somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের স্বার্থ যে কোন নেতা বা দল থেকে অনেক বড়

২৫ শে জুলাই, ২০১১ বিকাল ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৪০ বছর দীর্ঘ্য সময়। আমাদের অনেকের-ই জন্ম হয়নি সে সময়। ঐতিহাসিক বীরদের প্রাপ্য। সম্মান দেয়া এক কথা আর সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে বতর্মানে দেশ চালানো অন্যকথা। দেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোন সিদ্ধান্তে সেই ইতিহাস বারবার টেনে আনলে আমরা সামনে না এগিয়ে পিছিয়ে পড়ব। সত্যিকথা বলতে কি, পিছিয়ে পড়ছি। আর এতো আগের ইতিহাস-ই যদি প্রতিদিনের সিদ্ধান্ত গ্রহনের নিয়ামক হয় তবে আরো আগের ইতিহাস নয় কেন?
মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ব ছিল দুইটি ব্লকে বিভক্ত। রাশিয়ান ব্লকে ছিল ভারত; এ্যামেরিকান ব্লকে ছিল পাকিস্তান। সরল হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তান-সরকার সমথর্ন পেল এ্যামেরিকা, চীনের। আর রাজনৈতিক অংকে পৃর্বপাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী বা বাংলাদেশের স্বাধিনতাকামিরা হলো ভারতের মিত্র (শত্রুর শত্রু)। সেইসময় ভারতের তিন সীমান্তই ছিল শত্রু ভাবাপন্ন। উত্তরে চীন, পশ্চিমে পাকিস্তান, পুর্বে পাকিস্তান। ভারত বুঝতে পেরেছিল, এ দেশ স্বাধীন হলে চীরকৃতজ্ঞ ও দুর্বল বাংলাদেশ সীমান্ত কোন সমস্যা হবে না। চাই কি এদেশকে সময়ে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবেও নিয়ে আসা কঠিন কিছু হবে না। শেখ মুজিব অবশ্য এই মনোভাব আঁচ করতে পেরে যুদ্ধ শেষে দ্রুত ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাবস্থা করেছিলেন।
গত ৪০ বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কোল্ড ওয়ার বন্ধ হয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গায় পৃথিবীর সবচাইতে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে এ্যামেরিকা। ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থে ভোল পাল্টে হয়েছে এ্যামেরিকার বন্ধু। এ্যামেরিকাকে তুষ্ট করার জন্য ১০৯২-এ ইসরাইলের সাথে পুর্ণ কুটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এতে যা হয়েছে, তাহলো অর্থনৈতিক লাভ। বিশ্বের বড় বড় কম্পানীগুলো ভারতে এসে বিনিয়োগ করেছে। কল সেন্টার ব্যাবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছে। ভারতের কেউ কিন্তু সোভিয়েত-ইউনিয়নপন্থী পুরোনো আবেগ ধরে রাখেনি, বরং কিকরে জেনারেল মটরস, নাসা, এম আইটির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো ভারতীয়দের দখলে আসে সে চেষ্টা করে চলেছে। এ্যামেরিকার সাথে সম্পর্ক এতোই জোরদার হয়েছে যে ইরান যেথানে শান্তীর কাজে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরনেই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হয়েছে, ভারত সেখানে বীরদর্পে পরমানু বোমার পরীক্ষা করার পরেও মার্কিন সহায়তা বেড়েছে বই কমেনি।
বাংলাদেশীরা বেশ আবেগপ্রবণ। তাদের আবেগকে অপব্যাবহার করে মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে ভারত মহানুভব, এদেশের স্বাধীনতা চেয়েছে তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ আসাম, মিজোরাম, ত্রিপুরার মানুষদের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তারা একচোখা। আমাদের সনকার আবার স্বাধীনতাকামীদের দমনে সর্বোচ্চ সহায়তা করছে (সব ফেলে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা তদন্ত করে, যার স্বার্থ পুরোটাই ভারতের)। আরো আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে আমেরিকা আমাদের শত্রু কারন তারা ৭১-এ পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। মুল কারন হয়তো ভারতের ব্যাবসায় আমরা ভাগ বসাতে না পারি।
আজকের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কে শত্রু কে মিত্র তা জানতে হলে আমাদের দেখতে হবে আজকে এদেশের সাথে কে কিরকম আচরন করছে। একটি কথা অনেকেই বুঝতে চায়/পারে না যে পাকিস্তান প্রেমিক বলে বাস্তবে এদেশে কারো খাকা সম্ভব নয় কারন আজ পাকিস্তান ১৩০০ মাইল দুরের এক দেশ যে নিজেই সমস্যার ভারে নিমজ্জিত। এদেশে কিছু করে কিভাবে পাকিস্তানের স্বার্থসিদ্ধী হবে? তবে ক্যাবল টিভির প্রভাবে এদেশে গজিয়ে উঠেছে কিছু হোমগ্রন ইন্ডিয়ান। এরা কিন্তু দীর্ঘদিনের মনস্তাত্বিক নব সম্রাজ্যবাদের ফসল। মজার ব্যাপার হল এদের একটি অংশ ৭১-এর যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবীতে সোচ্চার হলেও এদেশের ভাষা, শিণ্প, অর্থনিতী, ও সম্মানের উপর নগ্ন ভারতীয় আক্রমন দেখেও না দেখার ভান করে নির্লিপ্ত থাকে।
একজন বিবেকবান মানুষ হিসেবে আমি সব অপরাধের বিচার চাই তবে যে পাত্র দিয়ে পানি তুলব, তার ছিদ্র আগে বন্ধ করা দরকার। নয় কি? আমার প্রশ্ন: যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে আমাদের জন্মের আগে এবং প্রকৃত অপরাধীদের ৯০% (পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য) –কে বিচার করার মতো আন্তর্জাতিক সামর্থ আমাদের নেই সেটা বেশী গুরুত্বপুর্ন না কি চোখের সামনে সংঘটিত হওয়া অপরাধের বিচার হওয়া বেশী প্রয়োজন? কেন বিগত বছরগুলোতে আমরা আন্তর্জাতিকমহলে দুর্নিতীগ্রস্থ দেশ হিসেবে উল্লেখিত হয়েছি? কেন গত সরকারের সময়ে আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো চোরেরা আজ আমাদের ভাগ্য নির্মাতা? হয়তো এসব বলতে নেই। চোদের চোর বললে হয়তো জুটবে দেশদ্রোহী খেতাব বা অনেকেই হয়তো বলবে আমি পাকিস্তানপন্থী (!), আমি হয়তো যুদ্ধোপরাধের বিচার চাইনা।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×