গুরুত্বপূর্ণ এক বাঙালি কবির নাম মহাদেব সাহা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
গুরুত্বপূর্ণ এক বাঙালি কবির নাম মহাদেব সাহা
তপন বাগচী
বাংলাদেশের কবিতায় তো বটেই, বাংলা কবিতায় মহাদেব সাহা গুরুত্বপূর্ণ কবি। কাব্যশক্তির গুণেই তিনি জনপ্রিয় হয়েছেন আর জনপ্রিয়তার কারণেই তিনি অনেক ক্ষেত্রে নাকউঁচু আলোচকদের এড়িযে-যাওয়া তালিকায় অবস্থান করেন। মহাদেব সাহা সেই কবিদের অন্যতম, যাঁরা স্তাবক তৈরি না করেও জনপ্রিয় হন। সারাজীবন মিডিয়ায় কাজ করেও মিডিয়া তাঁকে তেমন তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করেনি, তিনি নিজেও তেমন মিডিয়ার মুখাপেী হতে কাঙালিপনাও করেননি। মহাদেব সাহা জনপ্রিয় হয়েছেন তাঁর কবিতায় বাঙালি নিজস্ব আবেগ ও আর্তি শিল্পিতরূপে ধারণ করার জন্য। এই আবেগকে যাঁরা তরল মনে করে মহাদেব সাহাকে এড়িয় যাওয়ার অপচেষ্টা করেন, তাঁরা জানেন না, কিংবা জানতে চান না যে, আবেগ কখনো অতরল হয না। আরো গভীরে গিয়ে বলা যায়, আবেগ ছাড়া কবিতারই জন্ম হতে পারে না। আবেগই মহাদেব সাহাকে কবিতা লিখতে প্রেরণা দিচ্ছে, আবেগই তাঁর কবিতাকে পাঠকপ্রিয় করেছে, আবেগই তাঁর তাঁর কাব্যশক্তির নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আবেগ কেবল নারীপ্রেম তেকে উৎসারিত নয়। এই আবেগ মানবপ্রেম, সর্বোপরি দেশেপ্রেমে পর্যবসিত। প্রেমিক ও বিপ্লবী মহাদেব সাহা ষাটের দশকের কেবল বাংলাদেশের নন, বাংলা ভাষারই একজন উল্লেযোগ্য বড় কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
প্রথম জীবনের কাব্য ‘এই গৃহ এই সন্ন্যাস’, ‘মানব এসেছি কাছে’. ‘চাই বিষ অমরতা’, ‘কী সুন্দর অন্ধ’ এবং ‘তোমার পায়ের শব্দ’ তাঁকে বাংলা কবিতায় প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। এর পরে আর একটি চরণ না লিখলেও ষাটের দশকের তাঁর অবস্থান ম্লান হওয়ার সুযোগ ছিল না। কিন্তু প্রকৃত কবি বলেই তাঁর কলম থেমে যায়নি। তাঁর কবি-আত্মা তাঁকে বাংলাভাষার প্রধান কবিদের সারিতে পৌঁছে দিয়েছে। কারো সমালোচনা কিংবা প্রচারণার তোয়াক্কা না করেই মহাদেব সাহা কবি হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত হয়েছেন।
অস্বীকার করার দরকার নেই যে, আত্মজৈবনিক কবিতা লিখেই মহাদেব সাহা প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেছেন। ‘কোন বাস নেয় না আমাকে’ তাঁর প্রথম জীবনের একটি উৎকৃষ্ট কবিতা। একেবারেই সাদামাটা সরল বিবরণও যে খাঁটি কবিতা হয়ে উঠতে পারে, মহাদেব সাহার শীলনপর্বের কবিতাই তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ--
যতোই বলি না কেন আমাকে যেতেই হবে
তোমার দূরত্বে যেতে আর কোনো বাস খোলা নেই;
আমাকে পৌছতে হবে নারী আর সংসারের কাছে
আমাকে রেখেই তবু যায় লোকভর্তি বারোটার শেষ বাস
তোমার দূরত্বে যাবো
কোন বাস নেয় না আমাকে।
(‘কোন বাস নেয় না আমাকে’)
উদ্ধৃতাংশে দুটি শব্দবন্ধ ‘বাস খোলা নেই’ আর ‘তোমার দূরত্বে’ ল করলেই বোঝা যাবে সাদারণ কথা কী গভীর ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করা যায়। এই দুটি শব্দবন্ধের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই কবিতার প্রাণভোমরা।
‘বৈশাখে নিজস্ব সংবাদ’ কবিতায় গ্রাম ছেড়ে শহরে আসা কর্মব্যস্ত মানুষের অবসরে মাকে মনে করার প্রসঙ্গ এসেছে। বৈশাখে কী কী হতো কবির ছেলেবেলায়, তার বিবরণ থেকে বোঝা যায় এই কবি কতটা মাটিবর্তী, কতটা গৃহকাতর, কতটা মাতৃভক্ত। কিন্তু জীবনের বাস্তব কষাঘাত তাঁকে বাড়িতে মায়ের কাছে গাঁয়ের কাছে যেতে দেয় না। নাড়ীছেঁড়া বেদনায় মহাদেব সাহা তাঁর মায়ের প্রতি উচ্চারণ করেন--
মা তুমি বলেছিলে পয়লা বোশেখে
বাড়ি আসবি তুই, আমার মনে আছে- আমরাও
ইচ্ছে করে পয়লা বোশেষ কাটাই বাড়িতে, প্রতি বছর মনে
করে রাখি সামনের বছর পয়লা বোশেখটা বাড়িতেই কাটিয়ে
আসবে, খুব সকালে উঠে দেখবো পয়লা বোশেখের সূর্যোদয়
দেখতে কেমন, কিন্তু মা সারাটা বছর কাটে, ক্যালেন্ডার পাল্টে যায়, আমার
জীবনে আর আসে না যে পয়লা বোশেখ।
(বৈশাখে নিজস্ব সংবাদ)
বর্ষপরিক্রমায় পয়লা বৈশাখ পৃথিবীতে আসবেই। কিন্তু কবির জীবনে তা স্পর্শ করছে না। আমাদের নাগরিক জীবন কতটা সংস্কৃতিবিমুখ হয়ে পড়ছে, তারই প্রতীককী রূপায়ণ এই কবিতা। মহাদেব সাহার মা তখন কেবল একজন কবির মা নন, সকলের মা হয়ে ওঠেন। ব্যক্তিক অনুভূতিকে নৈব্যক্তিক রূপ দেয়ার এই কৃতিত্বেও জন্যই মহাদেব সাহা পাঠকের নমস্য হয়ে ওঠেন।
‘বন্ধুর জন্য বিজ্ঞাপন’ কবিতায় মাহাদেব সাহা বন্ধুর যে বৈশিস্ট্য প্রত্যাশা করেছেন, তা যদি হতো তাহলে পৃথিবী এমন সংঘাতময় হয়ে উঠত না। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দরকার পারস্পরিক বন্ধুত্ব। সেই বন্দু হবে এমন যে ‘পিতৃশোক ভাগ করে নেবে’, যে ‘ফুসফুস থেকে দূষিত বাতাস’ বের করে নেবে, যে কবির ‘পাপ হাতে নিয়ে ধর্মযাজকের মতো অহঙ্কারে ঢুকবে গির্জায়, তেমন বন্ধুর জন্য কবি প্রত্যহ বিজ্ঞাপন দেন, ‘কিন্তু হায়! আমার ব্লাডগ্র“পের সাথে/ কারো রক্ত মেলে না কখনো’ (বন্ধুর জন্য বিজ্ঞাপন)। ‘উপমা কালিদাসস্য’কে আমরা ‘উপমা মহাদেবস্য’ হিসেবেও গ্রহণ করতে পারি।
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মহাদেব সাহার অসাধারণ এক কবিতা আছে। যেখানে কবি রবীন্দ্রনাথকে মনে করা হয়েছে ‘আমাদের আবহমান বাংলাদেশ, আমাদের প্রদীপ্ত বিপ্লব’ হিসেবে। তাই কবির ঘোষণা- ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের চিরদিন একুশে ফেব্র“য়ারি’। মহাদেবের রবীন্দ্রপ্রেম কেবল কবিতায় নয়, প্রবন্ধের মোড়কেও উচ্চকিত।
‘এই গৃহ এই সন্ন্যাস’ এই ধরনের মানবিক বোধের কবিতা রয়েছে। নিুকণ্ঠের এই ধরনের কবিতার পাশাপশি তিনি সোচ্চার কণ্ঠে বলে ওঠেন-
দূতাবাসে উড়ছে পতাকা
অর্থাৎ স্বাধীন আমরা একথা মানতেই
হয়, রাষ্ট্রীয় সনদ আছে দেশে
দেশে আমরা স্বাধীন;
তবু মনে হয় এ যুগে কোথাও কোনো স্বাধীনতা।
নেই, বরং এ যুগে মানুষ যেন
পোষমানা দুর্বল মহিষ, নিজের যৌবন
আজ তার কাছে বড় অপরাধ, নিজের
বিবেক আজ তার সবচেয়ে
বিদগ্ধ কসাই।
(ফিরে দাও রাজবংশ)
কবি মহাদেব সাহা শুরুতেই যুগপৎ কবি ও সন্ন্যাসী, প্রেমিক ও বিপ্লবী। যুদ্ধকেও তিনি জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ মনে করেন। মহাদেব সাহা উচ্চেঃস্বওে চিৎকারন না বলে, অনেকে তাঁর বিপ্লবী চেতনার কথা জানেন না। রক্তের বিপ্লবের আকাক্সা পোষণ করেন বলেই তিনি চাইতে পারেন-
তার চেয়ে আমাদের ফিরে দাও রাজবংশ, রাজকীয়
অলীক বিশ্বাস
রাজকুমার তোমার রক্তে জš§ নিক
জান্তব যৌবন, যুদ্ধ করে মরি।
(ফিরে দাও রাজবংশ)
এই কবিতায় ‘ফিরে দাও’ শব্দবন্ধের বদলে ‘ফিরিয়ে দাও’ বলা হলে অর্থের শুদ্ধতা রা পেত। কিন্তু মহাদেব সাহার কবিতায় এটি কেমন যেন মানিয়ে গেছে।
মহাদেব সাহার প্রথমদিকের অনেক কবিতার চরণ মানুষের মুখে মুখে ফেরে। কেবল আবৃত্তির মঞ্চে নয়, সাধারণ পাঠকের স্মৃতিতে ও শ্র“তিতেও অবস্থান কওে নিয়েছে তাঁর কবিতার সুমিষ্ট চরণ। কয়েকটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে একথার প্রমাণ দিতে চাইÑ
আমার এ-ভয় শত্র“কে নয় প্রিয়ার চোখে
নরম ঠোঁঠে
নিজের দুটি করের মাঝে নখের ভিতর
আমার এ-ভয় অন্যরকম, অন্যরকম।
(আমার এ-ভয় অন্যরকম)
... ... ...
আবার এসেছি ফিরে তোর কাছে মধুর মানব
আমাকে তুই মাটি দে মাটি দে
মাটির মমতা দে, মন্ত্র দে
তুলে দে তুলে দে!
(মাটি দে মমতা দে)
... ... ...
বুকভাঙা বাঁকানো কোমর আমি নতজানু লোক
কতো আর নতজানু হবো কতো দাঁতে ছোঁবো মাটি!
(কতো আর নতজানু হবো কতো দাঁতে ছোঁবো মাটি!)
... ... ...
আমি তো তোমারই বশ
হে নারী, হে তৃণ হে পরমা প্রকৃতি!
(আমি তো তোমারই বশ)
... ... ...
এই বাড়িতে সময় এসে হঠাৎ কেমন থমকে আছে
এই বাড়িটি বাংলাদেশের প্রাণের ভেতর মর্মরিত
এই বাড়িতে শহীদমিনার, এই বাড়িতে ফেব্র“য়ারি
এই বাড়িটি স্বাধীনতা, এই বাড়িটি বাংলাদেশ
এই বাড়িটি ধলেম্বরী, এই বাড়িটি পদ্মাতীর
এই বাড়িটি শেখ মুজিবের, এই বাড়িটি বাঙালির!
(তোমার বাড়ি)
জাতীয় জীবনের এমন কোনো উপল্য কিংবা উৎসব নেই, যাকে কেন্দ্র করে মহাদেব সাহার কবিতার জন্ম হয়নি। জনচিত্ত জয় করার পে এই কবিতাগুলোও কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। পাঠক-সমালোচক হিসেবে আমাদেও ব্যর্থতা যে মহাদেব সাহার সরল কবিতাগুলোকেই সামনে তুলে রাখি। আধুনিক জীবনযাত্রা গূঢ় রহস্য ও দার্শনিক চেতনাও তাঁর কবিতায় প্রতিভাত। সাম্যবাদী রাজনৈতিক দর্শন এবং জীবনবাদী মরমিয়া বাউলের দর্শনও তাঁর কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায়। মহাদেব সাহা লিখেছেনÑ
তাই এই কবিতার অরগুলো লাল, সঙ্গত কারণেই লাল
আর কোনো রঙ তার হতেই পারে নাÑ
অন্য কোনো বিষয়ও নয়
তাই আর কতোবার বলবো জুঁইফুলের চেয়ে শাদা ভাতই
অধিক সুন্দর!
(জুঁইফুলের চেয়ে শাদা ভাতই অধিক সুন্দর)
এই কবিতায় ‘লাল’ হচ্ছে বিপ্লবের প্রতীক। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ঝলসানো রুটি’ই মহাদেব সাহার কবিতায় ‘শাদা ভাত’ হয়ে ফুটে উঠেছে। এই কবিতাটির সুর উচ্চগ্রামে বাঁধা নয়, কিন্তু এর চেতনাপ্রবাহে খেলা করে শোষিতের পে বিপ্লবের মন্ত্র। আরও একটু গলা চরিয়ে তিনি সরাসরি মহামতি লেলিনের নাম উচ্চারণ করে লিখেছেন সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কবিতাÑ
লেলিন, এই নাম উচ্চারিত হলে
রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে প্রাণ;
দেখি ভলগা থেকে নেমে আসে মানবিক উৎসধারা
আমাদের বঙ্গোপসাগরে
আমাদের পদ্মা-মেঘনা ছেয়ে যায় প্রাণের বন্যায়;
লেলিন নামের অর্থ আমি তাই করি শোষণহীন একটি গোলাপ
লেলিন নামের অর্থ আমি তাই করি শোষণমুক্ত একঝঅক পাখি
লেলিন নামের অর্থ আমি তাই করি শোষণহীন একটি সমাজ।
(লেলিন, এই নাম উচ্চারিত হলে)
মহামতি লেলিনকে নিয়ে সুকান্ত ভট্টাচার্যের পরে এমন উদাত্ত কবিতা বাংলঅভাষায় একেবারেই হাতেগোনা। মহাদেব সাহাকে এরপরেও যাঁরা কেবলই প্রেমের কবি হিসেবে প্রাচার করতে চান, তাঁরা কেবলই একচু হরিণ বলেই আমাদের বিবেচনা। যে কবি দেখতে পান ‘এঙ্গেলার কৃষকের মতোই বাংলাদেশের ভূমিহীন চাষীও মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলেছে আকাশে, সে হাত শোষণের বিরুদ্ধে দুর্জয় হাতিয়ার’, তাঁকে বিপ্লবী কবির শিরোপা দিতে আমাদেও আপত্তি নেই। কবির বিপ্লব কেবল সমাজমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য নয়, বৈশ্বিক প্রোপটকেও তিনি বিবেচনা করেন পরম বিশ্বাসে। তাই তিনি লিখতে পারেনÑ
বুকে বাংলাদেশের নয় কোটি মানুষের উষ্ণ ভালোবাসা নিয়ে
আমার এই কবিতাটি এখন সারারাত জেগে আছে অবরুদ্ধ
গেরিলাদের পাশে।
আমার এই কবিতাটি এখন আহত একজন প্যালেসআইনী যোদ্ধার
সামনে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্র নার্স,
যুদ্ধে মৃত লেবাননের সেই স্বজনহারা যুবতীটির জন্য
আমার কবিতাটিই এখন ব্যথিত এপিটাফ;
(স্বাধনি প্যালেস্টাইন তোমার জন্য এই কবিতা)
এই বিপ্লবী কবিই আবার মরমিয়া বাউলের সুরে গেয়ে ওঠেন জীবনের জয়গান। জীবনের জলের রেখা মুছে গিয়ে মানুষ কেবলি একা হয়ে যায়। উদাস বাইল হয়ে পথে পথে ঘুরলেও দুজনের আর দেখা হয় না। ‘এই জীবনে হয় না দেখা/সুবর্ণ সেই আলোর রেখা।’ – এমনই উপলব্ধি নিয়ে কবি গেয়ে ওঠেনÑ
ষেশ বয়সে বিশ্ববাউল
ভিতর-বাহির আউল-ঝাউল
বেঁধেছি ঘর
পথের উপর
সেই পথও কি মিথ্যা বা ভুল!
...
নিজের ঘওে নিজেই বাউল
এই বয়সে আউল-ঝাইল
ঐা ছিলো তা
ছিন্ন কাঁথা
সব হারিয়ে নিঃস্ব বাউল।
(এই বয়সে বিশ্ববাউল)
মহাদেবের কবিতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে বিষয়-গৌরবে যেমন, শিল্পপ্রকরণেও তেমন। সনে হজয় কবি হয়েই তিনি জন্মেছিলেন। দুহাতে অনর্গল লেখার মতা অর্জন করলেও তিনি স্বভাব কবি নন। এই বিষয়টি আমাদের মনে রাখা দরকার। কবিত্ব তাঁর মজ্জাগত। তাই তিনি স্বাভাবিক হয়েও আধুনিক। বাঙালি হয়েও তিনি রচনা করেছেন কবিতার বৈশ্বিকি প্রোপট। আমরা যে মহাদেবকে জানি, তাঁর খণ্ডিত কবিসত্তা। একজন সম্পূর্ণ কবিমানব এখনো অনাবি®কৃত রয়ে গেছে। যে দেশে নিজের তৈরি স্তাবক ছাড়া হাততালি পাওয়া যায় না, যে দেশে নিজের সংবর্ধনার আয়োজন নিজেকেই করতে হয়, সে দেশে একজন মহাদেব সাহার কবিতার বই যে সর্বাধিক ক্রেতার হাতে উঠে আসে, এই ঢের সম্মানের ও আনন্দের।
বেশ কয়েক বছর আগে কবি আল মাহমুদের মগবাজারের বাসায় গিয়েছিলাম কবি জাহাঙ্গীর হাবীবুল্লাহর সঙ্গে। আড্ডার তরঙ্গে একসময় উঠে আসে কবি মহাদেব সাহার নাম। কবি আল মাহমুদ বলেন. ‘দেখো, তোমরা যে যেভাবেই বলো, ষাটে কিন্তু মহাদেব সাহা একজন বড় কবি! ওর নিজের একটা ভাষা তৈরি হয়ে গেছে। ওর কবিতা কিন্তু টিকে যাবে।’ আমিও বিশ্বাস করি এই উক্তির যথার্থতায়। মহাদেব সাহার কবিতার চরণ আওড়ালেই বুঝে ফেলি, এই হচ্ছে মহাদেবের ভাষা। একজন কবি যদি নিজস্ব কাব্যভাষা সৃষ্টি করতে না পারে, তাঁকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় চিিত করার আ কোনো উপায় নেই। মহাদেব সাহা সেই নিজস্ব কাব্যভাষা অর্জনকারী কবিদের মধ্যে একজন। আমরা সহজেই জেনে নিই গুরুত্বপূর্ণ এক বাঙালি কবির নাম মহাদেব সাহা।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?
স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন