লিখব লিখব করে লিখাটা হয়ে উঠছেনা একেবারে । এমন না যে আমি এমনিতে গুছিয়ে লিখি খুব তারপরও এই লেখাটার একটা ব্যাপার আছে । অনেকটা দিনের জন্য আমার বর্তমান ঠিকানাটা আর ‘বাড়ি’ থাকছে না । এই পরিবর্তনটা মনে মনে ভাবলেই একটা শুন্যতা পেয়ে বসে কেমন ।
মানে আমি যে কাজটা করে মাইনে পাই সে কাজটায় একটু ভাল মন্দ খেয়ে পরে বাঁচতে হলে এই পদক্ষেপটা জরুরি ছিল, আর নিজের গুণ তো খুব বেশি নেই- সেটাও একটু বাড়ানো দরকার । পড়াতে খুব একটা পারি না, কিন্তু এই যে চেষ্টা করি তাতে আমার খুব আনন্দ লাগে । সে কাজটাও আরেকটু ভাল করে করতে পারব সেটাও তো ভালই যেখানেই পড়াই না কেন ।
যাওয়ার আগে একবার গ্রামে যেতে পারলে ভাল লাগত, হল না। এমন না যে আমি গ্রামে থাকি কিংবা থাকার চিন্তা করি । তবে ঐখানে একটা টান কাজ করে, কেন করে তার ব্যাখ্যা নেই ।
যাওয়ার আগে সবার সাথে টেবিল টেনিস খেলতে পারলে, বা আরেকবার সেইন্ট মার্টিন্সে যেতে পারলে খুব ভাল লাগত । হলো না । কতদিন কনসার্টে যাইনি, যাবার আগে মাইলস বা ওয়ারফেইজের একটা কনসার্টে যেতে পারলে ভাল লাগত । এই দুটোই টিকে আছে । আর্টসেল, অর্থহীন, ব্ল্যাক তো আর নেই । সেটাও হল না । জয়নাল ভাই বলেন আর জসিম ভাইয়ের দোকান বলেন - আড্ডাটা আর হবে না । হেলাল বা ইয়াসিন কেউই আর আগের মত থাকবে না । অদ্ভুত । হবার মধ্যে শুধু শেষ ফুটবল ম্যাচটা খেলতে পারা । খুব বাজে ভাবে হেরেছি কিন্তু খেলাটা অনেকদিন পরে হয়েছিল । কতদিন তাবাকে আর বসা হবে না আমাদের, তাবাকটা কী গুলশান একে থাকবে ফেরত আসলে?
আমার গ্যারেজের ঘরটায় আর কেউ থাকবে না । ভাবা যায় ! হঠাৎ করে পুরান ঢাকা অনেক দিন যাইনি, তবে সুযোগটাও আর রইবে না । কেউ এখান থেকে রাত বিরাতে হাঁটতে বের হবে না । রাত করে ফিরবে না ।
আমার ছেলেবেলার আনন্দ, কৈশোরের আবেগ, যৌবনের আপাত ভুল - সবই এই শহরে । এই দেশে । এই ঘরে বসেই ৫০ বছরের আগে ৫০টা দেশ ঘুরব বলে ঠিক করেছিলাম । এত সবটা ছেড়ে যাচ্ছি মানে আসলেই বড় হয়ে গেছি এটা স্বীকার করে নিচ্ছি । ভাবতেই কেমন করছে ।
“ভাল থেকো মেলা, লাল ছেলেবেলা, ভাল থেকো"
আগস্ট ৭, ২০২১
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:১১