ধরুন কাল বা সময়ের একটা নির্দিষ্ট গন্ডি বা চক্র আছে এবং তা হচ্ছে ধ্রুব। একটা নির্দিষ্ট কাল পরে তা আবার রিসেট হয়। এবং কাল বা সময় পুনরায় শূন্যের কোঠায় ফিরে যায়। তখন অন্যান্য পদার্থের কি পরিণতি হতে পারে?
একজন মানুষের সর্বোচ্চ ক্ষমতা কি হতে পারে?
বর্তমান প্রেক্ষাপটে হয়তো বলবেন টাকার কুমিড় হলে ক্ষমতা তাঁর হাতে রাতারাতি চলে আসে। অথবা অসাধারণ মেধা এবং দূরদর্শিতার অধিকারী হতে পারা? অথবা কাল্পনিক ক্ষেত্রে গেলে যাদুবিদ্যায় পারদর্শি?
না, কল্পনার রাজ্যে যাচ্ছিনা। কাল্পনিক সম্ভাবনাগুলো নাহয় আমাদের যার যার কল্পনাতেই থাকুক আজ?
আর কি ক্ষমতা পেলে আপনি মানুষ কে অসীম ক্ষমতার অধিকারী বলে আখ্যায়িত করবেন?
অমর হলে? এতটা সময় বেঁচে থেকে কি করবে একটা মানুষ ? যখন তাঁর সাথের কেও থাকবেনা, জীবনে নতুন নতুন মানুষের আগমণ হবে। সাধারনত এক জীবনের অনেক স্মৃতি মানুষকে তাড়িয়ে বেড়ায়, অমর হয়ে কি সে এমন তাড়িয়ে বেড়ানো স্মৃতির পাহাড় গড়ে যাবে? সাইকোলজিক্যালি সে মানুষটার কি হাল হতে পারে বলে মনে হয় আপনাদের?
নাহ্, আমি তাঁর অবস্থা ভেবে সাহস পাচ্ছি না অমর হতে চাওয়ার।
প্রশ্নের তো ভান্ডার সাজিয়ে বসে পরলাম এতক্ষণ। উত্তর তো বহুদূর। এখন আসি মূল কথায়, মানুষ বহুরূপী। এক জীবনে মানুষ বিভিন্ন ঘটনার সম্মুখীন হয়। কোন কোন ঘটনার সিদ্ধান্ত হ্যাঁ অথবা না দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু কোন কোন ঘটনা আবার একাধিকমুখী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তা সে সিদ্ধান্তের সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
এক্ষেত্রে সম্ভবত একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা একটু পরিষ্কার হয়!
ধরুন আপনার পাশের বাসায় বেশ জোরে গান শুনছে কেও। এখন,আপনি কি কি করতে পারেন ?
১/আপনি নিজে গিয়ে তাকে গান বন্ধ করতে বলতে পারেন।
২/কানে তুলো গুঁজে চুপচাপ আপনার কাজ করতে পারেন।
৩/সরাসরি সে বাসার বাড়ীওয়ালার কাছে বিচার দিতে পারেন।
৪/আপনি আপনার মাকে দিয়ে সে বাসার বাড়ীওয়ালাকে ব্যাপারটা জানাতে পারেন।
৫/আপনি আপনার মাকে দিয়ে আপনার বাসার বাড়ীওয়ালাকে জানাতে পারেন।
৬/আপনি আপনার বাসার বাড়ীওয়ালাকে সরাসরি নিজে গিয়ে ব্যাপারটা জানাতে পারেন।
..................
এভাবে উক্ত ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকগুলোই পদ্ধতি বের করা যেতে পারে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে।
আর তাঁর ফলাফল ও হতে পারে বিভিন্নরকম।
ধরুন,আপনি নিজে গিয়েই জানালা দিয়ে যে গান শুনছে তাকে ডাক দিলেন, এখন পর্দা সরিয়ে উঁকি দিল কোন এক রূপসী। এভাবেই হয়তো শুরু হতে পারে আপনার প্রেম কাহিনী।
আবার, আপনি সে বাসায় গিয়ে বাড়ীওয়ালার ঘরে বেল বাজালেন, আর দরজা খুলে দিলো বাড়ীওয়ালার রুপসী কন্যা। এভাবেও শুরু হয়ে যেতে পারে আপনার প্রেম কাহিনী। পাশের বাসার ভাড়াটিয়া থেকে ঐ বাসার বাড়ীওয়ালা হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। ভাবতে কি আনন্দই না লাগছে, তাই না?
এভাবেই একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্য একটি ঘটনা রচিত হয়, সে রচিত ঘটনা কে কেন্দ্র করে আবার অন্য আরেকটি ঘটোনা রচিত হয়। সূক্ষ্ম অনেক ব্যাপারই এভাবে দু-ধাপ, তিন-ধাপ পরে এসে মূখ্য হয়ে দেখা দিতে পারে। আবার অনেক মূখ্য ব্যাপার কয়েকধাপ পরে গিয়ে গৌণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কি করবেন, কোন ধাপে এগুলে আপনার বেশি লাভ হবে, বেশি সুখ পাবেন অথবা বিপদ থেকে বেশি দূরে থাকতে পারবেন!
জীবনের এসব হিসেব নিকেশ কষতে কষতে মাথা তালগোল পাকিয়ে যায়, তাই না?
আর এতসব মিলিয়েই জীবন এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এখন ধরুন যদি আপনাকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয় আপনি ভবিষ্যৎ দেখতে পারেন? তাহলে তো ভালই হত! আপনি বুঝতেই পারতেন কোন ঘটনার প্রতিক্রিয়া কিরকম হলে আপনি বেশি লাভবান হবেন, অথবা কোন সিদ্ধান্ত কিভাবে নিলে আপনি বেশি লাভবান হবেন!
আবার ধরুন একই সাথে যদি এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়, আপনি প্রতিটা প্রতিক্রিয়ায় একই সাথে আলাদা আলাদা সত্তা নিয়ে আপনার জীবন কাটিয়ে দিতে পারবেন?
ধরুন, উদাহরণের ঘটনায়, আপনি পাশের বাসার গান ভলিউম কমানোর জন্য জানালা দিয়ে বলতে গিয়ে যে রূপসীর সাথে প্রেমের সম্ভাবনা জেগে উঠলো, তাঁর সাথেও সামনের জীবন অতিবাহিত করতে পারছেন আবার একই সাথে, বাড়ীওয়ালার বাসায় গিয়ে বাড়ীওয়ালার যে রূপসী কন্যার সাথে দেখা হল তাঁর সাথেও সামনের জীবন অতিবাহিত করতে পারবেন!
আহা, কি মজা, তাই না? এমন জীবন কয়জনের মিলে?
অমর হওয়ার চেয়ে এই ক্ষমতাটা কি অনেক মজার আর সুখের নয়?
বিভিন্ন জীবনে আপনার বিভিন্ন ভাবে মরণ হবে, বিভিন্ন রকমের লাইফস্টাইল পাবেন, হ্যাঁ!! আপনি একই সাথে সবধরণের প্রতিক্রিয়া পরবর্তী পথ চলতে পারবেন! জীবন টা অসাধারণ হত, তাই না?
এরুপর ধরুন যদি বলা হয় সময় টা একটা নির্দিষ্ট মুহূর্তে রিসেট হয়? পেছনে হাঁটা শুরু করে? তাহলে তো আপনি মৃত্যু কে ফাঁকি দিয়ে দিয়ে সেই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন!
তাহলে তো একেবারে সোনায় সোহাগা!! আপনার জন্ম হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আপনার মরণ বলে কিছু রইল না তখন!!
কি,কথাগুলো অনেক জটিল লাগছে? হুম, আমি যখন মুভিটি দেখি, তখন আমার কাছেও বেশ জটিলই লেগেছে।
খুব কম সাই-ফাই মুভি আছে যা আমাকে এভাবে ভাবাতে পেরেছে, ইনসেপশন তো অনেকেই দেখেছেন, এবার এই মুভিটি দেখুন। কেমন গোলমাল লাগিয়ে দেয় আপনার নিউরনগুলোতে। কি করে হ্যাং করে দেয় আপনার নিউরনের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা সংক্ষেপে সি.পি.ইউ কে!
এই গোলমেলে লেখাগুলোর উত্তর পেতে নিজেই দেখে নিন
"Mr. Nobody" এই মুভিটি। আশা করি সাই-ফাই প্রেমীদের বেশ ভালই লাগবে।
এবং অবশ্যই যারা দেখেছেন তাঁরা আপনাদের ব্যক্তিগত মতামত জানাতে ভুলবেন ন।
মুভিটি ডাউনলোডের আই এম ডি বি লিঙ্ক
মুভিটি ডাউনলোডের টরেন্ট লিঙ্ক(৭২০পি)
মুভিটি ডাউনলোডের আই এম ডি বি লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৯