কি লিখতে যাচ্ছি নিজেই জানিনে, তাই পাঠকদের সতর্ক করে দিতে চাই যে এই লেখা পড়বার পর উনাদের মনে হতে পারে অযথা নিজের সময় নষ্ট করলাম। অতএব সম্মানিত পাঠকদের যদি কিছু সময় হাতে থাকে নষ্ট করবার মতন তাহলে লেখার বাকিটুকু পড়তে পারেন।
লিখতে গিয়ে স্পর্শ ভাইয়ার কথা মনে পড়ে গেল। সামহোয়ারিনে উনি (অ)গাণিতিক বলেই অধিক পরিচিত। উনার আব্জাব লেখাগুলোর আমি বেশ ভক্ত ছিলাম। ভাইয়ার সাথে আমার ব্যক্তিগত ভাবেও তেমন পরিচয় নেই তাই জানিওনা কেন আজকাল লিখছেন না ভাইয়া। তবে নতুন লেখা পেলে খুব ভাল লাগত উনার থেকে। যাই হোক মূল প্রসঙ্গে আসি এবার, নুশেরা আপু মাঝেসাঝে আমাকে প্রশ্ন করে থাকেন যে তুমি গদ্য লেখনা কেন? উনার সাথে তাল মিলিয়ে হয়তো আরো কয়েকজন আমাকে একই প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু জবাব যে আমার জানা নেই তা বলাই বাহুল্য। নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে কোথায় থেকে কোথায় যেন হারিয়ে যাই। তবু এই প্রশ্নের সদুত্তর হয়তো এখনো যোগাড় হয়নি। তবুও ঠেস দিয়ে দাঁড় করালাম এই প্রশ্নের অগোছালো কিছু উত্তর, মনের ভেতরেই।
আমি কিছু লিখতে বসলে এক প্রসঙ্গে থাকতে পারিনা। হঠাৎ কিভাবে যেন প্রসঙ্গ বদলে যায় তার উপলব্ধিও হয়না। যেমন লিখতে বসার পরমুহূর্তে ভাবছিলাম অকবিতা টাইপের লেখা লিখিনা অনেকদিন তাই একটা চেষ্টা করে দেখা যাক। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবেই চিন্তাটা বাতিল করে দিলাম। ভাবলাম হাবিজাবি মনে যা চায় তাই লিখি। সেখান থেকে স্পর্শ ভাইয়ার প্রসঙ্গ এবং ইত্যাদি ইত্যাদি। মনে হচ্ছে প্রসঙ্গ থেকে আবার দূরে চলে যাচ্ছি। আচ্ছা, যা বলছিলাম আরকি। কোন প্রসঙ্গে লিখব তাই ভেবে পাইনে লিখতে বসে। গদ্য বের হবে কিভাবে বলুন?
এবার অন্যদিকগুলোতে আলোকপাত করা যাক, আমার বাংলা বানান মনেহয় দিনে দিনে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে যাচ্ছে। আর ভুল বানানে বাংলা লেখা খুবই দৃষ্টিকটু দেখায়। আমার লেখার মাঝে কেউ কোনও ভুল বানান দেখলে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন দয়া করে। অত্যন্ত বাধিত হব। গদ্য ধরনের লেখাগুলোর জন্য পর্যাপ্ত বাংলা শব্দের ভাণ্ডার থাকা খুব জরুরি বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। যা আমার কাছে নেই। তাই তেমন গদ্য লেখার যোগ্যতা কোথায় ? এর সাথে পর্যাপ্ত বাংলা সাহিত্য চর্চার অভাব, ব্যাকরণগত দুর্বলতা, জীবন-দর্শন সম্পর্কে ধারনার অপ্রতুলতা, ব্যক্তিগত দ্বিধা ইত্যাদি তো আছেই।
আরেকটা সমস্যা হয় আমার লিখতে গিয়ে, সেটা হচ্ছে লেখার শেষ পর্যায়ে এসে ঠিক বুঝে উঠতে পারিনে কিভাবে শেষ করা যায় লেখাটা। এ প্রসঙ্গে পূর্ব-অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে গেল। একবার এক ই-ম্যাগাজিনের সম্পাদক ভাইয়ার চাপাচাপির কারনে একটা হাবিজাবি লেখা দিতে হয়েছিল। প্রবন্ধ টাইপের লেখা ছিল সেটা, 'ভার্চুয়াল রিয়ালিটি' নিয়ে ছিল যতদূর মনে পড়ছে। ওটা লিখতে গিয়ে কিছুতেই আমি উপসংহার অংশটা যুতসইভাবে লিখতে পারছিলাম না। যাই লিখি মনঃপুত হচ্ছিল না নিজের কাছেই। তারপর সম্পাদক ভাইয়াকে গিয়ে ধরি। উনি প্রথমে একচোট হেসে নিলেন তবুও উনি দিকনির্দেশনা না দিলে হয়তো ঐ লেখাটা শেষ করাই যেতনা। লিখতে লিখতে আবার প্রসঙ্গ থেকে পিছলে যাচ্ছি মনেহয়। পাঠকরা সেটা বেশ বুঝতে পারছেন এতক্ষণে। রাজনৈতিক বক্তাদের বক্তৃতার মতন লেখাটি দীর্ঘায়িত করে পাঠকদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবার উদ্দেশ্য আমার একদমই নেই। শেষ করার আগে আরেকবার তাই বলব যে গদ্য লেখা বোধকরি আমাকে দিয়ে হবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৫