একদিন বিকেলে বাড়ির সামনে ছোট খোলা জায়গাটিতে বাচ্চা মেয়েটা খুব বুদবুদ বানানোর খেলায় মেতেছিলো। গরমকাল শুরু হয়ে গেলো এসব নানান খেলাধুলাতে ব্যস্ত সবাই। কিন্তু সেদিন যেনো মেয়েটার বুদবুদ গুলো হচ্ছিলোই না। নাকি সাবান শ্যাম্পু ভালো করে মেশাতে পারে নি কে জানে। সাইকেল চালাতে গিয়ে গতদিন পা টা না ছড়ে গেলে তো আজ আর বাসার সামনে এই খেলা খেলতে হতো না তার। দিব্যি এলাকা দাপিয়ে বেড়াতে পারতো সে। তবে মা এর তীব্র নিষেধাজ্ঞা পার হয়ে যাবার সাহস এখনো তার হয়নি। বুদবুদ গুলো বার বার ফেটে চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছিলো। অবশেষে কি করে জানি একটা বুদবুদ বেশ ফুলে ফেঁপে বড় হয়ে ভাসতে লাগলো। ভাসতে ভাসতে বুদবুদটি অনেক উপরে উঠে গেলো। বুদবুদটি ও চোখ মেলে তাঁকালো চারদিকে। পৃথিবীটা বড় সুন্দর। সূর্যের হালকা আলোতে তার গা জুড়ে রঙ্গধনু খেলা করতে লাগলো যেনো। মেয়েটি নীচ থেকে হাততালি দিতে লাগলো বার বার। পাশের পাঁচিলে মেনি বেড়ালটা তার সামনের পা বাড়িয়ে যেনো বুদবুদটি ধরতে গেলো কিন্তু কি করে যেনো একটু হালকা বাতাসে সে আরো উপরে উড়ে গেলো। বিড়ালটার উপর রেগে মেয়েটি একটু সাবান পানি ছুড়ে মারলো তার দিকে, একটা বিশ্রী ম্যাও আওয়াজ করে পালালো বেড়ালটা। বুদবুদটা পেছন ফিরে তাঁকিয়ে দেখলো তার মতো দেখতে আরো কয়জন ছুটে আসছে। কয় সেকেন্ডের বড় বুদবুদটা সবাইকে যেনো একটু উপদেশ দিতে চাইলো। একটু হলেও তো বেশ দেখেছে সে পৃথিবী সম্পর্কে। পৃথিবীর বাতাস নিয়ে তো ছোট একটা লেকচার ও দিয়ে দিতে পারবে! বা বলতে পারবে পাশের পাঁচিলের বেড়ালটা থেকে সাবধানে থেকো ভাই। এবার সে আবার সামনে মনোযোগ দিলো। নীচের মেয়েটিকে বেশ ছোট মনে হচ্ছে, রাস্তার ওপাড়ের গাছ পেড়িয়ে দূরের রূপালী নদী দেখা যাচ্ছে। আকাশ জূড়ে সাদা সাদা মেঘ আর সে যেনো উড়ে বেড়ানো ক্ষুদ্র রঙ্গধনু। হঠাত বুঝতে পারলো আর বেশি সময় নেই তার। বহুকাল যেনো সে উড়ে চলেছে এই পৃথিবীতে। ফুস করে যেনো মিলিয়ে গেলো সে চারদিকে আর ভাবতে লাগলো জীবনটা বড় সুন্দর ছিলো বৈকি!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:১৬