ভীনগ্রহের প্রানি আছে কি নেই এ নিয়ে মোটামটি সারা বিশ্ব দু'ভাগে বিভক্ত। কেউ বলে আছে আবার কেউ বলে নাই। যারা UFO তে বিশ্বাস করে তারা নির্দিধায় বলে যে আছে, আর যারা অস্বীকার করে তারা বলে যে এগুলা সব আর্মিদের গোপন কোন যান। এ নিয়ে তর্কের কোন শেষ নেই।
সর্বশেষ এই এলিয়েন নিয়ে আলোচনা করেছিলাম "চায়নায় পিরামিড এবং এলিয়েন" লেখায়। আজ আবার আলোচনা করব এই এলিয়েন নিয়ে। তবে আজকের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকবে এমন কিছু বস্তু যার কিছু কিছু মানুষের তৈরি আবার কিছু কিছু বস্তু যে কোথায় আর কিভাবে তৈরি করা হয়েছে তা আবিস্কার করাই সম্ভব হয়নি। আর এই বস্তু গুলি সুস্পষ্ট ভাবে প্রমান করে যে সত্যিই এলিয়েনদের অস্তিত্ব আছে। তাহলে চলুন আজ আপনাদের এমন ১০টি জিনিষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব যেগুলি সম্ভাব্য এলিয়েনদের জিনিষ।
১০) গিয়ারের ভাংগা অংশঃ
রাশিয়ার ভ্লাডিভস্টক এলাকার একজন সাধারন লোক প্রবল শীতের মধ্যে ঘর গরম রাখার জন্য তার বাড়িতে বানানো আগুনের চুল্লীতে কয়লা দেবার সময় গিয়ারের এই ভাংগা অংশ আবিস্কার করেন। এই ভাংগা অংশটুকু কয়লার মধ্যে বেশ ভাল মত গাঁথা ছিল আর রাশিয়ার এই অঞ্চলে এরকম ভাংগা অংশ খুঁজে পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু কি মনে করে আবিস্কারক এই ভাংগা অংশটুকু তার এক বিজ্ঞানী বন্ধুর কাছে নিয়ে যান পরীক্ষা করার জন্য। আর এখানেই ঘটে যায় ঘটনা। পরীক্ষা করে দেখা গেল গিয়ারের এই ভাংগা এই অংশটুকু ১০০% এলুমিনিয়ামের তৈরি, আরো পরীক্ষা করে জানা যায় এর বয়স প্রায় ৩০০ মিলিয়ন বছর। এখন প্রশ্ন আসতে পারে প্রকৃতিতে এরকম আঁকার হতেই পারে, আসলে আঁকারে না ঝামেলা বাঁধে এর বিশুদ্ধতা নিয়ে। এত বিশুদ্ধ এলুমিনিয়াম প্রকৃতিতে থাকা এক কথায় অসম্ভব। আর বয়স ৩০০ মিলিয়ন বছর, যেখানে মানুষ বিশুদ্ধ এলুমিনিয়াম এর ব্যাবহার শিখেছে ১৮২৫ সালে।
তাহলে কি এই বস্তু ভীনগ্রহের বিধ্বস্ত কোন উড়োজাহাজের ভাংগা অংশ? অনেকেই মনে করেন এটি আসলেই ভীনগ্রহের, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা চাচ্ছেন গিয়ারের এই ভাংগা অংশ নিয়ে আরো বেশি পরীক্ষা চালাতে, তারা এখনই এটিকে এলিয়েনদের বস্তু বলে আক্ষা দিতে প্রস্তুত না।
০৯) গুয়াটেমালার পাথরের মাথাঃ
১৯৩০ সালে প্রত্নতাত্ত্বিকবিদেরা গুয়াটেমালার জংগলে খুঁজে পান বিশাল আকৃতির পাথরের তৈরি মাথা। মাথাটির বৈশিষ্ট্য একে একটু আলাদা করেছে, এই মাথার আকৃটি এখানে খুঁজে পাওয়া মায়া সভ্যতার আদিবাসি বা অন্য কোন আদিবাসিদের মত না। এই মূর্তির মাথা পিছন দিকে অনেকটা লম্বাটে। যা সাধারনত মানুষের হয় না। অনেকেই ধারনা করেন যে হয়ত সুদূর অতীতে এখানে গড়ে উঠেছিল বিশাল কোন ভীনগ্রহের অধিবাসীদের সভ্যতা আর তার প্ররিক্রমায় তৈরি হয়েছে এই মূর্তি। সে সময় অনেকেই ধারনা করেছিল হয়ত এই মাথা বিশাল বড় কোন মূর্তির একটা অংশ মাত্র, কিন্তু পরে দেখা যায় যেই এটি বিশাল পাথর খোদাই করে বানানো একটা মাথা মাত্র। তৎকালীন সময়ে প্রযুক্তির এতটা উতকর্ষ না হবার কারনে সেরকম কোন পরীক্ষা চালানো সম্ভব হয়নি, আর বর্তমানেও তা সম্ভবন না কেননা এটি আবিস্কারের কয়েক দিন পরেই গুয়াটেমালায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, এসময় বিদ্রোহীরা এই মাথায় নিশানা অনুশীলন করে। ফলে ধ্বংস হয়ে যায় এই পাথরের মাথা।
০৮) প্রাক-ঐতিহাসিক প্লাগঃ
১৯৯৮ সালে জন জে উইলিয়াম এক পাহাড় চড়ার সময় দেখতে পান কাদার মধ্যে গাঁথা এক চকচকে বস্তু। সে বস্তুটি দেখার জন্য কাঁদা মাটি সরিয়ে বস্তুটিকে উদ্ধার করার পরে দেখতে পান যে একটা পাথরের মধ্যে লাগানো এক প্লাগ। উইলিয়াম যে কিনা আবার একজন ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার বলেন যে, ইলেক্ট্রিক এই প্লাগ কোন আঠা বা অন্য কিছুর মাধ্যমে এই গ্রানাইড পাথরের মধ্যে লাগানো হয় নাই বরং এই পাথর তৈরি হয়েছে এই প্লাগকে ঘিরে। অনেকেরই ধারনা এটা উইলিয়ামেরই বানানো কিন্তু উইলিয়াম এই পাথর ভাংগার অনুপতি কাউকেই দেননি, তবে কেউ যদি পাথর ভেংগের পরীক্ষা করতে চান তাহলে তাকে এই পাথরটি কিনে নিতে হবে। আর পাথরটি কিনতে উইলিয়ামকে দিতে হবে মাত্র $৫০০,০০০ মার্কিন ডলার। অবশ্য তার এই দাম চাওয়ার পিছে যতার্থ কারন আছে। কেননা এই পাথরের বয়স আনুমানিক ১০০,০০০ বছর। অর্থাৎ যদি এই পাথরের বয়স নির্ধারনের পরীক্ষায় ভুল না হয়ে থাকে তাহলে এই প্লাগ কোন ভাবেই মানুষের তৈরি করা না। অর্থাৎ তা সম্ভাব্য ভীনগ্রহের কোন প্রানীদের তৈরি। যদিও তিনি এই পাথর ভাংগার অনুমতি কাউকেই দেননি কিন্তু এই পাথরের উপর যে কেউ চাইলেই পরীক্ষা চালাতে পারবে তবে তার জন্য উইলিয়ামের রয়েছে তিনটি শর্ত,
০১) পরীক্ষার সময় উইলিয়াম উপস্থিত থাকবেন।
০২) পাথরের কেউ কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
০৩) এই সব পরীক্ষা চালাবার কোন খরচ উইলিয়াম দিবে না।
০৭) প্রাক-ঐতিহাসিক উড়োজাহাজঃ
কলম্বিয়ার অতীতহাস বেশ সমৃদ্ধ আর রহস্যময়। আর এই রহস্যময় ইতিহাসের সময় প্ররিক্রমায় রক্ষা পেয়ে যাওয়া এমন অনেক জিনিষ আছে যা আজও সকলকে হতবাক করে চলেছে। এমন একটি জিনিষ হচ্ছে সোনার তৈরি এই উড়োজাহাজ। প্রথমে যখন এটি আবিস্কার হয়েছিল তখন অনেকেই ভেবেছিল এটি কোন প্রানীর প্রতিলিপি মাত্র, কিন্তু সময়ের বিবর্তনে যখন সকলে বর্তমান সময়ের যুদ্ধ যান গুলিকে দেখল তখন তারা উপলব্দি করল যে এটি বর্তমান সময়ের যুদ্ধ বিমানের মত দেখতে। তখন তারা একটি পরীক্ষা চালালো, তারা ঠিক এর একটি প্রলিপি বানালো আর তাতে লাগিয়ে দিলো প্রপেলার। অবাক করার বিষয় হচ্ছে প্রপেলার লাগানো এই উড়োজাহাজটি অনায়াসে উড়লো। তখন থেকেই ধারনা করা হয়, হয়ত সূদুর অতীতে কোন এক সময় এখানকার মানুষ ভীনগ্রহের মানুষের সাক্ষাত পেয়েছিল যারা এরকম উড়োজাহাজে উড়ে বেড়াতো আর তা স্বরনীয় করে রাখতেই তারা এই উড়োজাহাজটি বানায়।
তবে অনেক বিষেজ্ঞদের মতে, এটি মূলত উড়ন্ত মাছ বা মৌমাছি বা অন্যকোন পাখাওয়ালা প্রানির প্রতিলিপি মাত্র।
০৬) টিকটিকি মানবঃ
ইরাকের আল উবাইদ এলাকা প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ-দের কাছে যেন এক সোনার খনি। এখানে সন্ধান পাওয়া প্রাক ঐতিহাসিক এমন অনেক জিনিষ আছে যা তাদের শুধু অবাক করেনি হতবাকও করেছে। এখানে যে সকল জিনিষ পাওয়া যায় তার বেশির ভাগ জিনিষই ৫৯০০ থেকে ৪০০০ খ্রীষ্টপূর্ব আমলের। এখানে যতগুলি মূর্তি পাওয়া গেছে তার মধ্যে সব থেকে অবাক করেছে খুঁজে পাওয়া কয়েকটি মূর্তি যেগুলির চেহারা অনেকটাই টিকটিকির মত। তবে এগুলাকে তৎকালীন সময়ের মানুষেরা ঈশ্বর বলে পুজা করত না মিশরীয়দের মত। এই মূর্তি গুলি দেখলে মনে হবে যেন এগুলি কোন টিকটিকি রূপি মানুষের মূর্তি আর প্রতিটি মূর্তি আঁকার এবং আকৃতিতে একে অপরের থেকে ভিন্ন। অনেকের ধারনা এই মূর্তি গুলি আসলে ভীনগ্রহের বাসিদের আদলে বানানো। অতীতে তারা অনেক বার যোগাযোগ স্থাপন করেছে এই এলাকার লোকদের সাথে, আর তাদের দেখেই বানানো হয়েছে এই মূর্তি গুলি। তবে এই মূর্তি গুলির আসল রহস্য এখনও আলো ছায়ার আধারে ঘেরা।
বিঃদ্রঃ লেখাটি সম্পূর্ন ভাবে বুঝতে, লেখার মধ্যে দেওয়া লিংক গুলির লেখা গুলি অবশ্যই পড়বেন। কেননা আমি অনেক কিছু বাদ দিয়ে লিখেছি যা না পড়লে লেখাটা সম্পূর্ন বোঝা বেশ কঠিন।
লেখাটি প্রথম লেখেছিঃ সোমবার, ৫ মে, ২০১৪