somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বঙ্গ ভাষার রঙ্গ-পার্ট-৩(১৮+)

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার এইসকল প্রতিভা যে শুধুমাত্র পাঠ্যবই সংক্রান্ত বিষয়ে সীমাবদ্ধ ছিল তাহা নহে।সাহিত্য ক্ষেত্রেও এই প্রতিভার প্রকাশ ঘটিয়াছে।জীবনে দুই একবার যেমন কবিতা লিখার চেষ্টা করিয়াছি তেমনি অন্যের লিখা কবিতার স্যটায়ার তৈরির পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে জগাখিচুড়ী কবিতার মাধ্যমে কবিতার অর্থই বদলাইয়া দিয়াছি যেমন “জীবে দয়া করে যেই জন,কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন”।মানপত্র রচনার স্যাটায়ারের ক্ষেত্রেও আমার জুড়ি মেলা ভার ছিল...এই বছর দুই আগেই অনার্স ফাইনাল শেষ করিবার পরে যক্ষন আমাদের ডিপার্টমেন্টের সকলকে প্রথম বর্ষের ক্যালকুলাস করিতে হইল তখন জাপানের হিরোশিমা হইতে পিএইচডি করা রতন চন্দ্র ঘোষ স্যারের প্রতিভায় মুগ্ধ(!!!!) হইয়া মানপত্র লিখিতে শুরু করিয়াছিলাম... “হে হিরোশিমার জ্ঞানপিপাসু...তোমার জ্ঞানতৃষ্ণায় আজ জাপান সাগর শুকাইয়া গিয়াছে, বার বার কম্পিত হচ্ছ গোটা জাপান...তীব্র সুনামিও তোমার জ্ঞানের তৃষ্ণার কাছে তুচ্ছ এক বিন্দু শিশিরকণা ছাড়া কিছুই নহে...............” পরবর্তীতে ক্লাসের ঘন্টা পড়িয়া যাওয়ায় উহা আর শেষ করা হইয়া উঠে নাই...

পরিভাষা বলিতে একসময় পরিদের ভাষাকেই বুঝিতাম...পরবর্তীতে এ ধারণায় আমূল পরি-বর্তন আসে।পরিদের কল্পনা করিয়া কত পরিকল্পনা যে করিয়াছি তাহা বলিয়া শেষ করা যাইবে না।এখন জীবন পরিচালনা করিতে গিয়াই পরিতাপ করিয়া কোন কূল কিনারা পাইতেছি না।অনুবাদ করিতে গিয়া বাটারফ্লাই এর অর্থ আমি পাল্টাইয়া ফেলায় নম্বর না পাইলেও কিছু বাংলা অনুবাদ সর্বদাই আমাকে হাস্যরসের খোরাক যোগাইয়াছে...যেমন “A mam while climbing a hill each minute he climbs 5 ft and drops 2 ft...if the height of the hill is 80ft how much time is required for the man to climb at the top of the hill?”
এই অংকের বাংলা ভার্সনে ম্যান এর অনুবাদ হইয়াছে বাঁনর এবং হিল এর অনুবাদ হইয়াছে তৈলাক্ত বাঁশ।গ্রামীনফোনের বর্তমানে একটি এড আছে যেখানে এই বাঁশে তেল দেয়া বন্ধের দাবী জানানো হইয়াছে...আসলে বাঁশে তেল দিলে তাহা আরামসে ঢুকিয়া যায় বিধায়ই গ্রামীনফোন এই ব্যবস্থা লইবার দাবি জানাইয়াছে যাহাতে উহাদের গ্রাহকরা ঠিকমতো বাঁশ খাইতে পারে।আসলে বাঁশের টেকসই উন্নয়নে তেলের ভূমিকা এইখানে অগ্রাহ্য করা হইয়াছে...আমাদের সামুর “বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজ” কিংবা টেলিটকের “বাঁধ ভেঙ্গে দাও” স্লোগানে বাঁধের অংশে ধ এর পরিবর্তে শ এর ব্যবহার হইতে পারে যুগান্তকারী।



আমাদের বাংলা ভাষাটা কিছু ক্ষেত্রে নারী বিদ্বেষী...যেমন ছেলেবেলা কথাটার বিপরীতে মেয়েবেলা কথাটা কিন্তু আমাদের ভাষায় নাই...তেমনি রাষ্ট্রপতির বিপরীত রাষ্ট্রপত্নী নাই।এছাড়া আরো অনেক ক্ষেত্রেই লিঙ্গ বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়।এইসব দিকে যে আমাদের সুশীল সমাজ কবে নজর প্রদান করিবে।অন্যদিকে পাঠ্যবইয়ে “ঝি কে মেরে বউকে শেখানো” এর মত প্রবাদ বাচ্চা কাল থেকেই পড়াইয়া পরিশেষে বিসিএস পরীক্ষার লিখির অংশে কিনা আসে নারীর ক্ষমতায়ন...সত্যি বড় বিচি-ত্র এ দেশ সেলুকাস...

আসলে বাংলা ভাষা যে কত রহস্যময় তা নিচের দুইটি গল্পেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হইয়া যায়...

গল্পঃ১ এক জাপানী শান্তিনিকেতনে বাংলা শিখবার পর গুরুদেবের সাথে তার কথোপকথন...
গুরুদেবঃ বাবা এখানে থাকাটা তোমার কেমন লেগেছে?
জাপানীঃ সব ভালোই লেগেছে কিন্তু গুরুদেব...
গুরুদেবঃ কিন্তু কি বাছা?
জাপানীঃ গুরুদেব এখানে সবাই সবাইকে দাদা বলে ডাকে।যেমন বিমল কে বিমলদা,তপনকে
তপনদা,বিকাশকে বিকাশদা কিন্তু আমাকে কেউই এমন দাদা বলে ডাকে নি...
গুরুদেবঃ তা নাম কি তোমার বাবা?
জাপানীঃ বোকা চো... :D

গল্পঃ২ এটা আমার বাপের কাছ থেকে শোনা।
একবার এক বিদেশী বাংলাদেশে এসে বাংলা শিখল।তো সে যে খুব ভালো বাংলা পারে সেইটা সে জাহির করিয়া বেড়ায়...তো একদিন এক লোকের কাছে সে তার বাংলা ভাষার বিদ্যা জাহির করিতে শুরু করিল।তো সেই লোক কইল আপনি বাংলা ভাষার কিছুই এক্ষনো শিখেন নাই আসেন প্রমাণ দেখাই।তো সেই লোক বিদেশীটাকে নিয়া নৌভ্রমণে গেলেন।তো কিছুক্ষণ নৌকায় করে ঘোরার পর সেই লোক বিদেশীকে বললেন যে, “নাউ আসক দ্য বোটম্যান টু টার্ন এন্ড মুভ দ্য বোট টু দ্য পোর্ট ইন বেঙ্গলি”। তো সেই বিদেশী মাঝিকে উদ্দেশ্য করিয়া বলিলেন, “ওহে কর্ণধার,তরণী তটে সংলগ্ন কর”।মাঝির মধ্যে দীর্ঘক্ষণেও কোন ভাবান্তর না দেখিয়া তিনি আবার এই কথা বলিলেন।এবার বাঙ্গালী বাবু বলিলেন, “লেট মি ট্রাই”...এরপর তিনি মাঝিকে বললেন, “ওই মাঝি নৌকা ঘাটে নে...” আর এই কথাতেই কাজ হইল...আর ঐ বিদেশীও বুঝল যে তার বাংলা শিখতে অনেক বাকি।

আগের দুই পর্বের লিঙ্ক

বঙ্গ ভাষার রঙ্গ-পার্ট-২(১৮+)

বঙ্গ ভাষার রঙ্গ-পার্ট-১(১৮+)
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারত একটি মানবিক দেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৩৮



যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। আমরা বাংলাদেশি তোমরা ভারতীয়। আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই। ভারতের বাংলাদেশের সাথে সাংস্কৃতিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

লামিয়ার আত্মহনন: রাষ্ট্রীয় অক্ষমতা, সামাজিক নিষ্ঠুরতা ও মনুষ্যত্বের অন্তর্গত অপমান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৫১


সেদিন ছিল ১৮ মার্চ ২০২৫। পটুয়াখালীর দুমকীতে বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন শহীদ জসিম হাওলাদারের ১৭ বছরের কলেজপড়ুয়া মেয়ে লামিয়া। সে বাবা, যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমুদ্রের গভীরে 'অন্ধকার অক্সিজেন'!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩



সমুদ্রের গভীরে 'অন্ধকার অক্সিজেন'! তৈরি হচ্ছে সূর্যালোক ছাড়াই, বিস্মিত বিজ্ঞানীরা:—

♦️সমুদ্রের ৪ হাজার মিটার তলদেশ। অন্ধকারে আচ্ছন্ন এক জগৎ। আর সেখানেই নাকি রয়েছে অক্সিজেন! বিজ্ঞানীরা যাকে ডাকছেন 'ডার্ক অক্সিজেন' নামে। 'নেচার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০৪


আজ বিমান বাহিনীর বার্ষিক মহড়ায় এমনটাই বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এমন বক্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করছেন বাংলাদেশ কি তবে মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

Appalachian Trail ৩৫০০ কিমি পায়ে হেটে

লিখেছেন কলাবাগান১, ০১ লা মে, ২০২৫ ভোর ৬:০৭


অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইল: এক অসাধারণ অভিযানের গল্প

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবুন, আজ আপনাকে ১৫-২০ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হবে। রাত হবে পাহাড়ের কোলে তাঁবুতে, খাওয়া-দাওয়া চলবে নিজের রান্না করা খাবারে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×