাঝে কথাও বলতাম চেঁচিয়ে, কারন হাতুড়ি আর কংক্রিটের আওয়াজকে পরাজিত করতে হবে তো! রাতে রিক্সার টিং টিং আর মাঝে মাঝে বেরসিক গাড়ির ভ্যাঁ পো শব্দে ঘুমটা যে হতো না...আহা! স্বপ্নও দেখতাম বটে!
যখন আসলাম তখন এখানে চরম গ্রীষ্মকাল। আমার কাছে অবশ্য কলকি পেলো না...জুন-জুলাই মাসের ভরদুপুরে পানি-ছাতা ছাড়াই ধানমন্ডি চষে বেড়ানো মানুষ আমি, মেলবর্নের সূর্যকে পাত্তা দেয়ার কোন মানে আছে? তবে এখানে দেখি সবাই গরমে হাঁসফাঁস করে আর আবহাওয়াকে গালি দেয়, আমারো তো কিছু করার দরকার। সুতরাং আমিও বলা শুরু করলাম যে গরমে চামড়া পুড়ে কালি হয়ে যাচ্ছে, আহা শীত কবে আসবে! (হায়, তখন যদি জানতাম শীত কি জিনিস বাপরে বাপ!) এক ঢিলে দুই পাখি মরলো- ভাব ধরলাম যে আগে যথেষ্টই ফর্সা ছিলাম, হতচ্ছাড়া মেলবর্নের সূর্যের কারনে এই দশা! আর দ্বিতীয়তে ভিনদেশী কেউ চট করে ধরতে পারলো না যে আমি নয়া আবদুল!
আমার জিগারের দোস্তরা আমার যত দোষই ঢাকুক না কেন, তারা মিথ্যা করেও বলতে পারবে না যে আমি কোনকালে স্টাইলিশ বা গোছালো ছিলাম। আবার এক জিগারের দোস্ত ফারিয়া আবার বেশ সুন্দরী, এক অ্যাঙ্গেল থেকে খানিকটা ঐশ্বরিয়া টাইপ। চমৎকার সোজা চুল। ওকে দেখে হেন কাট নেই যে দেইনি...কিন্তু ফলাফল একই। বাতাস প্রবাহিত হোক আর না হোক, মাথা আমার কাউয়ার বাসা! মেডিকেলে যখন ভাইবা পরীক্ষা হতো তখন পড়তাম ক্যাঁচালে।এক বোর্ড থেকে বের হয়ে দৌড়ে বন্ধু মীরার সামনে, সে কোনমতে ভদ্রস্থ করে দেয়ার পর দৌড়ে আরেক বোর্ডে- খুবই কমন দৃশ্য, কেউ কিছু মনেও করতো না। সে যা হোক, এখানে এসে আমার বড় মজাই হলো। কেউ কাউকে পাত্তা দেয় না, রূপসা চপ্পল জাতীয় ব্যাপার পরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। মনের আনন্দে আমি আরো ল্যাবেন্ডিস হয়ে গেলাম। বাইরে যাবার সময় স্পঞ্জ পরেই রওনা দেই, কাজল লাইনারের বালাই নেই। রুমে কোন আয়না নাই, আমার সে নিয়ে মাথাব্যথাও নাই। ইচ্ছে হলে হুডি একটা নেই, নতুবা ওই ছেঁড়া টিশার্ট নিয়েই বাইরে। কি শান্তি! আমার এহেন অবস্থা দেখে টেম্পু (তিড়িং বিড়িং করে বলে আমার জামাইকে অনেকেই এই নামে ডাকে) একদিন গলা খাকাড়ি দিয়ে জানালো যে এখানকার মানুষ আর কিছু করুক না করুক, বাইরে কখনো আউলা ঝাউলা মাথা নিয়ে যায় না। আমার উচিত অন্তত টেবিলের উপরে রাখা চিরুনীটার সদব্যবহার করা। আমি পাত্তা দিলাম না, ঢাকায় আমি কোনদিনও চুল না আঁচড়িয়ে বাইরে যাইনি – কিন্তু সবাই সবসময়েই ভেবে এসেছে যে আমার বাসায় চিরুনি নাই। সুতরাং...হুহ!
সাজগোজ উপেক্ষা করলেও বেসিক কিছু ব্যাপার তো করতেই হয়, বেসিকের মাঝেও বেসিক হচ্ছে চুল কাটা। তিন মাস পর বুঝলাম চুলটা আসলেই কাটা প্রয়োজন। বোঝার পরে গড়িমসি করে আরো একমাস পার করে দিলাম।একটা ক্লিনিকে আমি সপ্তাহে একদিন করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য যাই। মেলবর্নের ঠান্ডা বাতাসের কল্যাণে কাকের বাসা নিয়ে যখন ঢুকি, রিসেপসনিস্টের একটা ভুরু একটু উপরে উঠে যায়। নাহ, এবার তো আর চলে না! টেম্পু একটা হাই তুলে বললো, “কাটলেই হয়! জনের কাছে নিয়ে যাই চলো”। আমি প্রমাদ গুনলাম। জন হচ্ছে একজন চাইনীজ হেয়ারড্রেসার যে ইফানের চুল আড়াই বছর ধরে কাটছে এবং এখন তারা বেশ ভালো বন্ধু। দুইটা কারনে আমার ঠিক ভরসা হচ্ছিলো না, প্রথম কারণটা গৌণ- প্রতিবার সে টেম্পুকে “তেড়িবেড়ি করলে ভূড়ি ফাঁসাইয়া দিমু” জাতীয় একটা হেয়ার কাট দেয় যেটা আমার মতে যথেষ্টই প্রশ্নবিদ্ধ। বাসায় আসার পর দেখা যায় তার চারিধারে তেমন কোন চুলের বংশ নাই, কিন্তু মাঝে রাগী সজারুর কাঁটার মত বেশ কিছু মাঝারি সাইজের চুল। বাতাসেও সেটা খুব বেশী নড়েচড়ে না, প্রতিবারই আমি সাবধানে চুল পরীক্ষা করে দেখি কোন স্টিল বা কার্ডবোর্ড ফাঁকে ফাঁকে দিয়ে ওগুলোকে সোজা রাখা হয়েছে কিনা। আর দ্বিতীয় কারণটাই মুখ্য এবং বেশ জটিল। রিডার্স ডাইজেস্টে একবার একটা সার্ভেতে পড়েছিলাম যে এশিয়া ভিন্ন অন্য মহাদেশের দেশগুলোতে ৮৮ভাগ পুরুষ তাদের মনের দুঃখ এবং গোপন কথা বলার জন্য বেছে নেয় তাদের পার্সোনাল হেয়ারড্রেসারদের। আমি মাঝে মাঝে যে টেম্পুকে প্যারা দেয়ার জন্য বিভিন্ন কাজকর্ম করি সেসব গিয়ে সে জনকে বলে কিনা কে জানে! জনের নিজের ইতিহাসও খারাপ।তার এককালে ছিলো নিজস্ব বাড়ি, বড়সড় একটা গাড়ি। বউ ডিভোর্স দিয়ে যাবার সময় আইন দেখিয়ে সব নিয়ে গেছে।এখন সে ঘুমায় তার সেলুনের পিছের বারান্দায়, মদের বোতলের বিছানায়। দুইয়ে মিলিয়ে সে যদি প্রতিশোধ নিতে চায়, আমার চেয়ে ভালো শিকার আর কি হতে পারে? সুতরাং বাদ! মুখে অবশ্য বললাম যে অতদূরে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, তার চেয়ে বিকল্প ব্যবস্থা দেখা ভালো। সে বিরক্ত হয়ে বললো, “তাহলে বাসার সামনেরটাতে যাও”।
পাশেই থাকে কেরালার ছেলে তরুন, তার সাথে আমার বেশ ভালো খাতির হয়েছে ইতোমধ্যেই। তার কাছে গেলাম পরামর্শ নিতে। দেখলাম সেও চিন্তিত। সেও মেলবর্ন এসেছে আমার মাত্র একমাস আগে এবং তারও এখন চুল কাটা প্রয়োজন। তবে যেহেতু সে ইউকেতে দুইবছর ছিলো, সে আমাকে কিছু গুরুত্বপূর্ন টিপস দিলো। সেটা হচ্ছে ভুলেও যেন কাটা ছাড়া অন্য কিছু না নেই, এরা স্টাইলিং বলতে বোঝে মাথায় জেল দেয়া অথবা ড্রায়ার দিয়ে ব্লো করা এবং যে বিলটা আসবে তা দিয়ে একমাসের কাঁচাবাজার হয়ে যাবে! আমরা চুল কাটতে চাই শুনে সবাই তাদের মেলবর্নে প্রথম হেয়ারকাটের অভিজ্ঞতা জানানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে গেলো। একটা থেকে আরেকটা ভয়াবহ ব্যাপার। তরুন পরের দিনই চুল কাটলো এবং রাগে গজগজ করতে করতে আসলো। তার চেহারা মন্দ না, তবে চুল কাটার পর তাকে কেমন যেন চ্যাপ্টা দেখাচ্ছে। দেখে শুনে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম বাসার সামনেরটাতেই যাবো!
সেলুনটাকে বাইরে থেকে দেখে সাধারনই মনে হয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিলো যে আমি বোধ হয় ভুল জায়গায় এসেছি। ঢুকেই দেখলাম চেয়ারে একটা গোলাপি চুলের ছেলে মাথায় বিভিন্ন ক্লিপ এটে বসে মেয়েদের সাথে বেশ হাসাহাসি করছে। আমাকে সে যে লুকটা দিলো সেটা হচ্ছে, “ওহ গড! এখন কি এরাও এখানে আসা শুরু করেছে?” তার কর্মকান্ড যথেষ্টই প্রশ্নবিদ্ধ! রিসেপসনের সোনালি চুলের সুন্দরীকে বুঝিয়ে বললাম যে কি করতে চাই। এরই মাঝে সেলুনের এক কোণা থেকে বিকট চিৎকার! আঁতকে উঠে তাকিয়ে দেখি প্রায় ৭০-৭৫ বয়সী এক বুড়ি শুয়ে আছে। আমি সুন্দরীর দিকে চোখ গোল গোল করে তাকাতেই সে আমাকে আশ্বস্ত করলো, “চিন্তা করো না। ফেসক্লিন আর নোজ জব করছে তো, তাই”। তখনই বুঝলাম কাহিনী খারাপ- যে সেলুনে বুড়ি এবং গেরা আসে সেখানে সেবা নেয়ার মত সামর্থ আমার মানিব্যাগের এখনো হয়নি। হলোও তাই, বিল শুনে মানে মানে বের হয়ে এলাম। অবশ্য আসার আগে একটু দাঁত দেখিয়ে এসেছি, হাসি বা খিঁচানি যে যেটা ভাবে আরকি!
শেষমেষ সিদ্ধান্ত নিলাম যে উৎস ভাই যেখানে টিভি কিনতে যাবে সেখানেই আমি চুল কাটবো।এখানে জনমনে প্রশ্ন হতে পারে যে টিভি কেনার সাথে চুল কাটার সম্পর্কটা কোথায়! সম্পর্ক অতি গভীর।তার একটা গাড়ি আছে, সুতরাং চামে চিকনে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এড়ানো আরকি। তরুনকেও যাবার দাওয়াত দিলাম।অ্যাসাইনমেন্ট না করার একটা কারন পেয়ে সেও আগ্রহ সহকারে সঙ্গ নিলো। গন্তব্য গ্রীনসব্রো প্লাজা। ঢুকেই দেখি এক সেলুনে অ্যাডভারটাইজমেন্টের লক্ষ্যে ঐদিনের জন্য বেশ সস্তায় চুল কেটে দিচ্ছে। খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে ঢুকেই পড়লাম। এক চাইনীজ ব্যক্তি এগিয়ে এলো। আমি তাকে হড়বড় করে বললাম যে চুল কিভাবে কাটতে চাই। সে খানিকক্ষণ শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো, “ফিফতিন দলার”।ঠিক তখুনি সেলুনের পিছনের দরজা দিয়ে একটা চাইনীজ মহিলা ঢুকলো। তাকে দেখে একটু ভরসা হওয়ায় আমি মাথা ঝাঁকিয়ে ওয়েটিং সোফায় বসে পড়লাম। মহিলা এক বাদামী চুলের মেয়ের চুলে রঙ করছে। সে হাসি দিয়ে আমাকে আশ্বস্ত করলো যে বেশীক্ষন লাগবে না। তাকিয়ে দেখি মেয়ের বেচারা স্বামী আরেক সোফায় বসে প্যারামবুলেটরে শুয়ে থাকা কয়েকমাসের এক বাচ্চাকে দোলাচ্ছে আর উদাস নয়নে সেলুনের ছাদের লাইটিং দেখছে। আমি “দেখছো কি ভালো জামাই” বলতে বলতে পাশে তাকাতেই দেখি এরই মাঝে টেম্পু এবং তরুন দুইজনেই হাওয়া হয়ে গেছে! কি আর করি, অস্ট্রেলিয়ান এক স্টাইল ম্যাগাজিন খুলে বসলাম। কাভার স্টোরির হেডলাইন থেকেই থতমত! ২৮/২৯ বছরের এক ছেলে আধশোয়া হয়ে জানাচ্ছে যে এরই মাঝে তার ৩০০ এর উপরে মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়ে গেছে! ভয়ে ভয়ে স্টোরি খুললাম। লাল রঙের কালিতে বড়বড় করে ছেলের ডায়লগ লেখা। ভদ্র ভাষায় অনুবাদ করলে, “আমার কিছু করার নেই যে আমি বিছানায় এত ভালো! হয়ত এই জন্যই আমার জন্ম হয়েছে। সুন্দরীরা আমাকে চুম্বকের মত আকর্ষন করে। ১০০ এর উপরে যাবার পর আমি অবশ্য গোনা বন্ধ করে দিয়েছি!” অভ্যাসবশত ঠাশ করে ম্যাগাজিন বন্ধ করে এদিক ওদিক তাকালাম, কেউ দেখলে কি ভাববে যে এই মেয়ে এসব কি পড়ে!!! পরমূহুর্তেই মনে পড়লো, আরে আমি তো এখন ঢাকায় না! ডায়লগ শেষ করার জন্য আবার খুললাম যাতে সে বলছে, “তবে আমি এখন একটি ভালো মেয়ে খুঁজছি।চমৎকার একটি মেয়ে যার সাথে আমি সারাটা জীবন কাটাতে চাই”। ওয়াহ... চমৎকার। এখন উনি খুঁজছেন ভালো মেয়ে, এবারে কিন্তু আর সুন্দরী না! ফাজিল ব্যাটার ইতিহাস ৪/৫ পৃষ্ঠা ধরে বিতং করে লেখা, পৃষ্ঠা গুনেই মেজাজটা খিঁচড়ে গেলো। এইটা নাকি কাভার স্টোরি!!! এরপর আমি পড়লাম শীতকালে কেন অস্ট্রেলিয়াতে মেয়েদের সিঙ্গেল থাকা উচিত তার ১১টি কারণ, বয়ফ্রেন্ডকে বিদায় জানাবার বিভিন্ন টিপস। অপেক্ষা করতে করতে একটা কুইজও নিয়ে ফেললাম, “কেন তুমি দীর্ঘসময় ধরে একাকী!” আমার উত্তর আসলো, “তোমার ফ্লার্টিং স্কিল ইমপ্রুভ করা বিশেষ প্রয়োজন। সাজগোজ এবং ওয়ার্ডড্রোবেও আনতে হবে নতুনত্ব”। বুঝলাম, টেম্পুকে ছাড়া আমার গতি নাই!
ডাক পড়লে আল্লাহর নাম নিয়ে বসে পড়লাম চেয়ারে। সত্যি বলতে কি মহিলাকে আমার পছন্দই হলো। প্রতিটি স্টেপেই সে আমাকে বিভিন্ন অপশন দিচ্ছে। আমি বরাবরই শর্ট কোশ্চেনের চেয়ে মালটিপল চয়েস কোশ্চেন পছন্দ করি, একটু আইডিয়া পাওয়া যায়। কাটার পরে দেখা গেলো আমাকে নরমালই দেখা যাচ্ছে, উদ্ভট কোন চিড়িয়া না। আমি তাতেই খুশী। এর মাঝে টেম্পু আর তরুন ফেরত এসেছে। তারা জানালো যে মন্দ না ভালোই কেটেছে। প্রথম বলেই ছক্কা!
ঘটনা ঘটলো পরের দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দেখি আমাকে যেন কেমন দেখাচ্ছে। চুল এদিক করলাম ওদিক করলাম...নাহ, কি যেন একটা সমস্যা! বাইরে বেরুতেই তরুনের সাথে দেখা... “ওওও সামারা... I know you…you know, I really really know you!” আমি সরু চোখে তাকিয়ে রইলাম। “I am me! Remember?” “আরে না না, তোমার চুল... ওই যে একটা চাইনীজ কার্টুন আছে না? গোলাপি জামা পড়ে! ইয়েয়েয়েস! ডরোথি! তোমাকে একদম কার্টুনের মত দেখাচ্ছে!” নাম মনে পড়ায় তার মুখে যুদ্ধজয়ের হাসি। এবারে আমিও বুঝলাম আয়নায় আমাকে কার মত দেখাচ্ছিলো। সাথে সাথেই আরেকজন আসলো, “heeey…. You look familiar!” আমি বিরসবদনে বললাম, “কার্টুন?” “হ্যাঁএএএ!” সবাই খুশী, শুধু আমি শুকনো মুখে বসে রইলাম। টেম্পু ফিরে যে কি বলবে, এম্নেই তার ডায়লগবাজি এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়। সে ফিরলো সন্ধ্যায়। খানিকক্ষন তাকিয়ে বললো, “বাহ! ভালো তো!” আমি আশায় বুক বাঁধলাম, “আচ্ছা?!” এরপরেই বোমাটা ফাটলো, “হু। ওই যে দেশে কলেজে পড়া কিছু পাজি পুলাপান আছে না, মেয়েদের স্কুলের সামনে দাঁড়ায়ে বিড়ি ফুঁকে? ঐগুলার মতন লাগতাছে!”
ধরণী দ্বিধা হও! আমি কাঁথা আর কম্বল নিয়া তোমার ভিতরে ঢুকে যাই!