মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কূটকৌশল ইতিহাসে কুপরিচিত। নিজের ভাইবেরাদর এমনকি নিজ ছেলের সাথেও কূটকৌশল প্রয়োগে পেছপা হননি তিনি। ছেলে আকবরকে প্রথমে রাজপুত দমনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন আওরঙ্গজেব। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও আকবর সে রকম সুবিধা করতে না পারায় তাকে হটিয়ে সম্রাট অপর ছেলে আজমকে দায়িত্ব দেন। এই অপমানের বদলা এবং সেইসাথে সিংহাসনের লোভে আকবর রাজপুতদের সাথে মিলে সম্রাটের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। আর তখনি শুরু হয় আওরঙ্গজেবের কৌশলী খেলা। তিনি আকবরকে উদ্দেশ্য করে একটা জাল চিঠির মুসাবিদা করেন। যেখানে লেখা ছিলো- ‘‘পুত্র আকবর, তুমি রাজপুতদিগকে বিশ্বাস করাইয়াছ যে, তুমি পিতার বিদ্রোহী, যুদ্ধ আরম্ভ হইলেই তুমি রাজপুতদিগকে আক্রমণ করিবে, ইত্যাদি ইত্যাদি’’। এরপর চিঠিটি কৌশলে রাজপুত শিবিরের হস্তগত করানো হয়। রাজপুত যোদ্ধারা এই চিঠি দেখে একেবারেই বিভ্রান্ত হয়ে গেলো এবং স্বাভাবিকভাবেই আকবরের পক্ষ ত্যাগ করলো। ওই এক চিঠিতেই আকবরের বিদ্রোহ শেষ, জান বাঁচাতে দাক্ষিনাত্যে পলায়ন!
আওরঙ্গজেবের আরো একটা বহুল ব্যবহৃত কৌশল ছিলো প্রতিদ্বন্দীর নিকট আত্নীয়-স্বজনকে আটকে রেখে সন্ধির শর্ত পালনে বাধ্য করা। আকবরকে আশ্রয়দেয়া মারাঠারাজ শম্ভূজীকে হত্যার পর তার স্ত্রী যেসুবাই ও শিশুপুত্র সাহু-কে দীর্ঘদিন আটকে রাখেন তিনি। বলা যায়, মুঘল প্রাসাদেই প্রতিপালিত এবং বড় হন সাহু। এদিকে সাহুর অবর্তমানে ক্ষমতা চলে যায় তার চাচা রাজারামের কাছে। আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর ছেলে আজম মারাঠাদের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে বিরোধ তৈরীর জন্য আঠারো বছর ধরে আটকে রাখা সাহুকে ছেড়ে দেয়। সিম্পল ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসি। কিন্তু সাহু যেন মোগলদের শেখানো কথামতো কাজ করে সেটা নিশ্চিত করতে সাহুর মা-কে আটকে রাখা হয় আরো দশ বছর।
মোগলাই কৌশল আর কাকে বলে!
বাই দ্য ওয়ে, পত্রিকায় দেখলাম, বিভিন্ন অভিযোগের প্রমাণ দেখার পর অন্য বিচারপতিরা পক্ষত্যাগ করার প্রেক্ষাপটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান বিচারপতি। সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর যাওয়ার কথা থাকলেও বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে বাধার কারণে তিনি যেতে পারেননি। অনেক অনুরোধ জানালেও তাকে ছাড়া হয়নি, তা কী কারণে জানেন নাকি কেউ?
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৬