পল অ্যাসাঞ্জ সম্ভবত দুনিয়ার প্রথম কোন রেপিষ্ট যাকে ধরবার জন্য ইন্টারপোল ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। যারা বিষয়টি জানেন না তারা হয়ত ভাবতে পারেন সেকি কোন সাইকো সিরিয়াল রেপিস্ট নাকী এমন বড় কাউকে সে ব্যবহার করেছে তার গোপন ইচ্ছা চরিতার্থ করবার জন্য। আপনারা একদম যে ভুল তা কিন্তু নয়। আসলেই সে বিবস্র করে দিয়েছে ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’কে যা কিনা আমেরিকার অহংকার। শুধু কি তাই আরো কতজনের প্রতি সে তার লোলুপ দৃষ্টি ফেলেছে, সেজন্যই বিশ্বজুড়ে রেড এলার্ট চালু হয়েছিল তাকে যে কোন ভাবে হোক বেশী কিছু করবার আগে ধরবার জন্য।
তিনি ধরা দিয়েছেন। তার যদি এখানেই সমাপ্তি হয়, তারপরেও সেটা ভালো। পৃথিবীর সব রথিমহারথিরা অন্তত কিছু দিনের জন্য হলেও তাদের পর-বিনাশকারী কার্যকলাপে সেভাবে মননিবেশ করতে পারেন নি। যারা কিনা প্রতিনিয়ত মত্ত থাকে একে অন্যকে বিনাশ করবার খেলায়, তারাই সব একহয়ে লেগেছিল পল অ্যাসাঞ্জ কে ধরবার জন্য। কারন তারা বুঝেছিল, এই ব্যক্তি শুধুমাত্র ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’কে বিবস্র করে ক্ষান্ত হবে না, লোলুপ দৃষ্টিতার আরো অনেক জায়গাতেই।
অ্যাসাঞ্জের চাহিদাটি খুব বেশী নয়, সে চায় তথ্যর উন্মুক্ততা। সে খোলাসা করতে চেয়েছিল, গদবাধা দৃশ্যমান জগতের পাশাপাশি যে গোপন অধ্যায়টি সব সময়ই চলতে থাকে তাকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া।এটা ঠিক পরিস্কার না তার মনোবাসনা কেন এইরুপ হল। হয়তবা বিশ্বকে বেশী কিছু দেবার থেকে, বৃহত্তর ক্ষতি সাধনের মধ্যে দিয়ে নিজের তৃপ্তি পাওয়াটাই ছিল তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তার সেই সার্থটাকেই হয়ত একটা রুপ দিয়ে সেটাকে বৃহৎ স্বার্থতে পরিনত করে সে খুব মজাঔ পাচ্ছিল। তার অতীত তাকে একজন হ্যাকার রুপেই পরিচিত করিয়ে দেয়।
গ্রাম দেশে একটি কথা খুবই পরিচিত-"বেটা নষ্ট হাটে, আর বউ নষ্ট ঘাটে"। কেন? উত্তর একটাই সেখানে তথ্যর অবাধ স্বাধীনতা থাকে; মানুষ নিজের উন্নতি বাদ দিয়ে পরচর্চাতেই বেশী আনন্দ পায়। তথ্যা উন্মুক্ততা কোন কোন ক্ষেত্রে খুব বেশী প্রয়োজন নেই। ছোট্ট একটি পরিবারের কথা বিবেচনা করলেও দেখা যায় অনেক কথা গোপন রাখলে সেটা পরিবারের সাম্যবস্থা রাখতে বেশী অগ্রনী ভূমিকা রাখে।
পরিশেষে, অ্যাসাঞ্জ যে জন্য সুইডেন কে পছন্দ করেছিল তার কার্যকরমকে এগিয়ে নেবার জন্য সেটা হল সেদেশের আইন ব্যবস্থা। কারন সুইডেনের আইনে তথ্যর সর্বাতক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেই আইনেই মহিলাদের সম্মান রক্ষার্থে রয়েছে আরো জোরালো ধারা।সেই ধারার জের ধরেই তার কাজ আজ থমকে যাওয়ার উপক্রম। এই ঘটনা আমাদের মত সাধরন মানুষকে এটাই জানান দেয়, বৃহৎ কিছু করবার আগে মানুষকে নিজের মধ্যে ভালোকিছুর অনুশীলন করা সবার আগে প্রয়োজন।
ভাবনাবিদের কলাম
ভাবনাবিদকে বিশ্বাস করা যায়, কারন সে ভাবনাজীবি নয়