ইন্টারনেটের জরিপ থেকে পাওয়া সবচেয়ে ফালতু জোকসের একটা বলি যা শুনে ৮৫% মানুষের-ই হাসি পায়নি :
সাকিব চাকরি হারানোর দেড় বছরের ভেতর কোন চাকরি তো দূরের কথা একটা ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক পর্যন্ত পায়নি। অবশেষে সে একটা চাকরির ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক পেল। সাকিব জীবন বাজি রেখে প্রিপারেশন নিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে উপস্থিত হলো।চাকরিদাতারা বেশি ধানাই পানাই রেখে সরাসরি প্রশ্নে চলে গেলেন।
চাকরিদাতা: আমরা আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবো সরাসরি উত্তর দেবেন।
সাকিব: জ্বি, অবশ্যই স্যার।
চাকরিদাতা: এটি একটি দায়িত্বশীল পদ আপনার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে?
সাকিব: বলেন কি স্যার! দায়িত্ব নেওয়ার অভিজ্ঞতা মানে! আমি আগে যেখানে কাজ করতাম সেখানে সকল ভুল কাজের দায় এবং দায়িত্ব আমাকেই দেয়া হতো !!!
এখানেই শেষ ফালতু জোকস।
এবার আসি ফালতু জোকসের ফালতু শানে-নজুলে।
চাকরি জীবনের সবচেয়ে চরম (পরম নয় কিন্তু) শিক্ষা সম্ভবত নিজের দায়িত্ব সম্পূর্ণ এড়িয়ে অন্যের মাথায় বাটি রেখে রসগোল্লা খাবার শিক্ষা। আপনি যত বেশি ভালো কাজ করবেন আপনাকে ততো বেশি ভয়াবহ কঠিন কাজ দেয়া হবে যার ফলশ্রুতিতে আপনার ভয়াবহ ভুল করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে।
যে বা যারা অন্যের মাথায় বাটি রেখে, কাজগুলোকে সুকৌশলে এড়িয়ে চলে গেছে তাদের কিন্তু ভুল হবার চান্স নাই বললেই চলে। অতএব, তার হাতে থাকবে অফুরন্ত সময় আর তেলের ভান্ডার যা দিয়ে বসের রুমে বসে সে মুগ্ধ করে রাখবে বস কে। আর যে বা যারা কাজ করতে করতে কুকুর-টায়ার্ড হয়ে দিনে একবার কি দু'বার বসের রুমে যাবে তারা শুনবে, "কি অমুক সাহেব, সারাদিন তেমন কিছুতেই তো আপনাকে দেখিনা। বাড়তি কিছু না করেন অফিস থেকে যে বেতনটা নেন অন্তত সেইটা হালাল করে নেন"।
আপণি জ্বি আচ্ছা স্যার বলে গোমড়া মুখো হয়ে প্রস্থান করলেন। ভাবতে থাকলেন যার জন্য জীবন যৌবন সব দিয়ে দিলাম এই তার প্রতিদান!!! সেই আপনার মূল্যবান প্রতিদানের দিকে তাকিয়ে আরেকখানা ফালতু জোকসের অবতারণা করা হইলো:
অফিসের নতুন বড়কর্তা যোগ দিলেন। শুরুতেই কাজের ব্যাপারে তিনি খুব কড়া এটা বোঝাতে চাইলেন। জানিয়ে দিতে চাইলেন কাজের ব্যাপারে কাউকে একবিন্দু ছাড় দেয়া হবে না।
তার-ই মহড়া স্বরুপ চাকরির প্রথম সপ্তাহেই একদিন ভীষণ খেপে গেলেন তিনি। নানা হম্বিতম্বি আর তর্জন গর্জন শেষ করে রেগেমেগে রুম
থেকে বেরিয়েই এক লোককে তিনি পাকড়াও করলেন।
অফিসের সবার সামনে চিৎকার করে বললেন, ‘মাসে কত টাকা মাইনে পাও তুমি, শুনি?’
লোকটা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললো, ‘১৫ হাজার টাকা’।
বড়কর্তা তাঁর মুখের ওপর ১৫ হাজার টাকা ছুড়ে দিয়ে বললেন, ‘এই ৭ দিনে একবারও কোন কাজের জন্য আমার কাছে আসতে দেখিনি, এই নাও তোমার এ মাসের বেতন, আর বেরিয়ে যাও এক্ষুণি, যতসব অকাজের লোক।’
লোকটা বেরিয়ে যাওয়ার পর বললেন বড়কর্তা,
‘প্রয়োজন হলে এভাবেই অফিসের প্রত্যেককে বের
করে দেব আমি। যাই হোক, ওই লোকটা আমাদের
অফিসে কী কাজ করতো ?’
কর্মচারীদের একজন ভয়ে ভয়ে বলল, ‘ স্যার, ও আমাদের এখানে পিৎজা ডেলিভারি কাজ করতো'।
তাই শুধু শুধু গোমড়ামুখো হালের বলদ হয়ে কোন ফায়দা নাই, মাথাকে যখন রসগোল্লার বাটি রাখার জন্য জায়গা করেই দিয়েছেন তখন বরং কাজটা হাসিমুখেই করুন। বলা যায় না কখন কোথা থেকে থেকে কি নাজিল হয়।
জীবনে একজন বস পেয়েছিলাম যাকে মনের গভীর থেকে শ্রদ্ধা করি কারণ তাঁর কাছে থেকে ইতিবাচক অনেক কিছু শিখেছি। যার একটি -
"কাজ করার আনন্দটাকে জানায় আসল কাজ। যেখানেই কাজ করবে, যেই কাজটাই করবে সেখানেই তোমার একটা 'footprint' রাখতে চেষ্টা করবে। ঐ 'আনন্দ আর footprint' -টাই তোমার শ্রেষ্ঠ পুরস্কারের মতো মনে হবে।"
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যার কথা উপরে বলা হয়েছে তিনি একজন অতি উচ্চমানের বুদ্ধিমান মানুষ। ভুজুংভাজুং দিয়ে কাজ করানোতে অতিপটু তিনি।