somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগের সাফল্য, সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা (পর্ব -১)

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলা ব্লগ সম্ভাবনাময় একটি ক্ষেত্র। নতুন নতুন সম্ভাবনার হাতছানি সঙ্গে নিয়ে বাংলা ব্লগ এগিয়ে যাচ্ছে। একসময় ব্লগকে ব্লগাররা তাদের মত প্রকাশের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করেছে। কমিউনিটি ব্লগের কল্যানে মতামত খুব সহজেই আরও অনেকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। মত প্রকাশের চর্চা কালক্রমে বিকল্প মিডিয়ার রূপ নিয়েছে। বর্তমানে বাংলা ব্লগের সম্ভাবনার বড় জায়গাটি বিকল্প মিডিয়ার ক্ষেত্রে। অনেক ব্লগার এরইমধ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলা ব্লগ একটি বিকল্প গণমাধ্যম চরিত্র নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সংবাদের বিকল্প মাধ্যম হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে ব্লগারদের ভূমিকা সবার আগে। নানা ইস্যুতে ব্লগাররা সরব হয়েছেন ব্লগে। ঘটে যাওয়া অনেক খবর ‘মূলধারার মিডিয়ার’ আগে ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা ব্লগ এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে একইসাথে একজন ব্লগার লেখক, প্রকাশক, সম্পাদক, পাঠক, সমালোচক হয়ে উঠতে পারছেন।

বাংলা ব্লগের সাফল্য, সম্ভবনা ও সীমাবদ্ধতাগুলোকে কয়েকভাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে বাংলা ব্লগের বয়স খুব বেশি হয়নি। ফলে ব্লগ এখন বিকাশমান একটি মাধ্যমে। গত কয়েক বছরের চর্চায় বাংলা ব্লগের যেসব সাফল্য, সম্ভবনা ও সীমাবদ্ধতা সামনে হাজির হয়েছে তার ভিত্তিতেই এই লেখা। এসব সাফল্য, সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতাকে কয়েকটি সাধারণ বৈশিষ্ট্যে অন্তর্ভূক্ত করে আলোচনা করা হয়েছে। এর বাইরেও সাফল্য, সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। এই আলোচনার ক্ষেত্র কমিউনিটি বাংলা ব্লগ। ব্যক্তিগত বাংলা ব্লগের ক্ষেত্রে এই আলোচনার বিষয়বস্তু না মেলার সম্ভাবনাই বেশি। তবে কিছু কিছু বিষয়ে কমিউনিটি ব্লগের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ব্লগও অবদান রাখতে পারে।

মাত্র কয়েক বছরে নানা ক্ষেত্রে বাংলা ব্লগের সাফল্য এসেছে। আমি বাংলা ব্লগের সাফল্যগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করতে চাই। এগুলো হলো- ১. মানবিক উদ্যোগ ২. এক্টিভিজিম ৩. শক্তিশালী কমিউনিটির সৃষ্টি ৪. ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার বিস্তার এবং ৫. বিকল্প সংবাদ মাধ্যম। এই পাঁচটি ক্ষেত্রে বাংলা ব্লগ সাফল্য দেখিয়েছে।

১. মানবিক উদ্যোগ- বাংলা ব্লগের শুরু থেকেই বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগে ব্লগাররা একত্রিত হয়েছে। মানবিক উদ্যোগে ব্লগের প্রথম সাফল্য শিশু প্রাপ্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাশ্বত সত্যের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে ব্লগাররা একত্রিত হয়ে টাকা তুলেছে। জনি নামে মা হারা শিশুটির চিকিৎসা ও ভরনপোষনের জন্য কিছু ব্লগার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলকানায় বিডিআর বিদ্রোহের সময় গুলিবিদ্ধ হওয়া নিরীহ কিশোর চা-বিক্রেতা আকতার যখন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর পথে তখন তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন ব্লগাররা। ২০১১ সালের আগস্টে অভাবের দায়ে সন্তান বিক্রি করতে চাওয়া এক মায়ের পাশে দাঁড়ান কয়েকজন ব্লগার। অনেকটা নিরবেই সেই দুঃখিনী মাকে পুনর্বাসন করার কাজটি করেন তারা। এভাবেই নানা ক্ষেত্রে নানাভাবে ব্লগাররা মানবিক উদ্যোগে অংশ নিয়েছেন। ব্লগার আইরিন সুলতানা ব্লগের মানবিক উদ্যোগগুলো নিয়ে লেখেছেন, “ব্লগিং অতঃপর যখন ব্যক্তিগত যোগাযোগের পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় তখন এই যুথবদ্ধতা সামাজিক দ্বায়িত্ব পালনেও তৎপর হয়ে ওঠে। তাই কখনো ’প্রাপ্তি’ নামের শিশুটির পাশে, কখনো ‘শ্বাশ্বত সত্য’ নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের পাশে, কখনোবা ’উপমা’ নামের কিশোরীর পাশে, বহ্নি নামে তরুণীর পাশে, নয়তো নাহিদা নামে ব্লাড-ক্যান্সারে আক্রান্ত ছাত্রীর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্লগাররা। সামাজিক অবক্ষয় ও অসহায়ত্ব নিয়েও ব্লগাররা সোচ্চার । রাহেলা হত্যার বিচারের দাবিতে কিছু ব্লগার বারবার আমাদের বিবেকের দরজায় আঘাত করে গেছেন। জনি নামে মা হারা শিশুটির চিকিৎসা ও ভরনপোষনের জন্য কিছু ব্লগার তড়িৎ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। মিরপুরে ’আমাদের পাঠশালা’তে আর্থিকভাবে সহায়তা করার প্রদানের জন্য পাঠশালা বান্ধব সংগ্রহে সামহোয়্যার ইন ব্লগের কিছু ব্লগারদের কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে ‘মেঘনাপাড় ধীবর বিদ্যানিকেতন’ নিয়ে মূলত প্রথম আলো ব্লগের কিছু ব্লগারদের নিয়মিত উদ্যোগগুলো প্রসংশার দাবি রাখে। ২০০৭ -এ চট্টগ্রামে ভূমিধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থদের বা ‘সিডর’ পরবর্তীকালে ত্রানসংগ্রহে অথবা শীতার্তদের জন্য বস্ত্র সংগ্রহে ব্লগারদের আন্তরিক উদ্যোগে কমতি ছিলনা।” (আইরিন সুলতানা, সাময়িকী ডট নেট, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। অন্যদিকে ব্লগার শেখ আমিনুল ইসলাম লেখেছেন, “বাংলা কমিউনিটি ব্লগগুলো মানবিকতাবোধকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে। আর্ত্মামানবতার সেবায় ব্লগাররা যার যার অবস্থান থেকে সবাই নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন, এগিয়ে আসছেন। প্রায় প্রতিটি বাংলা কমিউনিটি ব্লগে অসুস্থ ও অসহায় ব্যাক্তিদের জন্য সাহায্য চেয়ে পোস্ট আসে। কর্তৃপক্ষ সেই সব পোস্টগুলোকে দ্রুত বিবেচনা করে নির্বাচিত পোস্ট বা স্টিকি পোস্টে রাখেন সবার দৃষ্টি আকর্ষনে জন্য। ব্লগাররা যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। শীতার্তদের জন্য প্রথম আলো ব্লগের ব্লগারদের উদ্যোগ উল্ল্যেখ না করলেই নয়। যেখানেই মানবতা কষ্ট পায়, সেখানেই ব্লগারদের বিবেক আত্নদংশনে অস্থির করে তোলে সাহায্য করার তাগিদে। রক্তের প্রয়োজনে যেকোন পোস্ট এলেই বা কারো অসুস্থতার খবর হলেই নিমিষেই ব্লগের পরিবেশ বদলে যায়। সবাই যার যার স্থান থেকে সাহায্যে এগিয়ে আসে।” (শেখ আমিনুল ইসলাম, সামহ্যোয়ারইন ব্লগ)।

২. এক্টিভিজিম- অনলাইন ও অফলাইন এক্টিভিজমে ব্লগারদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। ভেলরি টেলরের পক্ষে ব্লগাররা জোরদার অনলাইন এক্টিভিজম পরিচালনা করেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি নিয়েছিল ব্লগাররা। সেটি ছিল ব্লগারদের অফলাইন এক্টিভিজিম। ২০১১ সাল ছিল ব্লগারদের এক্টিভিজিমের গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। বছরের ৩ জুলাই মার্কিন কোম্পানি কনোকো-ফিলিপসের সঙ্গে অন্যায্য চুক্তির প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন ব্লগার দিনমজুর নিকের অন্যতম লেখক অনুপম সৈকত শান্ত। এটিই বাংলা ব্লগের ইতিহাসে মূলধারার কোনো আন্দোলনে অংশ নিয়ে ব্লগার গ্রেপ্তার হওয়ার প্রথম ঘটনা। ২০১১ এর সেপ্টেম্বরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি অর্থসহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে বেশ ব্লগাররা ব্লগে এ নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেছেন। কয়েকজন ব্লগার মিছিল-সমাবেশেও সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। এর একপর্যায়ে ১ অক্টোবর গোয়েন্দা পুলিশ ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে থানায় ডেকে নিয়ে আটক করে। প্রায় ১৮ ঘণ্টা আটকে রাখার পর মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ব্লগারদের এক্টিভিজম থামেনি। তিতাস নদীর উপর তৈরি করা রাস্তার বিরুদ্ধে ব্লগাররা ব্লগে লেখেছে, সরেজমিনে দেখে এসেছে ব্লগে তুলে ধরেছে সর্বশেষ অবস্থান। নিঃসন্দেহে এই ধরনের এক্টিভিজম ব্লগের সাফল্যকে বিজ্ঞাপিত করে। ব্লগের এক্টিভিজিম নিয়ে ব্লগার আইরিন সুলতানা লেখেছেন, “নিজ নিজ পেশাগত গণ্ডি ছাপিয়ে জাতীয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে ব্লগাররা এক কাতারে দাঁড়িয়েছে নির্দ্বিধায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণসাক্ষর সংগ্রহ ছিল এক বলিষ্ঠ উদ্যোগ। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের প্রশয়দাতাদের বর্জন করার সচেতনতায় ব্লগ ছিল মুখর। ব্লগাররা তেমনিভাবে সচেতন ছিল টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের বিরোধীতায়। আন্তর্জালে কখনো কখনো যখন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তথ্য-উপাত্তগুলোর স্বল্পতা অনুভব হয় তখনই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্লগে এতো বেশী তথ্য উঠে আসে যে হলফ করে বলা যায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলা ব্লগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষায় আন্তর্জালে একটি সম্পূর্ণ তথ্যাগার হয়ে উঠবে। বিজয়ের মাসে ব্লগের পাতায় যেমন জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায় তেমনি হাইতিতে হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পে হতাহতদের আর্তনাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শোকাবহ চিহ্ন উঠে এসেছে ব্লগ-প্রচ্ছদে। খুব সাম্প্রতিককালে জলবায়ু বিপর্যয় নিয়ে একটি নাড়াচাড়া চোখে পড়ছে ব্লগারদের মধ্যে যা তরুণ ব্লগার এবং সর্বোপরি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক ইতিবাচক স্বাক্ষর রাখবে বলে আশা করা যায়।” (আইরিন সুলতানা, সাময়িকী ডট নেট, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০)।

৩. শক্তিশালী কমিউনিটির সৃষ্টি – বাংলা ভাষায় যারা ব্লগে লেখছেন তাদের কমিউনিটি কেবল একটি ব্লগ নির্ভর থাকেনি। বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি গুরুত্বপূর্ণ নানা ইস্যুতে ব্লগাররা শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছেন। আমার ব্যক্তিগত অভিমত হলো, বাংলা ব্লগের সবচেয়ে বড় সাফল্য বৃহৎ এবং শক্তিশালী একটি কমিউনিটির সৃষ্টি। ‘ব্লগার জেনারেশন’ নামের শব্দযুগল জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই শক্তিশালী কমিউনিটির জন্য। বৃহৎ কমিউনিটি বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছে পারছে। কমিউনিটির মাধ্যমে যুক্ত থাকার ফলে যে কোন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া ব্লগারদের জন্য সহজ হচ্ছে।

৪. ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার বিস্তার- ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বাংলা ব্লগ সাইটগুলো। ইন্টারনেটে বাংলা বিষয়বস্তুর বেশিরভাগ বিভিন্ন ব্লগ সাইটের। এই কথার প্রমাণ পাওয়া যাবে গুগল বা ইয়াহু সার্চ ইঞ্জিনে বাংলায় কোন বিষয় অনুসন্ধান করলে। অনুসন্ধান ফলাফলের প্রথম দিকে থাকা বিষয়বস্তুগুলো ব্লগ সাইটের। বেশিরভাগ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার বিশাল আর্কাইভ তৈরিতে ব্লগারদের অবদান রয়েছে। বাংলা ব্লগসাইটগুলোতে প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ১ হাজার পোস্ট লেখা হচ্ছে। এই লেখাগুলোর বিষয়বস্তু বৈচিত্রপূর্ণ। ভবিষ্যতে গবেষণাকাজে বাংলা ব্লগের আর্কাইভকে কাজে লাগানো সম্ভব। একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এখানে যুক্ত করতে চাই। আমার যখন ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলা কমিউনিটি ব্লগিং শুরু হয় তখন আমি নিজে কম্পিউটারে বাংলায় লেখতে পারতাম না। পরবর্তীতে ব্লগিং করবো ভেবেই বাংলা টাইপিংটা শিখে ফেলি। ব্লগে পোস্ট এবং কমেন্ট দিতে দিতে বাংলা টাইপিং বেশ ভালোভাবে শিখে গেছি। এখন এই শিখে যাওয়াটাকে ইন্টারনেটে অন্য আরো অনেক সাইটে বাংলা লেখার কাজে ব্যবহার করছি। যেমন- আমি এখন ফেসবুকে বাংলায় লেখতে পারছি, বাংলায় ইমেইল করতে পারছি, মেসেঞ্জারে পরিচিতদের সাথে বাংলায় চ্যাট করতে পারছি, এমননি অনলাইন বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় লেখতে পারছি বাংলায়। আমি মনে করি এভাবে অনেক ব্লগারই ব্লগে এসে ভালোভাবে বাংলা টাইপিং শিখেছেন। পরবর্তীতে এই অভিজ্ঞতা তারা ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইটে ব্যবহার করছেন। তাছাড়া ব্লগিং সাইটগুলো সহজে বাংলা লেখার বেশ কিছু টুল যুক্ত করেছে। এটিও বেশ সুবিধাজনক।

৫. বিকল্প সংবাদমাধ্যম: বিকল্প সংবাদ মাধ্যম হিসেবে ব্লগ এরইমধ্যে সফলতার প্রমাণ দিয়েছে। অনেক সংবাদ ব্লগেই প্রথম এসেছে। আবার কিছু কিছু সংবাদ যখন মূলধারার মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছিল না তখন ব্লগাররা তার প্রচারের দায়িত্ব পালন করেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্লগে প্রকাশিত খবর পরবর্তীতে মূল ধারার মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। ব্লগের বিকল্প সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠা নিয়ে ব্লগার ফিউশন ফাইভ লেখেছেন, “ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল ও কলেজের বসুন্ধরা শাখার শিক্ষক পরিমল জয়ধর কর্তৃক ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় মূলধারার গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল অস্বাভাবিক, রহস্যময়। অচিরেই ক্ষুব্ধ মানুষের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে বিকল্প গণমাধ্যম—ব্লগ ও ফেসবুক। সাহস নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন অনেকেই। এটিই বছরের সবচেয়ে সফল গণআন্দোলন, যা সংগঠিত হয়েছে পুরোটাই বিকল্প গণমাধ্যমের ওপর ভর করে। নাগরিক সাংবাদিকতার ভালো উদাহরণ হিসেবে বঙ্গোপসাগরের ভয়াল দূষণ, যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া লিবিয়ার সীমান্ত থেকে সরাসরি আপডেট, চট্টগ্রামের ইপিজেড পরিস্থিতি কিংবা সত্যিকারের ডিজিটাল হয়ে ওঠা গ্রামটির কথা যেমন বলা যায়, তেমনি আনা যায় মূলধারার গণমাধ্যমে চাপা দেওয়া সেই মর্মন্তুদ কাহিনী কিংবা ২৬ নাবিক পরিবারের আর্তনাদের গল্প, ভুলে যাওয়া বিপ্লবী নারী কিংবা মিডিয়ার অন্ধকার।” (ফিউশন ফাইভ, ফিরে দেখা ২০১১ : বছরজুড়ে সামহ্যোয়ারইন ব্লগে যা কিছু আলোচিত-সমালোচিত, ৩০ ডিসেম্বর ২০১১)

* একুশে বইমেলা ২০১২ তে শুদ্ধস্বর থেকে প্রকাশিত বাংলা ব্লগের ইতিবৃত্ত বই থেকে।

[চলবে]
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×