somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

:: হৃদয় জুড়ে সে একজনা - মিলন মেহ্দী

২৫ শে আগস্ট, ২০০৭ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বিকেল বেলা একাকী পুকুর পাড়ে বসে ভাবছি, গতকালের কথা। কি বিপদেই না পড়তাম। কত লজ্জাইনা পেতাম। আমার গন্তব্যের অর্ধেকের বেশি পথ এসে গেছি। সুপারভাইজারকে ভাড়া দিতে গিয়েই দেখি মানিব্যাগ, সংগে পরিচয় পত্র কোনটাই নেই। সুপারভাইজারকে কি বলব? চিন্তায় আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। বললাম: ভাই একটু পরে দিচ্ছি। এরি মধ্যে চেক পোস্ট এসে গেল। গাড়ি থামলে সুপারভাইজারকে নীচে ডেকে এনে বিস্তারিত টাকার কথা বললাম। বললাম: ভাই আমার ঘড়িটা কিনুন।
কত দিতে হবে?
দেখুন আমার চারশত সত্তর টাকা দিয়ে কেনা। আপনার বিবেকে যত টাকা মনে করেন, তত টাকা দিন।
সে আমার দুর্বলতা বুঝে বলল: দুইশত টাকা।
আমি কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে দিয়ে দিলাম। পঁচিশ টাকা গাড়ী ভাড়া কেটে রেখে বাকী একশত পঁচাত্তর টাকা ফেরত দিল। কিছুণ পরেই এসে গেলাম আমার গন্তব্য স্থানে। গাড়ী হতে নেমে চিন্তিত অবস্থায় একটা রিক্সা নিয়ে উঠবো, এমন সময় সুপারভাইজার আমাকে ডাকলো। বললাম: কিছু বলবেন কি?
- ভাই আমার অন্যায় হবে দুর্বলতা বুঝে আপনার ঘড়িটা নেয়া আপনি নিয়ে নিন।
- কিন্তু আমিতো আপনাকে টাকা দিতে পারবোনা।
- কোন কিন্তু নয়, নিতে হবে, ঋণ থাকতে চান না, বেশ মানি অর্ডার করে টাকা পাঠাবেন।
সুপারভাইজারের অনুরোধে বাধ্য হয়ে আমাকে নিতে হলো। সঙ্গে ঠিকানাও নিলাম। চিন্তা হচ্ছিল মানুষের মন আল্লাহ হুহূর্তের মধ্যে এত পরিবর্তন করে দেয়। আমি ভাবছি আর আশ্চার্য হয়ে যাচ্ছি।
এমনি জল্পনা-কল্পনার মাঝে দেখি সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে। কালকেই ওনার টাকাটা পোস্ট করতে হবে। না উঠি সন্ধ্যা হয়ে গেল। বাড়ীতে বকবে। উঠতে হঠাৎ করে পুকুরের দিকে নজর পড়তেই দেখি একটি মেয়ের ছবি। আমি এক দৃষ্টিতে পানিতে ঐ ছবির দিকে তাকিয়ে রইলাম। ভাবছি এই মেয়েটা আমার পেছনে দাঁড়িয়ে। মাঝে মাঝে নিজে নিজে গতকালের ঐ চিন্তার কারণে হেসেছি। আবার চিন্তাবোধও করেছি। মাঝে মধ্যে কথাগুলো আপনা-আপনি আওয়াজও হয়েছে। নিশ্চয় পিছে দাঁড়িয়ে যখন এসব দৃশ্য সে দেখেছে। এখন সেতো আমাকে পাগল ছাড়া আর কিছু বলবেনা। আমার চিন্তা হলো, সে মনে হয় পরিচিতা। নইলে কেনই বা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে পেছনে। আরো চিন্তিত হচ্ছি যে আমরা মাত্র দু’জন। আর কেউ নেই এখানে। তাহলে নিশ্চয়ই পরিচিতা হবে। হয়ত সে জন্যই দাঁড়িয়ে আছে। পানিতে এক দৃষ্টিতে চাচ্ছি। কিন্তু সুর্যের লাভা ও অল্প অল্প বাতাসে পানি নড়াতে ছায়াটা পরিস্কার ভাবে দেখতে পাচ্ছিনা। তবুও যতটুকু দেখা যাচ্ছে তাতে কোন ভাবেই পরিচিতা লাগছেনা। এমন সুন্দর মুখ স্বপ্নেও কোনদিন দেখিনি। না, এটা আমি স্বপ্নে দেখছিনাতো না বসে কেউ স্বপ্নে দেখেনা। তাহলে কি? না বাস্তব। না আমি ... হঠাৎ পিছন থেকে আওয়াজ এলো- আচ্ছালামু আলাইকুম। আমি দুঃখিত।
পিছনে ফিরে তার মুখের দিকে চেয়ে তার সুরম্য তনু দেখে আমি বিশ্বাস অবিশ্বাসের কুল পাচ্ছিনা। যে এটা স্বপ্ন না বাস্তব। ণিকের জন্য আমি চেতনা বোধ হারিয়ে ফেললাম হঠাৎ করে আমার চেতনা ফিরে পেলাম তার কাশি দেওয়াতে।
- ও হ্যাঁ আপনি আমাকে কিছু বললেন নাকি?
- ছালাম দিয়েছি
- ওয়ালাইকুচ্ছালাম।
- আমাকে আপনি মা করবেন। মৌখিক ভাবে নয় অন্তর দিয়ে।
- আরে আপনিতো আমার কাছে কোন অন্যায় করেননি? সুতরাং মতার প্রশ্ন উঠে না।
- দেখুন আপনার যদি পবিত্র আত্মা থাকে তাহলে কোন অন্যায় করেনি, আবার অনেকটা করেও ফেলেছি। আর এখন করছি। করবো তাই পূর্বে মা চেয়ে নিলাম।
- আপনি যে কি বলছেন আমি কিছুই বুঝছিনা।
- আপনি তো জানেন ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বেগানা কোন যুবক-যুবতি কথা বলা নিষেধ। এটা অন্যায় পাপ আর তাছাড়া আমরা দুজনে তাতে আরো নির্জনে, আপনি পবিত্র আত্মা নিয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে যদি ভালবাসেন তাহলে দুজনে কথা বলা সম্ভব।
আমি বুঝেও অবুঝের মত কথা বললাম: আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসা আবার তাতে পবিত্র আত্মা দিয়ে। কি যেন বলছেন আমি কিছুই বুঝছিনা। কেন এমনিকি ভালবাসা যায় না?
- কেন যাবে না? তাতে পাপ হয়। আল্লাহর ওয়াস্তে ভালবাসলে সওয়াব হয়। পার্থিব সাহায্য ছাড়া দুনিয়াবী সুখ শান্তির লোভ না করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালবাসা, প্রকৃত ভালবাসা, আর তাতে দু’জগতে মুক্তি পাওয়া যায়। রাসূল পাক (সাৎ) এরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর বন্ধুত্ব স্থাপন করা, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালবাসা, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিদ্বেষ পোষণ করা, তাহলে তাদের মর্যাদা অনেক উর্ধে আর আপনি এবিষয়ে ভালভাবেই জানেন। এমন ভাবে কথাবার্তা বলছে, মনে হচ্ছে সে জনম জনমের পরিচয়।
আমি বললাম: আমি জানি কিনা? তা আপনি কিভাবে জানেন?
- কেন আপনি মাদ্রাসায় পড়েন না? তাহলে আর যেন ইসলামের কোন বিষয় বলতে না হয়। আমাকে আর লজ্জিত নীচু না হতে হয়। তার এমন ভাবে কথা বলায় আমি ভুলে গেছি যে, সে আমার এই মাত্র পরিচিত মেয়ে।
আমি বললাম: আচ্ছা তা না হয় আর বলতে হবে না। কিন্তু বলুনতো আপনি আমার পরিচয় কিভাবে জানলেন?
- বারে কেন জানবোনা? তবে একটাশর্তে
- শর্তটা কি বলুন।
- বলুন তো নাবলে বলো তো বলেন, তাহলে বলবো।
- আচ্ছা জানতে যখন হবে তখন বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে। বলো মেম সাহেব।
- মেম সাহেব বললেন কেন?
- মা করে দাও। ভুল হয়ে গেছে।
- মা কিসের আপনিতো ঠিকই বলছেন, একদিন মেম সাহেব হতে হবে, হবোও।
- বাহ্। তোমাকে দেখছি মেম...

- আপনাকে বলতে হবেনা, বলুন আপনার ঘড়িটার ব্যাপারে।
তোমাকে বলছি আমার পরিচয় কিভাবে জানো? অথচ তুমি উল্টা আমার ঘড়ির ব্যাপারে প্রশ্ন করছো?
- ওঠাই তো আপনার পরিচয়। বলুন তারপরে বলছি।
- হ্যাঁ, সেদনি গাড়ীতে বিপদে পড়ে হাতের ঘড়িটা টাকার বিনিময়ে দিতে হয়েছিল। কিন্তু পরণে তিনি আমাকে দিয়ে দেন। আশ্চার্য হচ্ছি যে আল্লাহ পাথর সম মনকে কোমল হৃদয়ের করেছিল। এতো সুহ্নদ ব্যক্তি পৃথিবীতে এখনো আছে এটা ছিল আমার কল্পনাতীত। আমি আল্লাহর কাছে তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি। ওর টাকা আগামী কালই পাঠায়ে দিব।

- না আপনাকে দিতে হবে না।
- আরে দিতে হবে না মানে, যে আমাকে আত্ম বিশ্বাস করে এত উপকার করলো তাকে আমি...। আমাকে এত নিচু অকৃতজ্ঞ হতে বলছো?
সে সহাস্যে বললো: তাঁর টাকা যে পেয়ে গেছে। আর আপনি যাকে মঙ্গল কামনা করছেন। সেই কি এই দোয়ার প্রাপ্য?
- অবশ্যই কেননা সে আমাকে উপকার করেছে।
- কিন্তু সে যে এ্যাকসিডেন্ট করেছে? তবে বাহ্যিক ভাবে নয়...। যাক বলতে গিয়ে অনেক আবোল-তাবোল বলে ফেললাম। এই নিন আপনার ম্যানিব্যাগ, পরিচয়পত্র।
- আশ্চর্য তুমি তাহলে পেয়েছিলে? কেন তাহলে সেদিন এতকষ্ট দিলে?
- তার জন্য মাপ্রার্থী। যে অন্যকে মা করে আল্লাহ তাকে মা করে। তা হলে বুঝে নিন এসব কেন? কি জন্য? দেখুন আপনার কিছু নষ্ট হয়েছে কিনা? আর ওনাকে টাকাটা দিতে হবে না। অবশ্য আপনি ঋনী নন। আপনার মহত্বের জন্য আপনার টাকা দিয়েই পরিশোধ করেছি।
- তাহলে তুমি...।
- যাক কিছু বলতে হবে না। বাড়ীতে বকবে। অবশ্য ভাবি না। তিনি জানে। ঐ যে মাগরিবের আজান দিচ্ছে নামাজ পড়তে হবে। আপনি পড়বেন কিন্তু।
প্রায় এক সপ্তাহ হলো। তার ভাবনায় সর্বণ। সে আমার সদা স্বরণে নয়নে। সে আমার নিশ্বাসে। ঘুমালে যেমন কিছু বলতে পারেনা। কিন্তু নিঃশ্বাস থেকে যায়। আমিও অনুরূপ পরিবারের সাথে কথা বার্তা বা খুব বেশী কাজের চাপে থাকলেও সে হৃদয়ের মধ্যে স্পন্দিত হয়। আর তার কথা চিন্তা ভাবনা করতে আমি কেমন একটা অজানা সুখ অনুভব করি। সে আমার হৃদয়ে সুখেরি অসুখ দিয়ে নামাজ পড়তে বলে চলে গেল। ঠিকানাটাও নেওয়ার সময় দিল না। না তার জন্যে সকাল থেকে কিছু ভাল লাগছেনা।
দেখি, ঐ মাঠে গিয়ে আজকে বসি। সে হয়ত আসতে পারে। কেননা সেদিন ওখানে এসে ছিল বোরকা ছাড়া নিশ্চয় বাড়ী নিকটে হবে। এমন সব চিন্তা ভাবনা বসে করছিলাম। হঠাৎ করে আম্মা ডাকলো, মিরাজী পান্থ বসে কি হচ্ছে। নাস্তা করবিনা তোর জন্য দেখ ওরা বসে আছে।
নাস্তা করতে মা-বোন কথা বলছিল। আমাকে নীরব দেখে আম্মু বলল: তোর মন খারাপ কেন? কিছু হয়েছে নাকি? আজ কয়েক দিন ধরে তোকে কেমন যেন অন্যমনষ্ক দেখছি।
আমি কোন জবাব দিতে পারলাম না। বোনটা বলে উঠলো, দেখ ভাইয়া কোন এ্যাকসিডেন্ট করেছে কিনা? হয়ত তার জন্য ভাবছে। মা নিঝুম কে মুখ সামলিয়ে কথা বলতে বলো।
- সত্যি কথা বললে, মুখ সামলাও। বলবো...
নিঝুম... মার দেবো কিন্তু।
তোরা দুটো ভাই-বোন তোদের মিল নেই খেতেও দিলিনা। বলে মা চলে যাচিছল। আমরা দু-ভাই বোনে হাত ধরে বসিয়ে বললাম: আমরা গন্ডগোল করবোনা। আমাদের মা করো।
- পাগল আমার, নে নাস্তা করে নে। অনেক বথাবার্তা হচ্ছিল। কিন্তু তার কথা ভুলতে পারেনি। স্মরণে আছে সে। মাকে বললাম: মা আমাকে টাকা দাও। আমি চলে যাবো। টিকেট করে আনি।
- তোর আব্বার সাথে পরামর্শ না করে টিকিট করবি? দু একদিন পরে যা।
- যাবে না। বললাম তো মা ও ভাবীর চিন্তায় আমাদের সাথে থাকতে চায় না।
- আবার শুরু করলি নিঝুম। না মা আমার মাদ্রাসা দু’তিন দিন পর খুলবে। আর তাছাড়া বই বাড়ীতে আনেনি।
- ঠিক আছে যা তবে তোর আব্বাকে বলে যাস।
- টাকা দাও আমি আব্বাকে মাদ্রাসা হতে বলে যাবো।
একটু পরে যাস। আমি রান্না করে নেই। আজকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)। তোর আব্বা সেই কোন ভোরে তাড়াতাড়ি নাস্তা করে গেছে। তোরা দুজন দাবা নয় কেরাম বোর্ড খেল। আমি ততণে রান্না করে দেই।
আব্বাকে ভাত দিয়ে অনুমতি নিয়ে টিকেট করার জন্য বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য রিক্সায় চাপলাম। রিক্সা থেকে দেখলাম সেই পুকুর ধারের মাঠটিতে একটা সেমিনার। অনেক লোক জনের সমাগম।
- এই রিক্সা ওয়ালা ওখানে কি হচ্ছে রে?
- আজ না কি ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) তাই হচ্ছে, ভাবলাম ওখানেই ও থাকতে পারে। এই রিক্সা ওয়ালা ওখানে নিয়ে যাও। নেমে রিক্সা ওয়ালাকে ভাড়া মিটিয়ে দিলাম।
ভাবলাম ঐ স্মৃতিময় জায়গায় কিছুণ বসি। সন্ধ্যায় যাওয়ার সময় টিকিট করবো। ভাবছিলাম সেদিনের কথা সামান্য ভুলের জন্য আজ আমাকে তার পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে। যতি ঠিকানাটা সে দিন নিতে পারতাম তবে যেখানেই থাকুক না কেন? তার কাছেই যেতাম। এতো মানুষের মাঝে সেকি আসবে। সে যেভাবে ইসলামী কথা-বার্তা বললো। আর সেদিন গাড়িতে বোরকা পরা ছিল সে লজ্জাবর্তী কন্যা অসবে না হয়তো। তবুও স্বল্প সময় হলেও বসি। আসলেও আসতে পারে। মনে হয় বাড়ী নিকটে। কেননা কেদিন এখানে বোরকা ছাড়া এসেছিল। এমনি বিভিন্ন প্রকার প্রশ্ন ওঠা পড়া করছিল। আরো বেশী ভাবনা হচিছল তার সংম্পর্শে থাকলে মনে হয় আমার জীবনটা আরো উন্নত হতো। প্রত্যেক কার্যকলাপে তার মত ইসলামী বিধি বিধান প্রয়োগ করতে পারতাম। কারণ তার কথা অনুযায়ী মনে হলে সে খুব ধার্মিক মেয়ে। এরমধ্যে অনেক সময় চলে গেল নিজের অজান্তে ভাবতে ভাবতে। উঠে চলে যাবো ঠিক সেই মুহূর্তে সেমিনারে দেখলাম একটি বোরকা পরা মেয়ে। একজন কবিতা আবৃত্তি করছে। মনটা চমকে উঠলো বোরকা পরা দেখে। ঐ মেয়েটার আবৃত্তি শেষ হলেই ঘোষণা করলো এবার সামছুন্নাহার সাঁচি একটা গজল গাচ্ছে। পরে তার নিজের লেখা কবিতা আবৃত্তি করবে। সে গজল শেষ করার পর নিজের লেখা সুন্দর একটা ছন্দ মিলিয়ে কবিতা পড়লো। তাতে মনে হলো এই সেই মেয়ে। হায় আল্লাহ। সেদিন যদি নামটাও জিজ্ঞাতাম তাহলে সন্দেহ মুক্ত হতাম। সত্যিকার তার কবিতাটা খুব সুন্দর ছিল। সে মুহূর্তে খাতা কলম কিংবা টেপ রেকডিং ছিলনা বলে লিখতে কিংবা রেকডিং করতে পারিনি। কবিতাটির ইঙ্গিত প্রবল ইচ্ছে হচ্ছে আমার তার সাথে দেখা করতে। কিন্তু কিভাবে করবো। মন মানছেনা। মন বলছে ঐ সে মেয়ে ঐ বোরকা যেন ডাকছে এই তোমার প্রিয়তমা। কিন্তু সে নিশ্চিত হব কিভাবে যে। সেই কিনা।
দেখা করার ছলে একটা কৌশল আটলাম। এতণে তারা সেমিনার হতে বের হয়ে সে সহ দুই বান্ধবী তিন জন মিলে রাস্তার পার্শ্ব দিয়ে হাটছিল। পেছন থেকে ডাকলাম এই যে ম্যাডামেরা শুনুন। তার বান্ধবীদ্বয় বললো, কি বলুন? বলতে যাবো অমনি আমাকে ছালাম দিয়ে বললো: আরে আপনি? কতো না সৌভাগ্য আমার সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ তায়ালার।
-এই তুই ওনাকে চিনিস নাকি?
-হ্যাঁ, চিনি আপনি আমাকে চিনছেন তা এখন দেখা করছেন কেন? সকাল থেকে দেখা করতে পারতেন?
বিশ্বাস করো। আমি তোমাকে চিনতে পারিনি।
-তা হলে এখন ডাকলেন যে।
-আসলে তুমি কিনা? এ সন্দেহে ছিলাম। তাছাড়া তোমার কবিতার ইঙ্গিত পেয়ে তবুও মান-সম্মানের ভয়ে ফন্দি এটে তোমার দেখা পেলাম।
-সে কি ফন্দি বলেন?
-না না ও কিছু না।
-আপনি আমার কাছে লুকাবেন, জানেননা সত্য বলা সাহসের পরিচয় আর মিথ্যা বলা মহাপাপ।
-আচ্ছা বলতে পারি একটা শর্তে।
সবাই বললো কি শর্তটা?
শুনে তোমরা আমার উপর অসস্তুষ্ট হতে পারবেনা। হলে আমি খুব দুঃখ পাবো।
-মোটেও না আমরা আপনার উপর অসন্তুষ্ট হবো এ প্রশ্ন উঠেনা। ওরা তিনজন বলল।
-তাহলে শুন তুমি কিনা? এ সন্দেহে ভাবলাম, তুমি না হয়ে যদি অন্য কেউ হয় তাহলে কি বলবো। বলার তো কিছু নেই। পথ চিনিনা, কোন ঠিকানা জিজ্ঞাসার। কিন্তু সে তো ট্রাফিক কিংবা পুরুষ মানুষ আছে। তখন বিপদে পড়বো। তাই একটা ভ্যানাটি ব্যাগ কিনলাম। যখন বলতো কি বলুন? তখন বলতাম একটা ভ্যানেটি ব্যাগ পেয়েছি আপনাদের কিনা? আর তুমিই যদি হও তাহলে তোমাকে উপহার দেবো।
ওরা সবাই হাসলো, আমিও না হেসে পারলাম না। পরণে তার দু বান্ধবী বললো: তোর বয়ফ্রেন্ডকে বল্না আমাদের কে নাস্তা করাতে। তোর বন্ধু হিসাবে আমার কি নাস্তা ও পাবো না।
-কেন পাবে না। চলো সাচি ওদেরকে নিয়ে হোটেলে ঢুকে পড়ে।
বারে আপনি আমার নাম জানলেন কি করে: -কেন জানবোনা? আমার প্রিয়তমার নাম। আর একটু পূর্বেই তো সবার সম্মুখে প্রিয়তমার নাম উচ্চাতি হলো জানো সাচি এ হৃদয়ে নারী জাতি যে মায়ের পরেই তোমার স্থান অন্য কারো নয়। এ হৃদয়ে তুমি আছো তুমিই থাকবে।
-চল্ নাজ মিলি মিরাজী পান্থের পকেটটা শূন্য করে দেই।
-বারে তুমি বা আমার নাম কি করে জানলে?
-কেন জানবো না? আপনি আমার সাথে দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা ছিলেন। আর সর্বণ এ হৃদয়ে আছেন আর মিরাজী পান্থ আপনার নাম জানবো না? কেন মনে পড়ছেনা? আপনার পরিচয় পত্রের কতা। সত্যিই আপনার পরিচয় পত্র আমার কাছে ছিল। কিন্তু ঠিকানা লিখে নেইনি। ভাবছি আমার কাছে আছে থাক। পরে পাঠিয়ে দেয়ার সময় লিখে রাখবো ডায়রীতে। কিন্তু সে দিন ভাবীর বাপের বাড়ীর ছাদ হতে হঠাৎ আপনাকে দেখে এটা নিয়ে এসেছিলাম। লিখে নেইনি।
ওর দুইবান্ধবী আশ্চর্য হয়ে বললো: তোদের পরিচয়, অথচ নাম পর্যন্ত জানতিস না?
সাচি বললো: আসলে আমাদের পরিচয়ের সাথে সাথেই মনে হয়েছিল বহু দিনের পরিচয়। তাই ঠিকানা নেয়ার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।
তার পরে চার জনই গেলাম হোটেলে। নাস্তা মুখে দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে সাচি বললো: দেখুন মি. মিরাজী পান্থ খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলতে হয়। কিন্তু আপনি....। অবশ্য আপনাকে শিা দিচিছনা। স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি মাত্র। আরো কিন্তু আর এক জায়গায় ভুল করছিলেন। আমাদের কে ডেকে ছিলেন কিন্তু সালাম দেননি। আপনিতো জানেন আগে ছালাম দিলে বেশী সওয়াব পাওয়া যায়।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে আমাদের কথা বার্তা হচ্ছিল। আমি সাচিকে বললাম: সাচি আমি চট্টগ্রামে যাবো। তাই টিকেট করতে এসেছি ঢাকা হয়ে তো যেতে হয়। বাংলাদেশ সরকার যতি সরাসিরি ট্রেনের ব্যবস্থা করতো তাহলে যাত্রীদের এতো কষ্ট করতে হতো না। তোমার ঠিকানা দাও তো, নইলে কখন তোমাকে হারিয়ে বসবো।
-বেশ তো আমরাও তো ঢাকায় যাবো। আপনি আমাদের গাড়ীতে টিকেট করুন। একসংগে ঢাকায় যাবো। এখন ঠিকানা নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। চলুন আমাদের গাড়ীতে টিকেট করে আনি। চলুন না?
-তুমি যখন বলছো, অবশ্যই করবো, আমার কথা রাখতে না পারলে যে আমার হৃদয়ে রক্ত ঝরবে।
আপনি ওরকম কথা আর বলবেন না। বলে যদি আপনার প্রিয়তমাকে লজ্জা দিতে চান ছোট করতে চান তাহলে বলুন।
ঠিক আছে আর বলবো না চলো।
মিরাজী পান্থ সাড়ে পাঁচ বেজে গেছে। আগে নামাজ পড়ে নাও ঐ মসজিদে গিয়ে তারপর টিকেট করতে যাবো।
আর তুমি বুঝে পড়বে না? বেশ ভালো, নিজের হাতে আলো অন্যকে দেখায়, নিজে দেখেনা। যেন অন্ধের হাতে বাতি।
-মিরাজী পান্থ কেন আমাকে ভুল বুঝছেন? আল্লাহ আমাদের নির্ধারিত কয়েক দিনের জন্য মাফ করে দিয়েছেন। জানেন না বুঝি?
আমি বুঝেও না বোঝার মত মুখ নিয়ে
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×