বরেণ্য আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন স্যারের মাথায় চুলগুলো বয়সের কারণে চলে যায় নি,এগুলো বিসর্জন দিতে হয়েছে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে গিয়ে। ছাত্র জীবনে গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অগ্রগামী ভূমিকায় শামিল হওয়ায় বদৌলতে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের সময়ে কারাবরণ করতে হয়েছিল। কারাগারে ব্লিচিং পাউডার মিশ্রিত পানিতে গোসল করার প্রেক্ষিতে মাথায় এই পরিণতি।
স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা স্যারের ওয়ারীর হেয়ার স্ট্রিট রোডের বাসাকে অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহার করতেন। আলমারিতে রাখা মোটা আইনি বইয়ের পেছনে লুকিয়ে রাখতেন গ্রেনেড! একদিন গ্রেনেড বহনকারী এক বীর মুক্তিযোদ্ধা স্যারকে এসে বললেন, কবি জসীম উদ্দীনের কমলাপুরের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য। ওই বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। নিজের ট্রাম্প গাড়িতে করে রওনা দেয়া মাত্রই পাক সেনারা তাদের গতিরোধ করে। পাক সেনাদের বোকা বানিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন তিনি।
স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি নানান ঐতিহাসিক কারণে তিনি প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবেন। পেশার পাশাপাশি সমাজিক কার্যক্রমে রেখে গিয়েছেন সফলতার নজির।
৫৫ বছরের আইন পেশায় দেশের প্রথম সারির সব রাজনীতিবিদের মামলা পরিচালনা করেছেন তিনি। স্যারের বিরুদ্ধে চলমান হাফ ডজন মামলার আইনজীবী হিসেবে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সুযোগটি দিয়েছিলেন আমার সিনিয়র, ফৌজদারি আইন চর্চার জগতে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি এডভোকেট তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ সাহেব।
ওকালতির সংক্ষিপ্ত এই সময়ে এই সুযোগ আমার জন্য অমূল্য প্রাপ্তি। স্যারের সান্নিধ্য পাওয়াটা আমাদের প্রজন্মের জন্য ছিলো ভাগ্যের। মহান রাব্বুল আলামীন স্যারকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুক। আমিন।