somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিভিউঃ ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা (মিশ্র অভিজ্ঞতা B:-) )...

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কর্মযোগে আজ ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় বেশ কিছুটা সময় কাটাতে হয়েছে, হয়েছে মিশ্র অভিজ্ঞতা।

অতএব সরাসরি চলে আসি আজকের মেলাতে হওয়া অভিজ্ঞতায়।

প্রথমে যা আসে তা হলো মেলা প্রবেশ; যার জন্য গুণতে হবে ৩০/- টাকা B:-) , কার কাছে কি জানি না কিন্তু আমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। মেলার পায়ে চলা পথটা বালু দিয়ে ঢেকে দিয়েছে যার ফলাফল কুরবানির গরুর হাঁটের মত ভয়াবহ (চোখ ও দম বন্ধ হবার যোগার), কোথাও কোথাও আবার হোসপাইপ দিয়ে মনের মাধুরি মিসিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছে ফলে পায়ে থাকা ২৫০ গ্রাম ওজনের জুতোগুলো ১ কেজি ক্ষেত্রভেদে দের-কেজিতে পরিণত হচ্ছে।
মাঝে-সাঝেই মানব বিষ্ঠার গন্ধ নাকে এসে লুকোচুরি খেলছে, কার্যকারণ হিসেবে উদ্ধার করলাম কোন বিচিত্র কারণে টয়লেটগুলোতে সারাটা দিন যা জমা হয় তা প্রতি টয়লেটের পাশে গর্ত করে চট দিয়ে ঢেকে সংরক্ষন করে রাখা হয়েছে #:-S !

এই মেলাটা শীতকালে হয় ভেবে একটু স্বস্তি পাচ্ছিলাম দু’টো কারণে।
এক. ধুলো, গরম আর ঘামের অস্বস্তি থেকে মানুষগুলো রক্ষা পাচ্ছে আর দুই. ষ্টলগুলোর মেয়েদের পোষাকগুলো কিছুটা হলেও তাদের আবরণ দিতে পারছে। বেশিরভাগ ষ্টল-এ পণ্য প্রচার, প্রসার ও বিক্রয়ের জন্য চিত্তাকর্ষক নারীদের ব্যবহার করা হয়েছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের পোষাক কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট পণ্য বা আমাদের আচারিত সমাজ অথবা সংস্কৃতির সাথে মানান সই না। একটা আইসক্রীম ষ্টলের মেয়েদের পোষাক দেখে মনে হলো দেশের সব গরম এসে এই ষ্টলে জমা হয়েছে। নারীকে এভাবে পণ্য করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা কি নারীবাদীরা একবারও ভেবে দেখে না নাকি X(( !

এবার এমন একটা বিষয় নিয়ে বলবো যেটা নিয়ে আমি নিজেই বিষম বিভ্রান্ত। একটা টেক্সটাইল কোম্পানি তাদের ষ্টলের পাশে একটা বীভৎস ফোয়ারা করেছে, যেখান থেকে কখনো গলগল করে আবার কখনো কখনো ফিনকি দিয়ে রক্তের রঙে পানি বের হচ্ছে; কেমন রুচির মানুষ টাকা খরচ করে এইধরনের ফোয়ারা তৈরী করে এটা দাঁড়িয়ে ভাবছি এমন সময় পাশে তাকিয়ে দেখি মাঝ বয়সী একজন সাদা চামড়ার পুরুষ ১৭/১৮ বছর বয়সী একটা বাংলাদেশি ছেলের অস্বাভাবিক ভংগিতে (যেভাবে সাধারণত প্রেমিক-প্রেমিকাদের দেখা যায়) হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে B:-) :-B B:-) । কালেচক্রে এইযুগলের সাথে আমার তিনবার দেখা হয়েছে এবং তাদের হস্তযুগল প্রতিবারই আলিঙ্গন বদ্ধ ছিল। দ্রষ্টব্য বিষয় ছিল দেশি ছেলেটার নারীদের ভঙ্গিতে হাঁটা, চোখের টানা কাজল আর সর্ব-অংগে অলংকারের বহর। ব্যাপারটায় কেমন যেন একটা কিন্তু আছে কিন্তু আর এই কিন্তুটা দিনকে দিনকে বেড়েই চলেছে কিন্তু।

যাহোক এসব কিন্তু জনিত বিষয়কে সড়িয়ে এবার আসি শব্দকে ব্যভিচার... দুঃখিত ব্যবহার করে যে প্রচার মাধ্যম পরিচালিত হচ্ছে তা নিয়ে। মেলা প্রবেশ মাত্র ঢাক করে যা তাক লাগিয়ে দেবে তা হচ্ছে মেলা কমিটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মেলাময় ছড়িয়ে থাকা বিকট কিছু SP4-এ বাজানো বিকট কিছু বিজ্ঞাপন যা মেলা থেকে বের হয়ে যাবার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত সিন্দাবাদের ভূতের মতো ঘাড়ে চেপে থাকবে। বিজ্ঞাপনের ছিঁড়িতে ভিমড়ি খাবার দশা হওয়া অস্বাভাবিক না। একটা উদাহরণ দিচ্ছিঃ
নাকি গলার একটা মেয়ে ফোন দিয়ে মেকি গলার একটা মেয়েকে বলছে, কিরে তুই আসবি না? উত্তরে মেকি গলার মেয়ে বলছে, নারে আজ যাব না, ও আমাকে মেলার অমুক ষ্টল থেকে তমুক রান্নার সরঞ্জাম কিনে দিয়েছে তাই অর জন্য রান্না করছি (মানে অর্থটা কিছুটা এমন দাঁড়াচ্ছে যে অমুক ষ্টল থেকে তমুক রান্নার সরঞ্জাম কিনে না দিলে রান্নার বদলে ঝাঁটা পেটা হতো); যাহোক, এবার শোনা যাবে কি রান্না হচ্ছে সে প্রসঙ্গে আর একবার দূর্বল হ্রদয়ের ব্যক্তিবর্গের বাকশক্তি হারানোর ক্ষীণ সম্ভাবনা দেখা দিতেই পারে। যে মেন্যু গুলো বিবৃত হবে তা হলো- খিচুরি ভুনা (!), মাটন, ইলিশ Fry (!), ডিম Omelet (!) !!! এই জগাখিচুরি টাইপ মেন্যু আর বিজ্ঞাপনগুলো শোনার পর আমি মেলায় আর বেশিক্ষণ টিকতে পারিনি, কাজ শেষ হওয়া মাত্র ছিটকে বেড়িয়ে এসেছি তাই আমার মেলা পরিক্রমা এখানেই শেষ করতেই হবে।

তবে আবারও না বলে পারছি না এইসব মেলাগুলোতে সবচেয়ে বেশি যা পাবেন তা হচ্ছে লোভী-লোলুপ চোখ আর ভোগবাদের উলঙ্গ বহিঃপ্রকাশ, যা থেকে পারলে নিজে বাঁচুন আর আপনার প্রিয়জনকে বাঁচান।
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×