লিবিয়া যুদ্ধে সবচেয়ে ধ্বংস হওয়া শহরের নাম সিরত। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বুলেটের খোসা আর ঘরবাড়ি, গাছপালার ভাঙ্গা টুকরার জন্য শহরে পা ফেলার মতো জায়গা ছিল না। কিন্তু অন্য কোন উপায় না থাকায় শহরবাসীরা নিজেরাই শহর পরিষ্কার করা শুরু করে। দেখতে দেখতে মাত্র মাস দুয়েকের মধ্যেই শহরের চেহারা অনেকটাই ফিরে আসে। কিন্তু ধ্বংস হওয়া বড় বড় ভবনগুলো এখনও সেই আগের অবস্থাতেই আছে। সেগুলো ঠিক করার উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও গতি খুবই ধীর। অবশ্য সবকিছু একসাথে ঠিক করাও সম্ভব না। ধারণা করা হয় সিরত পূণর্গঠনে প্রায় ১০ বিলিয়ন দিনার খরচ হবে।
গত ১০ জুন সিরত ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি কর্তৃক একটা ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়, যার শিরোণাম ছিল এয়াদাত আ'মার মাদীনাত সেরত - রু'ইয়া মুস্তাক্ববালীয়া, অর্থাত্ দ্যা রিবিল্ডিং অফ সিরত সিটি - দ্যা ভিশন টু ফিউচার। অনুষ্ঠানে সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, সীপোর্ট, এয়ারপোর্ট প্রভৃতি বিষয়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ এবং পুণর্গঠনে প্রয়োজনীয় মোট আর্থিক পরিমাণের বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিদের সামনে একটা ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে পূর্বে সিরত কিরকম সুন্দর ছিল, আর যুদ্ধের কারণে কিরকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এরপর কিভাবে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে সেগুলো দেখানো হয়। উল্লেখ্য এই ভিডিওটা আমারই বানানো। অ্যমেচার কাজ, তবুও সামান্য একটু প্রচেষ্টা। আশা করি সবাই ভিডিও দেখে জানাবেন কেমন লাগল।
একটা বিষয় বলি, মূল ভিডিওটা আরো বড় ছিল। সেখানে বিদ্রোহীরা কিভাবে সিরতে মিসাইল মারছে, অবিরাম গুলি বর্ষণ করছে, এরকম বেশ কিছু দারুণ ছবি এবং ভিডিও ক্লিপস ছিল। কিন্তু ভার্সিটি থেকে আমাকে বলা হয়, যুদ্ধ সংক্রান্ত সব ছবি এবং ভিডিও সরিয়ে ফেলতে। অর্থাত ধ্বংসস্তুপ দেখানো যাবে, কিন্তু তার কারণ দেখানো যাবে না! বুঝাই যাচ্ছে, ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও, মানুষের স্বভাব এখনও আগের মতোই রয়ে গেছে!
ভিডিওটার লিংক:
অনুষ্ঠানের কিছু ছবি:
বাম পাশেরটা আমি!
আমি কথা বলছি ফটোগ্রাফার মোহাম্মেদ সালেহের সাথে