আমাদের ভার্সিটির কথাই বলি। সারা দেশ জুড়ে বাঁধনের যে কর্মচাঞ্চল্য তার একটা একটা ছোট ফ্রেম হতে পারে বাঁধনের বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। ভার্সিটির আটটি হলের প্রতিটিতেই রয়েছে স্বাধীন হল ইউনিট যার তালিকাভুক্ত সদস্যরা রক্তের যে কোন প্রয়োজনে আপনাকে সাহায্য করতে সদা প্রস্তুত।
রক্তের প্রয়োজনে কিভাবে যোগাযোগ করবেন?
..................................................
খুব সহজে। বুয়েটের যে কোন হলে এসে গার্ডদের জিজ্ঞেস করলেই আপনি জেনে নিতে পারেন হলের কার কাছে রক্তের প্রয়োজনে যেতে হবে। বেশির ভাগ সময়ই হল শাখার সভাপতি, সহ সভাপতি কিংবা সম্পাদকের ফোন নম্বর কিংবা রুম নম্বর জানানো হয় আপনাকে। আপনি যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট বাঁধন সদস্য তখন হলের আবাসিক ছাত্রদের মধ্যে যারা নিয়মিত রক্ত দেয় বাঁধনের ডাটাবেজ থেকে ঐ ব্লাডগ্রুপের ডোনার খুঁজে বের করে তার সময় চেয়ে নেন।
এছাড়া বুয়েটের সব হলেই বাঁধনের নিজস্ব নোটিশবোর্ড আছে যেখান থেকে আপনি নিয়মিত ডোনারদের নামের তালিকা এবং তার সাম্প্রতিক রক্তদানের তারিখ জেনে নিতে পারেন। রক্তগ্রুপ জেনে নিয়ে চাইলে নিজেই সরাসরি ডোনারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখাগুলোতেও একই প্রক্রিয়া।
বাঁধনের কোন ব্লাডব্যাংক নাই
................................
মনে রাখবেন ডোনারদের সবাই কিন্তু বাঁধনের সদস্য নয়, প্রত্যেক ডোনার আসলে একেকজন স্বেচ্ছাসেবক। বাঁধনের নিজস্ব কোন ব্লাডব্যাংক নেই, ডোনাররা নিজেরা গিয়ে রোগীর প্রয়োজনে রোগীর সময়মত হাসপাতাল কিংবা রক্তদান কেন্দ্রে রক্ত দিয়ে আসেন। বাঁধনের মুল দায়িত্ব হল রক্তদাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে সমন্বয়কের ভুমিকাটুকু পালন করা। আমরা কেবল ডোনারদের ঠিকানা এবং ব্লাডগ্রুপ সংগ্রহ করে রাখি।
ডোনার কারা?
................
মূলত দেশের প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় ও কিছু পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজেই আপাতত বাঁধনের ব্যাপ্তি। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক হওয়াতে উৎসাহী ডোনার পাওয়াটা কখনোই সমস্যা হয়ে ওঠেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই মুল ডোনার।
আমাদের দেশে রক্তদান এখনও সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিতে পারেনি। প্রতি বছর গড়ে প্রায় চার লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন যা রক্তদানে সক্ষম দু'কোটি জনসংখ্যার মাত্র দশমক শুন্য দুই শতাংশ। কিন্ত তবুও রক্তের প্রয়োজন অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে রক্তদানের এই আন্দোলন সমর্থন করা ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আপনার উপরও বর্তায়। আপনার দেয়া একব্যাগ রক্ত কতগুলো জীবন বাঁচাতে পারে ভেবে দেখেছেন? আপনার এক ব্যাগ রক্তই হয়ত কোন মায়ের কাছে তার আদরের ছেলের প্রাণ কিংবা কোন ভাইয়ের কাছে তার স্কুলপড়ুয়া ছোট্ট বোনের হৃদয় তোলপাড় করা মুখের হাসি।
অনুরোধ...
..................
সামহয়ারিনের আমরা সবাই কি পারি না নিজের ভাই কিংবা বোনের মতই প্রিয় ব্লগারদের প্রয়োজনে রক্তদানের সুযোগটুকু নিজেই নিয়ে নিতে? কিংবা আমার অসুস্থ মায়ের জীবন বাঁচাতে কি আপনি এগিয়ে আসবেন না? পারবেন না আমার ভাইয়ের নিভুনিভু চোখের আলোর সলতেটুক উস্কে দিতে?
একটা ছোট্ট প্রস্তাবঃ
....................
আমাদের কেউ উদ্যোগী হয়ে সামহয়ারিনের সব মেম্বারের ব্লাড গ্রুপ এবং কন্টাক্ট নামার নিয়ে একটা ডাটাবেজ তৈরী করে রাখতে পারি। আর তারপর রক্তের প্রয়োজনে কেউ পোস্ট করলেই সেখান ব্লাড গ্রূপ অনুযায়ী কাংখিত ডোনার খুঁজে নেয়া যাবে।
সম্ভব? আপনারা কি বলেন?
ভাল থাকুন সবাই।
( বাঁধনের একটা ওয়েবসাইট আছে যেটা বাঁধন-ডি. ইউ. জোন মেনটেইন করে। রক্তদানের প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, উপকারিতা কিংবা রক্তদান সম্পর্কিত যে কোন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন সেখানে। )
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০০৭ দুপুর ১২:৪৪