দেশে এসেছি কয়েকদিন হলো, বিশেষ জরুরী কাজে। আসলে আব্বা আম্মার শরীর টা ভাল না..খুব দেখতে চাইছিল মনটা! তাই এই করোনার ঝুকির মাঝেও হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে চলে আসলাম..কত যে ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হল, আরকি বলব! এই করোনা টেস্ট করানো, নির্দিস্ট সময়ের মধ্যে নেগেটিভ রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা, আবার শেষ মুহুর্তে খারাপ ওয়েদারের কারনে ফ্লাইট ক্যানসেল হয়ে পরেরদিন ফ্লাইট ধরা, কত কি! ছেলে আর তার বাবা কে রেখে মা, মেয়ে আমরা চলে আসলাম দেশে..আবার আসার পর থেকে সারাক্ষন মাস্ক পরে আছি, কারন আব্বা আম্মার বয়স হয়েছে, ওনারা বেশী ভালনেরাবল, তাই!..দেশে এসে চার দেয়ালে বন্দী হয়ে আছি..তবুও ভাল লাগছে আপনজনদের কাছে পেয়ে! মাঝে মাঝে ৯ তলা এপার্টমেন্টের দক্ষিনমুখী হাফ-মুন শেইপ বারান্দায় দাড়িয়ে সামনের ঘন সবুজে ভরা রমনা পার্ক দেখতে ভালই লাগে, কিন্তু আব্বা-আম্মার দিকে তকালে বুকটা টন টন করে ওঠে! এত খারাপ তাদের দুজনের শরীর, আর কি বলব!..আর ভাল লাগেনা আমেরিকায় পরে থাকতে! কিন্তু ছেলে আমার মাত্র ইউনিভারসিটি শুরু করল,... কিভাবে ওদের রেখে আসি একা?..আসলে এটা একটা বিশাল মানসিক পরীক্ষা! ভাবছি, মাঝে মাঝেই চলে আসব, আমাদের দেখে ওনারা কি যে খুশি! আববা কিছুই নাকি খেতে চাইতনা, আমি ওনার জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ Ensure নিয়ে আসলাম, ওটা আমি অনেক বলার পরে খাচ্ছে একটু একটু..দেখে খুব শান্তি লাগছে! আজ দুপুরে বারান্দার রোদে বসে আম্মা আমার মেয়ের গান শুনলেন একটার পর একটা---আহা এভাবে যদি অনেকদিন থাকতে পারতাম!
ছেলের জন্য মনটা খুব খারাপ লাগছে..সকালে ওর সাথে কথা হল, বলল নি্উ ইয়রকে নাকি অনেক ঠান্ডা পড়েছে। কিছুদিন আগে ওর ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পড়ছিল (ফাঁকিবাজ বলে আমি একটু পাহাড়া দিচ্ছিলাম!) বাসায় এসে, এই ফাকে দ্রুত ওর একটা স্কেচ করেছিলাম ৫/৬ মিনিটের মধ্যে। আঁকা শেষ হলে ওকে দেখালাম, মুচকি হেসে বলল--" ওয়াও আমমু, ইটস আ্যমেইজিং!"
ছবি টা শেয়ার করলাম (মাঝে মাঝে মনে হয়, এখনও বোধহয় আগের মত আঁকতে পারি কিছুটা!
ছবিটা সোজা করতে পারলাম না!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫০