আচ্ছা , মেয়েরা তাড়াতাড়ি ম্যাচিয়ুর (ফিজিক্যালি এবং মেন্টালি) হয়ে যায় বলেই কি তাদের শীঘ্রই বিয়ে দিয়ে দেয়া হয় ?
নাকি তাড়াতাড়ি বিয়ে হওয়ার জন্যই তাদের ম্যাচিয়ুর হয়ে উঠতে হয় ?
****
কয়েকদিন পরই পরই ইউরোপীয় বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন ।একটাতে ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় মানসিকভাবে ১০ বছর এগিয়ে তো অন্যটাতে আবার পিছিয়ে ।আমরা পাঠকরা কনফিউজড যে কোনটা ছেড়ে কোনটা বেছে নেব ! কোন গবেষক বলেন মোবাইল ফোন পকেটে রাখলে শুক্রাণু নষ্ট হয়ে যায় , আবার কেউ বলেন ব্যাপারটা ভুয়া ।কারো মতে হাঁচির সময় একমূহুর্তের জন্য হৃদপিন্ড কাজ থামিয়ে দেয় , যদিও তবে এই আবেগি প্রমাণের কোন বাস্তব ভিত্তি আছে কিনা কে জানে !! আবার ভৌগলিকভাবেও নিয়মের ব্যাতয় ঘটে ।গর্ভাবস্থায় নারী পুরুষের দৈহিক মিলন এদেশের ডাক্তার সমাজ কর্তৃক ভয়াবহ রকমের নিষিদ্ধ , যদিও ইউরোপীয় ডাক্তারটা এ নীতি শুনে হেসে গড়াগড়ি খায় , তাদের মতে এটা তো বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য মঙ্গলজনক !
এসব অপ্রাসঙ্গিক কথা এইজন্য বললাম যে আসলে গবেষকদের কথায় নাওয়াখাওয়া ছেড়ে দুঃখ করাটা হয়তো বোকামি ।কারণ নিত্যনতুন ধারনা যে প্রতিদিনই আসছে !
***
অনেকের মতেই মেয়েদের বেশিদিন অবিবাহিত রাখা অনুচিত ।আজকালকার মেয়েরা অসময়ে ডাঙ্গর হয় ওঠে বলেন তাদের এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ।পাড়ার কোন ছেলের মনচুত্যির আগেই বেটি অন্যের ঘরে বিদায় হোক ।কথা হচ্ছে বেটি অন্যকে প্রেমের জালে ফেলবে সেটা দোষ , আর যে ছেলে পড়বে সে বুঝি নমং সাধু সাধু !!
আর বেটি , তোমারই বা এমন ঘনঘন প্রেমের দরকার কি ? ব্যাটা প্রস্তাব দিলেই প্রেম করতে হবে সেটা কেমন কথা ?
তবে এই শীঘ্রই বিবাহ রীতিতে যে সব মেয়েরই অখুশী হয় তা বলা উচিত না ।উদাহরণ দিই , আমাদের পাশের একহিন্দু প্রতিবেশীর মেয়ের ক্লাস টেনে থাকতেই গতবছর বিয়ে হয়ে গেল ।তার বয়স স্পষ্টত ১৫ কিংবা ১৬ ।এতে যে মেয়েটি দারুণ আগ্রহী ছিল তা ভেবে আমি অবাক হই ।আমাদের আরেক প্রতিবেশী হুমকি দিল যে বিয়ের দিন এলাকার কমিশনার ডেকে ধরিয়ে দেয়া হবে ।হয়তো বা সেই ভয়ে ওনারা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করে আসলেন ।মেয়ে এবার এসএসসি দিয়েছে এবং তার জামাই স্টিল দোকানের কর্মচারী ।মেয়েরা আসলেই খুব মেধাবী । আমি এখানে ছেলেটাকে অবজ্ঞা করছি না , হয়তো মেয়েটা এরচেয়ে ভালো কাউকে পেত । কে জানে , অশিক্ষিত পরিবার মেয়েটার জীবন হাতে ধরে নষ্ট করে দিয়েছে কিনা ! এখানে আসল পয়েন্ট , মেয়েটা বেশ খুশি ।সে দিব্যি বাপের বাড়ি-শ্বশুড়বাড়ি যাওয়া আসা করছে ।আর এখানে যত বিপদ তার অসম্ভব সুন্দরী হওয়া , সুন্দরীদের খালি রাখা অনেকেই সমীচিন মনে করেন না ।
অপ্রিয় সত্য যে , অনেক শিক্ষিত হিন্দু এখনো এই ধারণা পুষে বসে আছে ।কেউ ভুল বুঝবেন না , এখানে আমি ধর্মকে কটাক্ষ করছি না , বলছি সামাজিক দিকটা ।মুসলমান সমাজে বাল্যবিবাহ উল্লেখ্যযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে ।একজন মুসলমান এমন কাজ করতে গেলে অনেক আত্মীয়ের বাঁধার মুখে পড়ছে ।কিন্তু সব হিন্দু পরিবারের বেলায় এটা হচ্ছে না ।অনেক আত্মীয় স্বজন এটাকে সাপোর্ট দিচ্ছে ।ভুলটা সেখানেই ।
অনেকেই বলতে পারেন , তাহলে আপনি বলছেন মেয়েদের ৩০ বছর বয়সে বিয়ে করতে ? উত্তরে একটা কথাই বলতে পারি , কেন রে ভাই ! ১৮ আর ৩০ এর মাঝে কোন সংখ্যা নেই বুঝি ! ম্যাচিয়্যুর হয়ে গেছে বলেই কি বিয়ে করে ফেলতে হবে ? শিশুপার্কের ছোট ছোট রাইড চালাতে পারেন মানেই কি আপনি ফর্মুলা ওয়ান রেসার ? নিশ্চয়ই না !
শুধুমাত্র সন্তান পয়দা করার সিস্টেম জানাটাই কিন্তু বড় হবার লক্ষণ নয় ।