somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসাধারন একটা সাধারন দিন।

১০ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলা থেকেই আমার জীবনে এক্সাইটমেন্ট একটু কম। দুরে তো অনেক পরের কথা, পাশের বাড়ির ছাদেও উঠতে পারতাম না। মা আমাকে নিয়ে সবসময় অনেক ভয়ের মধ্যে থাকে। অনেক বেশী ভালোবাসা থেকে এই ভয়টা চলে এসেছে। যাই হোক মুল কথায় আসি।





৯ জুলাই ২০১১ , শনিবার।



দিনটা আর দশটা সাধারন দিনের মত শুরু হল। প্রতিদিনের মত আজও ক্লাসে লেট। ক্লাস যে সময় শুরু হয় তখন আমার সকাল শুরু হল। আমার বন্ধু সাদীর ফোনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। কোনমতে নাস্তা করে গোসল করে দিলাম একটা দৌড়। ক্লাসে পৌছলাম ক্লাস শুরু হওয়ার প্রায় এক ঘন্টা পরে। আমরা পাচজন বন্ধু ক্লাসে সবসময় একসাথে বসি। আজ ক্লাসে গিয়ে দেখি আমার যায়গায় অন্য একটা ছেলে বসে আছে। বসলাম ক্লাসের এক কোনায়। ল্যপটপ অন করে ফেসবুকে ঢুকলাম। :p স্যার আনমনে পড়িয়ে যাচ্ছে আর আমি নটিফিকেশন চেক করা নিয়ে ব্যস্ত। ক্লাস শেষ হল। ক্লাসের পর ল্যব সেখানেও ফাকী দিলাম। তারপর কিছুক্ষন ষ্টাডী হলে সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিলাম। নাদিম , আমার অনেক পুরানো ফ্রেন্ড। তাকে বলেছিলাম আজকে রাতে আমার বাসায় থাকতে। প্লান ছিলো দুইজন ঘুরবো। সে একটা লুঙ্গি নিয়া চলে এসেছে। দুইজন মিলে বাসায় গেলাম। তখন বাজে বিকাল পৌনে ছয়টা।



আমাদের প্লান ছিলো ৩০০ ফুট রাস্তা দিহে হাটবো আর চা খাবো । পরের দুইদিন হরতাল , ভার্সিটি বন্ধ। মনের মধ্যে কেমন যেন লাগছে। নাদিম কে বললাম, চল টঙ্গী যাই। ও খুশিমনে রাজি হয়ে গেল। পথে সামির সাথে দেখা হল। তাকে বলতেই সেও রাজী হয়ে গেল। সামি গেল বাসায় ব্যগ রাখতে আর আমি আর হাসান ক্যফেটেরিয়াতে বসে মধু মামার চায়ে চুমুক দিতে দিতে একটা একশন প্লান বানালাম। যাবো টঙ্গী ষ্টেশন রোড। সেখান থেকে হাটতে হাটতে উত্তরা আসবো। (আজাইরা বলছি না। আমাদের হাটার অভ্যাস অনেক ভালো। একদিন ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে এন এস ইউ তে হেটে এসেছি আমি আর নাদিম) । উত্তরাতে এসে ভালো দেখে একটা ফুটপাত খুজে বের করবো । তারপর দুইজন মিলে ঘুমাবো। কিন্তু সামি আসায় ঘুমানোর প্লান ক্যনসেল করতে হল। প্লান হল , ষ্টেশন রোডে যাবো , তারপর ফিরে আসবো। আমরা বের হলাম। পরের দিন হরতাল তাই বাসে অনেক ভীর। আর বসুন্ধারা তে থাকতে থাকতে ফার্মের মুরগীর মত অবস্থা। বাসে ভীর দেখলেই ভয় লাগে। তারপরেও একটা মধ্যম লোডের তুরাগে উঠলাম। ঝুলতে ঝুলতে পুরাই অবস্থা খারাপ। উঠলাম তিনজন আর ভাড়া দিলাম দুইজনের । তাও ঝাড়ি দিয়ে ২ টাকা কম :p । আসলে এই বুদ্ধিটা নাদিমের আমার কোন দোষ নাই। :p । বাসটার ইঞ্জিনে টেকনিক্যাল প্রবলেম ছিলো। আমাদের নামিয়ে দিলো টঙ্গী বাজারে। সামি আগে টঙ্গী থাকতো। ওর অনেক পুরানো কথা মনে পড়ে গেল। তার মধ্যে একটা ছিল এক মিষ্টির দোকানে থেকে প্যকেট চুরি করা। আমরা সেই দোকান খুজতে লাগলাম । পেয়েও গেলাম। সবাই মিলে মিষ্টি খেলাম। বের হয়ে গেলাম কাছেই চমতকার একটা যায়গায়, কিছুক্ষন হাটাকাটি করলাম। পরে শুনলাম যায়গাটা নাকি খুব একটা ভালো না। তাই বের হলাম। বাসায় আসবো কিনা ভাবছিলাম। সামি বললো চল রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ঘুরে আসি। আমরা হাটতে লাগলাম । সময় লাগলো দশ মিনিট। তখন বাজে রাত দশটা তিরিশ মিনিট। ষ্টেশনের পরিবেশ অনেক থমথমে । আমরা পৌছাতেই একটা ট্রেন ছেড়ে গেল। আর একটা ট্রেন প্লাটফর্মে দাড়িয়ে আছে। হটাত করেই মনে হল ট্রেনে যাই। দাড়িয়ে থাকা ট্রেনটার সামনে অনেকখন বসে রইলাম, ট্রেন ছাড়েনা। এর মাঝে দুইটা ট্রেন ছেড়ে গেল। তারপর এলো লালমনি এক্সপ্রেস। এই ট্রেন দিয়েই আমার ট্রেন জার্নির সাথে পরিচয় হয়। আবার সেই ট্রেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। আমরা দৌড় দিলাম। দেখি সব বগি হাউসফুল । একটি বগি প্রায় খালি। আমরা খুশিমনে ওই বগির দিকে গেলাম। হাসান দুরে দাড়িয়ে তার তিন নাম্বর সিগেরেট শেষ করতে ব্যস্ত। সামি বগিতে উঠেই দ্রুত নেমে আসলো। আমি ঠিক বুঝলাম না আমিও উঠলাম । উঠে দেখি নীচেই একটা বস্তা, আর খুব অদ্ভুত একটা দুর্গন্ধ। ভালো করে তাকিয়ে দেখি পচা লাশ ! হটাত লাশ দেখে অনেক ভয় পেয়ে গেলাম। নেমে আসলাম। সামিও অনেক ভয় পেয়েছে। দ্রুত নাদিমের কাছে থেকে সিগেরেট নিয়ে কয়েক টান দিলো। আমি তো স্মোকিং করিনা। আমি তাদের দিকে শুধু চেয়ে থাকলাম। গিয়ে উঠলাম পিছনের দিকের একটা কম্পার্টমেন্টে। ট্রেন চলতে শুরু করলো। ট্রেন থামলো এয়ারপোর্ট ষ্টেশনে। সেখানে মাথা খারাপ করা ভীড়। যখন ভিড় ঠেলে বের হলাম মনে হল যেন ওয়ার্ন্ড কাপের সেমি ফাইনাল ম্যচ দেখে বের হলাম।

আমি হাসান আর সামি রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলাম। কোন বাস পাবো আশা করিনি, তবে বি আর টি সি এর একটা বাস খালি সিট সহ পেলাম :D । বিশ্বরোডে বাস থামলো। নাদিম জানালা থেকে লাফ দিলো। আমিও দিলাম। কিন্তু বাকী থাকলো বেচারা সামি। ওই বেচারা নামলো আরো কিছুদুর গিয়ে। বিশ্বরোড থেকে আবার হাটতে লাগলাম। তখন বাজে রাত ১১ টা ৩০ মিনিট। হেটে হেটে বাসায় পৌছাতে রাত ১২টা বেজে গেল। বাসায় এসে দেখি বিদ্যুত নাই। আরেক ঝামেলা। বাসার সামনে দাড়িয়ে রইলাম । কিছুক্ষন পর বিদ্যুত আসলো। সামি আর নাদিম আজ আমার সাথে থাকবে।রাতে ঘুমানো কঠন আছে । হৈচৈ করেই সময় কেটে যাবে।



Re-Dhun এর গান বাজছে। আর আমি এই নোট টা লিখছি। দিনটআ হয়ত অনেক আলাদা না। তবে আমার জন্য অনেক আনন্দদায়ক। সামি আর নাদিম ড্রাইং রুমে আছে, এখনো লাঞ্চ করিনি। দেখি খাবারদাবারের কি অবস্থা।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×