৭১ এ পাকিস্তানের সাথে আমাদের যুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল বৈষম্য, আর এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েই কোটি কোটি মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট স্বীকার করেছে। আর লক্ষ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে।
যারা জীবিত মুক্তিযোদ্ধা কিমবা যারা টাকা বা ক্ষমতার বিনিময়ে মুক্তি যোদ্ধার সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছে, তাদেরকে না হয় মাঝে মধ্যে মুখে মুখে আমরা পাম পট্টি মেরে কিমবা বিভিন্ন বিষয়ে কোটা সুবিধা দিয়ে দেশপ্রেমিক সাজি।
কিন্তু, যে বৈষম্য দূর করার সংগ্রামে লক্ষ লক্ষ শহীদ জীবন দিল, এ ধরনের কোটা সুবিধার বৈষম্য তৈরি করা তাদের স্মৃতির প্রতি কত বড় একটা কৌতুক এটা অবশ্যই ভেবে দেখা উচিৎ।
আর অবস্থা দেখে মনে হয়- শুধুমাত্র মুক্তি যুদ্ধের সৃতি চারণ করা, আর মুখে বা লেখায় মুক্তিযোদ্ধাদের পাম-পট্টি মারা ছারা দেশ প্রেম দেখানোর আর কোন অপশনই অবশিষ্ট নাই।
দেশ প্রেম দেখানোর মতন যে অপশনগুলো ছিল সেসব আমাদের জন্মের আগেই শেষ হয়ে গেছে। ( ব্লগে অবশ্য এখনো একটা ছোটখাটো অপশন আছে সেটা হচ্ছে ইচ্ছামতন কোন নিককে ছাগু কিমবা ভাদা ট্যাগ লাগানো।)
আবার সেই একই কথা - আমার অতি প্রিয় আতিয়ার রহমান স্যারের কথা মতে- "শাকসবজি পচলে তেমন একটা টের পাওয়া যায় না, তবে মাংস যদি পচে তবে তার দুর্গন্ধে টেকা দায়।"
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের বাঙালিদের জন্য হতে পারত মাংসের মতন সুস্বাদু একটা পুষ্টিকর খাবার, যা খেয়ে আমরা নতুন প্রাণশক্তিতে বীরের মতন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু, আমাদের দুর্ভাগ্য যথোপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে কিমবা যত্রতত্র বারবার খোলাখুলি করায় এই চেতনার অনেকখানিই আজ পচে গেছে, আর যেটুকু ভাল আছে তারও একটা বড় অংশ মনে হয় ফরমালিন দিয়েই সংরক্ষণ করা, তাইতো দেখা যায় সেইটা খেলেও আমাদের বদ হজম হয়।
ভাবতে খুব অবাক লাগে আর কিছুদিন পরে হইত আমাদের মহান মুক্তি যুদ্ধই আমাদের সামনে সবচাইতে বড় কৌতুকের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
অধিকাংশই টাকা বা ক্ষমতাদিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট কেনা মুক্তিযোদ্ধা!!! এক একটা বদের ধারি। যখন সরকার থেকে বিনা মূল্যে এনার্জি সেভিং লাইট দেওয়া হচ্ছিল। তখন দেখি একজন পিছন থেকে এসে বলছে "আমি মুক্তিযোদ্ধা আমি কেন লাইনে দাঁড়াবো??"
খুব বলতে ইচ্ছা করল- বিভিন্ন প্রকার অবৈধ সুবিধা নেবার জন্যই কি আপনি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন?? ( যাই হোক সাহস না থাকায় কতি পারিনি)
মনে মনে ভাবলাম, এইসব মালের জন্যই আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবর রহমান পর্যন্ত জাতীয় বীর থেকে সাধারণ মানুষের কাছে খলনায়কে পরিণত হইছিলেন।
আর কত রেজিট্রেশন বিহীন মোটর সাইকেলের নেম-প্লেটে যে মুক্তি যোদ্ধা লেখা দেখেছি তার কোন হিসাব নাই।
যাই হোক মুক্তিযুদ্ধ/মুক্তিযোদ্ধা করে করে মুখে ফেনা তোলা এইসব সুযোগ সন্ধানীরা আমাদের ইতিহাসের সবচাইতে শক্তিশালী জননেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে পর্যন্ত সাইজ করে ফেলেছিলেন। আর আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীত এদের কাছে একেবারেই নাবালিকা।