একটা জোকস দিয়ে আমার বই মেলার গল্প শুরু করি; বাংলাদেশের কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হওয়া নতুন এক ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে গিয়ে প্রবীণ লাইব্রেরিয়ানকে বলল, "আচ্ছা 'বাংলাদেশের নব্বই দশক পরবর্তী সৎ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা' বইটা কি পল-সায়েন্স সেকশনে পাব না হিস্ট্রি সেকশনে পাব?" তখন প্রবীণ লাইব্রেরিয়ান জবাব দিলেন, " না বাছা, ঐটা তুমি রুপকথা সেকশনে পেয়ে যাবে"।
রাজনীতি বিষয়ক প্যাঁচাল শেষে এবার আমার প্যাঁচাল এ আসি। প্রতিদিন রাতে অফিস থেকে ফেরার সময় একুশের বইমেলাতে যায়, উল্টে-পাল্টে সুন্দর গন্ধভরা ঝা-চকচকে নতুন বইগুলো দেখি, বই পছন্দ করি আর নিজের পেছনে হাত দেয় কারণ ওখানেই আমার মানি ব্যাগটা থাকে আর মনটা ভারি করে সামনের দিকে হাঁটতে থাকি (মধ্যবিত্ত হওয়ার ফসল)। কবিতার ষ্টলে দাঁড়িয়ে বেশ খানিকটা সময় অদ্ভুত সুন্দর গলায় অবাক করা সুন্দর সব কবিতা শুনি। কবিতার ষ্টলের এক ভাই আমার কাঙ্গালপনা দেখে শেষমেশ পেন-ড্রাইভ নিয়ে যেতে বলেছে, অনেক কবিতা দিয়ে দেবে সিডি কিনতে হবে না; শুনে আমি যার উপর নাই খুশি হয়ে ভেবেছি একটা সিডি কিনবো আর বেশ কিছু কবিতা পেন-ড্রাইভে ভরে নেব। কত্তো ভালো ভালো সব মানুষ চারপাশে, এইভালো মানুষগুলো না থাকলে আমার মত দীনদুঃখী মানুষের বাঁচা বড় কষ্ট হতো।
আমার জীবনে দুটো বিলাসিতা, ভালো বই আর ভালো সুগন্ধির বিলাসিতা। তাই পেছনে যতই কষ্ট হোক, ঠিক করে ফেলেছি বৃহঃপতিবার অফিস থেকে ফেরার সময় অনেক পছন্দ থেকে সবচেয়ে পছন্দের তিনটা বই আর একটা কবিতার সিডি নিয়ে বাড়ি ফিরবো। আহা, নতুন বই পড়তে পড়তে ঘুমানোর সুখটা এখনই পেতে শুরু করেছি।