খুব বুদ্ধিমান ছেলে ছিল একেবারে ছোটকাল থেকেই,একদমই পড়তে চাইতো না।অনেক দুস্টুমি করতো।ছেলেটার নাম বাবলু।
মা অনেক আদর করতো বাবলু কে,অজানা কারনেই।বাবা খুব খারাপ ভাবে মারতো,বকতো বাবলুকে।আজ ও বাবলু জানে না কেন তাকে কেউ ই পছন্দ করতো না।
মা মারা গেছে ৪ বছর হলো।
বাবলুর বয়স এখন ২৩ বছর,কেউ এখন আর তাকে আদর করে না।বড় হয়ে গেছে সে হয়তো।মায়ের মতো কেউ নাই এ জগতে আর।মায়ের মতো কেউ ই আদর করবে না।মা আর কোনদিন ই বাবলুর কাছে আসবে না।মা অনেক ভালো ছিলেন,সবার মা ই অনেক ভালো হয়ে থাকে,তার পরেও বাবলু জানে তার মা আসলেই অনেক অনেক ভালো ছিলেন।
সবাই তাকে বলে এতো বড় হয়ে গেছো,দায়িত্ববান হও,কাজ করো,লেখাপড়া করো,এই করো,ষেই করো...
মায়ের মতো কেউ তো আর ডেকে বলে না,বাবলুবেটা আয়,তোর চুলে হাত বুলিয়ে দিই,এট্টু আদর করে দেই।
সারাদিন না খেয়ে থাকলেও কেউ জিগ্গাস করে না বাবলুকে আজকে সকালে বা দুপুরে খেয়েছে কিনা?চুকচাপ একা ঘরের কোনে বসে কাদঁলে ও কেউ আসেনা সান্তনা দিতে।অনেক অনেক বিপদে পরে বাবলু যকজন দিশেহারা হয়ে যায়,শুধুই মা কে খুঁজে ফেরে সে।অনেক ক্ষন পরে তার খেয়াল হয়,তার তো মা নেই।অনেক বছর হলো মা না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
শহরের সব কিছুই এত বেশি স্বার্থপরতা,এত হিংসায় ভরা যে বাবলু এখানে থাকতে চায় না।আর ও যাবেই বা কোথায়?ওর তো যাওয়ার ও জায়গা নেই।সবাই কেনো এত হিংসে করে?কেনো সবাই বেশি বেশি পেতে চায়?অনেক লাভ করতে চায়?কি হয় মায়া-মমতায় পূর্ণ সমাজ গড়ে তুললে?বাবলু এখানে বেশি দিন বাচঁবে না।ওর দম বন্ধ হয়ে আসে এ শহরে,পরিবারে থাকতে,রাস্তায় হাটতে গেলে।
খুব মন খারাপ থাকে সব সময় ই বাবলুর।আজকে চোখ বুজে সে চলে যেতে চাইছে অনেক অনেক দুরের কোন গ্রামে।অনেক অনেক সবুজ গাছ-পালা থাকবে সেখানে,অনেক পাপখির ডাকাডাকি চলবে।খুব শান্ত,স্বচ্ছ পানির টলটলে ১টা দিঘীর পাশে বসে থাকবে সে।দক্ষিন দিক থেকে শীতল,কোমল পরশ বুলিয়ে যাবে মৃদু এক বাতাস।সব কোলাহল থেমে যাবে।প্রকৃতির সব রুপ ধরা দেবে সেই সময় তার সামনে।
যাওয়া আর হয় না বাবলুর।স্বপ্নটাই দেখে যায় সে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩০