somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিতাস নদীর গ্রাম

১৬ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ ভোর সকাল হতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এমনিতে আমাদের অন্ধগ্রামে বেশ ভালো বৃষ্টি হয়ে থাকে। এক সময় গ্রামে অধিকাংশ পরিবার ছিলো কৃষি নির্ভর। তাই বৃষ্টিকে বলা হতো আমাদের গ্রামের জন্য আশীর্বাদ। ফসলি জমিতে যথেষ্ট ভালো ফসল হতো। তিতাস নদীর তীরবর্তী গ্রাম হওয়ার কারণে একটা সময় ছিলো যখন পানি ও মাছের অভাব হতো না, প্রচুর মাছ পাওয়া যেতো। যা এখন কল্পনা মনে হয় অথবা মনে হতে পারে নিছক গল্প। এখন বর্ষাকালেও তেমন পানি হয় না। তেমন মাছও নেই। পানির জন্য নদীতে বার বার ড্রেজিং করা হয়েছে। নদীতে মাছ ছাড়া হয়েছে। মরতে মরতে আমাদের নদী যেনো আবারও বেঁচে উঠার জন্য লড়াই করছে। নদীর এই বেঁচে থাকার লড়াই দেখে নিজের কাছেও ভালো লাগে।

আমাদের গ্রাম সহ আশেপাশের গ্রামে প্রচুর প্রবাসী আছেন যেই কারণে অনেক ফসলি জমিতে নিয়মিত ফসল না করার কারণে ফসলি জমিগুলো প্রায় পতিত অবস্থায় থাকে বারো মাস। দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষ করে যারা দেশে ফিরে আসছেন তারা আর জমিজমাতে কাজ করার মতো শারীরিক অবস্থায় থাকেন না। কৃষি নির্ভর গ্রামটি কিভাবে কখন যেনো প্রবাস নির্ভর হয়ে গিয়েছে তা সময়ের দৌড়ে কেউ বুঝতেও পারেনি। যখন মোটামোটি কেউ কেউ বুঝতে পেরেছেন তখন দেখা গেলো - গ্রামশূন্য! মানুষ নেই। পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশী হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ পরিবারের পুরুষ প্রবাসে! এমনকি এমনও পরিবার আছে যেই পরিবারের চার - পাঁচ জন পুরুষের মধ্যে সকলেই প্রবাসে। মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুর থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যে ইয়োরোপ আমেরিকা কানাডা সহ জাপান অষ্ট্রেলিয়া - এমন কোনো দেশ নেই যেই দেশে এই অন্ধগ্রামের মানুষ না গিয়েছেন।



এখন সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত নেমেছে এখনও ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। গ্রামে প্রচুর কাজ জমে আছে। একটি কাজ শেষ করলে আরো দশটি কাজ তৈরি হয়। এই অন্ধগ্রামের কাছে আমি নানান ভাবে ঋণী। এই ঋণ শোধ করার মতো ক্ষমতা আল্লাহপাক আমাকে দেননি। তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি। চেষ্টা করছি কৃষি নির্ভর গ্রাম তৈরি করতে। চেষ্টা করছি আমাদের অন্ধগ্রামের মানুষ আবারও কৃষিতে ফিরে যাবেন। ফসলি জমিতে কাজ করে ক্লান্ত শরীরে রাত নামার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়বেন! - হয়তো সেই দিন আর ফিরে আসবে না, তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই মাটিতে আমার জন্ম এই মাটির কাছে আমার অনেক অনেক ঋণ।






সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:১৯
১২টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=চায়ের আসরে গল্প বলার দিনগুলো সেই= (চায়ের কাপে টুংটাং সুর-৮)

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪১



হারিয়ে গেল কালের অতলে বিকেলের চায়ের আয়োজন
গোল বৈঠক উঠোনে, চারপাশে কত প্রিয়জন
উষ্ণ চা সাথে মুড়ি
ঠোঁটে উড়তো কত কথার ফুলঝুরি।

টিভি সিরিয়াল আর ইন্টারনেট
ইনবক্স আর চ্যাট
কেড়ে নিল সুন্দর সময়গুলো
আন্তরিক সম্পর্কগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণহত্যাকারী দল জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হোক!

লিখেছেন সৈয়দ তাজুল ইসলাম, ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫০



জামাত শিবির সুযোগ পেলে আবারও প্রকাশ্যে বাঙালী গণহত্যায় যুক্ত হবে, আওয়ামিলীগের পূনর্বহালের কথা ভাবতে গেলেই এই বিশ্বাসটা দৃঢ় হয়। এই হিসেব মিলাইতে গেলে আপনার রকেট সাইন্স... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাসুদ(শাহবাজ ) তোমরা কি আর ভালো হবা না ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৯


বাংলাদেশপন্থীরা ভারত ও পাকিস্তানপন্থীদের হাউকাউতে অতিষ্ঠ। ভারত ও ভাদা রা মনে করে ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। অন্যথা বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। পাকিস্তান কি ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:২৭








ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আকস্মিক সামরিক সংঘাতের চার দিন পর দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও যুদ্ধক্ষেত্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

তেমনই একটি হচ্ছে ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্বশুর বাড়ীর ভূতের যাতনা: সত্য ঘটনা অবলম্বনে

লিখেছেন অপলক , ১৫ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪১

নিচের ঘটনাটা দিনাজপুর, উপশহরের। ঘটনাগুলো জেনেছি আমার স্ত্রীর কাছে।



আমার শ্বশুর শহরের পাশে একটি পুরাতন টিনের বাড়ি কেনেন। বাড়ির প্রথম মালিক ছিলেন একটি হিন্দু পরিবার। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×