somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিম কলা অপেক্ষা, তামাকজাত পণ্য সস্তা, সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৩৫ টাকা হওয়া উচিত

১৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিম কলা অপেক্ষা, তামাকজাত পণ্য সস্তা। আসন্ন বাজেটে সিগারেটের ৪ স্তর প্রথার পরিবর্তে ৩ স্তর প্রথা চালুকরণ এবং বিড়ি-সিগারেটসহ সকল তামাকজাতদ্রব্যের উপর অধিক কর আরোপ ও সর্বনিম্ন প্যাকেটের মূল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। আজ সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, প্রতি বছর নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে একটি কলার মূল্য ৪ টাকা, কিন্তু ক্ষতিকর একটি সিগারেটের মূল্য মাত্র ১.৫ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চেয়ে সিগারেটের মূল্য অনেক কম। এর কারনেই অনেকেই ধূমপানের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। যা জনগনের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তামাকের উপর কর বৃদ্ধি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির একটি কার্যকর উপায়। এর ফলে জনসাধারণ তামাকের মতো মারাত্বক নীরব ঘাতকের হাত থেকে রক্ষা পাবার পাশাপাশি ধূমপান ত্যাগ করতে উৎসাহী হবে এবং চিকিৎসা খাতে অর্থ ব্যয়ও হ্রাস পাবে।

বক্তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে সিগারেটের কর সর্বনিম্ন ৭০% হওয়া উচিত বলে জানিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে প্রথম তিন স্তরের (মধ্যম, হাই ও প্রিমিয়াম) সিগারেটের কর যথাক্রমে ৭৬%, ৭৫% এবং ৭৫% হলেও সবচেয়ে বেশী প্রচলিত (নিম্নস্তর) সিগারেটের প্যাকেট মূল্য যেমন মাত্র ১৫ টাকা, ঠিক তেমনই এর কর মাত্র ৫৮%। বক্তারা সরকারকে সবার আগে সর্বনিম্ন সিগারেট মূল্যবৃদ্ধি করে ৩৫ টাকা করতে হবে এবং এর কর ভার ক্রমান্বয়ে ৭০% হওয়া অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।

বক্তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে বলেন, তামাকের উপর ১০% কর বৃদ্ধির ফলে ৪২ মিলিয়ন লোক ধূমপান ত্যাগ করবে এবং উন্নয়নশীল দেশসমূহে ৯ মিলিয়ন লোকের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষর ও অনুস্বাক্ষর করেছে। এফসিটিসি অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে তামাকজাত দ্রব্যের কর ও মূল্যবৃদ্ধির বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে সভায় বক্তারা অভিমক্ত ব্যক্ত করেন।

বক্তারা, ধোঁয়াবিহীন তামাকজাতপণ্যের উপর উচ্চ হারে করারোপ কার্যকর করার জন্য বর্তমান “এড ভ্যালোরেম কর” ব্যবস্থার পরিবর্তে নির্দিষ্ট পরিমান (স্পেসিফিক) এক্সাইজ ট্যাক্স ব্যবস্থা চালুর দাবি করেন। জর্দ্দা ও গুলের প্যাকেটে রাজস্ব আদায় নির্ধারনী কোন চিহ্ন নেই এবং প্যাকেটের ধরন ও মাপ ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। এ প্রক্রিয়া রোধকল্পে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে জর্দ্দা ও গুলের প্রতি ১০০ গ্রামের প্যাকেটের উপর ১৫০ টাকা নির্দিষ্ট পরিমান (স্পেসিফিক) এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপের দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, বিড়ির ক্ষেত্রে প্রতি ২৫ শলাকার প্যাকেটের উপর ৪.৯৪ টাকা হারে কর আরোপ (গড় খুচরা মূল্যের ৭০%) এবং প্রকৃত মূল্যের উপর ভ্যাট ধার্য করা হলে প্রায় ৩৪ লক্ষ প্রাপ্ত বয়স্ক ধূমপায়ী বিড়ি সেবন ছেড়ে দিবে। প্রায় ৩৫ লক্ষ তরুন বিড়ি সেবন শুরু করা থেকে বিরত থাকবে। বিড়ি ধূমপায়ীদের মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ অকাল মৃত্যু রোধ করা যাবে। এইসব দিক বিবেচনায় প্রাথমিক পর্যায়ে অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে সব ধরণের বিড়ির প্রতি ২৫ শলাকার প্যাকেটের উপর ১০ টাকা হারে নির্দিষ্ট পরিমান (স্পেসিফিক) এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপের সুপারিশ করেন।

কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন মানবিক এর উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম মিলন, এইড এর নির্বাহী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বকুল, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটির চেয়ারম্যান আমির হাসান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান, মাধবিকা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএমএ রাজ্জাক, নাটাব’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এ কে এম খলিলুল্লাহ, টিসিআরসি’র সহকারি গবেষক মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা।
১২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঈশ্বরের ভুল ছায়া – পর্ব ৩ | ভূমিকা-ব্রীজ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৮



"তুমি যদি বাতাসকে ভালোবাসো, তাকে বশ করো না—তার সুর বোঝো। কারণ বাতাস একবার থেমে গেলে, তার কণ্ঠ আর কখনো শোনা যায় না।"

“ঈশ্বরের ভুল ছায়া” সিরিজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষার ভবিষ্যৎ ভারতে নিহিত ইসরায়েল ও ভারতের ইসরায়েলি প্রতিরক্ষার ভবিষ্যৎ ভারতে নিহিত

লিখেছেন ঊণকৌটী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১৩


উভয় বাজারে নেতৃস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলির যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটছে। এটি ইসরায়েলকে পশ্চিমাদের উপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করছে, যা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের যুদ্ধে সমস্যাযুক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৮


শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কনফ্লিক্ট জোনে পরিণত করলো ড. ইউনুসের অবৈধ দখলদাররা ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:২১



শেষ পর্যন্ত ড.ইউন তার আন্তর্জাতিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখালেন! উনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কখনোই কোন কাজ করেননি ।আমাদের কোনো দুর্যোগে কখনো পাশে দাঁড়িয়েছেন তার কোনো দৃষ্টান্ত নেই । যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত একটি মানবিক দেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৩৮



যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। আমরা বাংলাদেশি তোমরা ভারতীয়। আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই। ভারতের বাংলাদেশের সাথে সাংস্কৃতিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×