বিভিন্ন বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেছেন, সেনাবাহিনী এখন একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
আব্দুল জলিল বলেন, "আমরা দেখেছি- বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়। জানিনা কোন শর্তের অওিতায় তারা এই কাজটি পেয়েছিল।"
এই কাজের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
আব্দুল জলিল সংসদের কাছে জানতে চান, "তাহলে সেনাবাহিনী কি একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান? তাদেরকে কেন টোল আদায়ের কাজ দেওয়া হয়েছিল? আমরা তাদের ব্যাংক, হোটেলের মতো প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি দিয়েছি। তাহলে কি আমরা সেনাবাহিনীকে তাদের মূল দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনছি?"
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থায় গ্রেপ্তার এই নেতা গোয়েন্দা সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে দল এবং শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কিত নানা কথা বলে ব্যাপক আলোচিত হন। দলের সাধারণ সম্পাদক হলেও বর্তমানে অনেকটা অঘোষিতভাবেই দলীয় সব দায়িত্ব পালন করছেন মুখপাত্র স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের অন্তর্ভুক্ত না করারও দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা নিয়োগ করতে পারেন ঠিকই, তবে তারা মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে অংশ নিতে পারেন না। মন্ত্রীরা গোপনীয়তা রক্ষার শপথ করেছেন, তবে তারা এমন কোনো শপথ করেননি।"
সাবেক বণিজ্যমন্ত্রী আব্দুল জলিল বলেন, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দ্বৈত সরকার ছিল। একটি ছিল ফখরুদ্দীন নেতৃত্বাধীন,আরেকটির নেতৃত্বে ছিল জেনারেল মইন উ আহমেদ।
তিনি বলেন, "সরকারের ত্রাণ গ্রহণের পাশাপাশি দেখা গেছে সেনাবাহিনীও ত্রাণ গ্রহণ করছে। তাদেরকে কে এই অনুমতি দিয়েছে। ত্রাণ গ্রহণের একমাত্র কর্র্তৃত্ব সরকারের।
"আমরা বিগত দুই বছরে তাদের কর্মকাণ্ডের অনুমোদন দিয়েছি। তবে তাদের অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডের তদন্ত হওয়া দরকার।"
জলিল বলেন, বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দের একটি বড় অংশ ক্যাডেট কলেজগুলোর পেছনে ব্যয় হয়। অন্যদিকে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ চলে যায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমি ব্যক্তিগতভাবে সামরিক খাতে বেশি বেশি বরাদ্দের বিরুদ্ধে নই। তবে আমার কথা হলো- এ ব্যাপারে কোনো লুকোচুরি থাকা উচিত নয়।"
ভবিষ্যতে অগণতান্ত্রিক কোনো সরকার যেন দেশের ক্ষমতায় না আসতে পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন তিনি।
বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবের সমর্থন করে জলিল বলেন, "এটি করা না হলে কালোটাকার মালিকরা এই অর্থ জনগণের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করবেন।"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম