গতকাল ছিল আন্তর্জাতিক সুখ দিবস (International Day of Happiness) । সব সুখ আসলে ঠিক না । আদিবাসীদের এখনও ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বলে আমরা বাঙালি অহংকারে সুখ পাই যেমনটা হিন্দুদের বেধর্মী বলে সুখ পান তারস্মরে ওয়াজ করা মসজিদের ইমাম সাহেব । আদিবাসীদের গ্রাম সরিয়ে সাজেক ঘুরতে যাওয়া বাঙালি মুসলিম আমি বুঝতে পারব না ওদের সুখ খুঁজতে আমি বাঁধা দিচ্ছি কিনা ।
"ইকোপার্ক নয়, আহা আদিবাসী গ্রামগুলো বাঁচো
চাঁদমারি না, আহা শতপ্রাণ ঝর্ণাগুলো বাঁচো
জাতিসংঘ নয়, আহা ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলো বাঁচো ।"
সিরিয়া, কাশ্মীরের বাচ্চাগুলো আমার আপনার মত গতকালের মত বৃষ্টিতে খুশি হতে পারে না । একটু বেঁচে থাকতে পারা, আব্বু পরের দিন বেঁচে থাকবে এই নিশ্চয়তটুকু ওদের সুখ দিবে, পরিমাণটাও ঈর্ষণীয় ।
"দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া স্বপ্নগুলোকেই আপনি এই টেরাকোটায় দেখতে পাচ্ছেন ।"
সেদিন এক বন্ধুর আপনজন দেশ ছেড়ে ভারতে চলে গেছে । চলে যেতে বাধ্য হয়েছে বোধহয় । নিজের দেশে নিজের জমিতে মানুষ আর থাকতে চায় না, পারে না । সংখ্যাগরিষ্ঠ অহংকার আমাকে সেটাও দেখতে দেয় না বোধহয় । সুখ পাবে অন্যের দেশে তারা?
"এ দেশেরই পাখি ওরা; কাহ্নুপার কাল থেকে আছে "
আজ আট বছর হল শেখের দল ক্ষমতায় । অথচ পুলিশি রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে দেশটা । সেনারা জায়গা, অর্থনীতি, ক্ষমতা সব নিয়ে যাচ্ছে আর্মি দ্বারা নির্যাতিত হওয়া দলটার আমলে । সিভিলিয়ান আমি সুখ কী পাব?
"তোমরা ক্ষমতাধর, একে ধরো ওকে মারো
ব্যথা পেলে যদি কাঁদি ছুটে আসে হুঙ্কারও ।"
তারপরও এই শহুরে গড়পড়তা আটপৌরে জীবনে আমরা পরিবার, বন্ধু আর প্রিয়মুখকে আঁকড়ে ধরে সুখে থাকতে চাই । সকালে আজানটা বা সূর্যটা নতুন দিনের কথা বলে হয়ত । নৈমিত্তিক জীবনাচরণে অভ্যস্ত আমরা ওর মাঝেই সুখ খুঁজি ।
"জীবিকাচাতুর্য আছে; প্রেম নেই তোমাদের কাচের শহরে ... ...
যা ঘটে পুনরাবৃত্তি; পার্থক্য কেবল প্রকরণে ।"
সবাই সুখ পাক । শুভ হোক সবার ।