somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাবনার এক বিকেল

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মানুষ ধরো, মানুষ ভজো, শোন বলি-রে পাগল মন
মানুষের ভেতরে মানুষ করিতেছে বিরাজন ।।
___________________বাউল রশীদ উদ্দিন

আজ সারা বিকেলটা নিজের জন্য রেখেছিলাম! কাজের যাঁতাকলে কখন যে বিকেল আসে, হারায়, জানি না। বিকেলকে নিজের ভাবতে পারি না। মাঝে-মাঝে ক্লান্তি লাগে। ভাবি আর কত এখন থামা দরকার… প্রবোধ দিয়ে কত পোষ মানাই মনপাখিকে। চেতনার সব রঙ স্থির হয়ে গেছে পরবাসে… অস্থিরতা বেড়েছে জেনে মুখের চেনা ভাষাও ভুলে গেছে কথা। ঠাণ্ডা চেপে ধরছে ঢেকে রাখা বুকে। সূর্যাস্তপর্ব কবে দেখেছি মনে নেই। শরীরে মাটির গন্ধ পাই না। পথে-ফুটপাতে হাঁটি কাদা, মাটি, জল নেই, নেই শুকনো পাতা কিংবা ডাল… চোখে পড়ে শুধু উঁচা-উঁচা দালান, সোডিয়াম লাইট, গাড়ির হর্ণ, কৃত্রিম ফুলের টব, পোষাকুকুর, হাইহিল জুতার টুং টাং আওয়াজ, খোলা-খোলা বুক…

তবুও প্রতিনিয়ত ধ্বংসের ভেতর মানুষের বসবাস। অথচ এ ধ্বংসই কখনো-কখনো ঠেলে নিয়ে যায় আবেগঘন হাওয়া ভরে অনিবার্য ভোগপরায়ণ সমাজ-বিবর্তনের দিকে। ফলে আমরা নির্ণয় করতে পারি না জীবন, আমরা নির্দিষ্ট করতে পারি না আয়ূকাল…। যে কারণে আমাদের আগ্রহ, অনুভব, অভিমান, ভাঙন ও নির্মাণের ভেতর বেড়ে ওঠে, পথ চলে… জীবনের সারাৎসার খুঁজে ধ্বংস ও নির্মাণ ঠেলে মানুষ স্বপ্ন দেখে আগামীর, অ-দেখা জগতভ্রমে পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচলে সমস্তসঞ্চয় বিশ্বাসে সাজিয়ে রাখে

স্বপ্ন ও আশায় মানুষ বাঁচে; এই অল্প পরিসরে চলতে চলতে মানুষ তাঁর শ্রেষ্ঠ সময়কে ধারণ করে আপন মহিমায়; সৃজনশীলতায়। চেতনাবোধ নিজস্ব সত্তায় আবদ্ধ হবার বাসনায় স্মরণস্মৃতি সারাক্ষণই সাহায্য করে, যতটা সম্ভব ক্রিয়াশীল হতে হতে স্নেহ-কোমল-আত্মা ঘুরে। নিজ সীমাবদ্ধতা কাউকে জবাব দিতে চায় না, জিজ্ঞাসাও দায়হীন, আত্মপ্রেরণাহীন। আশা মাঝে মাঝে ফুর্তি করে, উদ্দেশ্যহীনতার ছলে। মানুষ তাঁদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, দৃষ্টিভঙি থেকে কি ভাবে?… প্রতিটি মুহূর্ত তাঁকে প্ররোচিত করে সার্বিক সময়েও অভিজ্ঞতা ঘিরে

মানুষ এ প্রকৃতির অংশ। পৃথিবীর সকল আরোহণ, গ্রহণ, বর্জন, গঠন, প্রকাশ ও প্রতিফলন মোহের দিকে টানে। মানুষের চিন্তা সারাক্ষণই আধুনিক, ইচ্ছা প্রস্তুতি পর্বের মতো আশা বুনে রাখার পালা। জীবনপ্রবাহের প্রতিটি স্পর্শানুভব সে লিখে রাখতে চায় নিজস্ব চিন্তাশৈলী ও অভিজ্ঞতার ভেতর। সন্দেহ নেই প্রতিটি মানুষ তাঁর মনের ভেতর রোমান্টিক কবি; সে রোমান্টিকতার ভেতর নিজেকে তরঙ্গের মতো ভাসায় কল্পনার স্বপ্নপাহাড় সাজায়। আমি মনে করি বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত্ব কবিতার মতো; কবিতাই পারে যাপিতজীবন বদলে দিতে। কবিতার আবেগ আছে, অনুভব আছে, আগুনে ঝলসে ওঠার ক্ষমতা আছে, যেমনি আছে কবিতায় ক্লান্তি, হতাশা, বিরক্তিও...

তবে কবিতা আমার কাছে নারীপ্রেম কিংবা নারীস্পর্শের চাইতেও অধিক তৃপ্তিদায়ক বস্তু। কবিতার ভেতর দিয়ে কবি নিজেই পরিশুদ্ধ হচ্ছে! (যিনি কবিতা লিখছেন) কৃত্রিম বা কল্পনার ক’টি শব্দ নির্বাচন করে মিশালেই কবিতা হয় না। কবিতা হচ্ছে মনের গভীর থেকে তুলে আনা প্রেরণা...। ‘শোকাচ্ছন্ন হাসির উপর দাঁড়ানো কান্না...’

ওসব বললে তুমিই বলবে এতো লজিক্যাল কথা! তোমার কথা আমার যত দুশ্চিন্তা... আমি কি মিথ্যা বললাম? যদি ব্যতিক্রম ভাবো— বড়জোর আমাকে বলতে পারো মনোরোগী। আমি তো জানি মিথ্যা কথারা 'বড়ই সামাজিক' হয়। তুমি দু'পা এগুলেই পেয়ে যাবো নতুন সিকোয়েন্স, অন্য কৌতূহল। আমি ঠিক বুঝি আমাকে টেনে রাখে নীল বাড়ির স্বপ্ন, মনখারাপের শেষসীমা, কারো ইমোশনাল ভাব আর...

আমি ছায়া ধরে হাঁটি, ছায়ার দেখে জাগি, ছায়ায় দেখি পুরো জগৎ সংসার। ছায়াসম্পর্ক হলে ক্ষতি কী?... হউক না এই সব সম্পর্ক ভার্চুয়াল। আমার ছায়ারা চারিদিকে একাকী হাঁটে আর ইচ্ছেরা ঢালি পেতে দাঁড়ায় দূর পাহাড়ের চূড়ায়

ওই চূড়ায় একা বসে থাকা মানে জীবনের অন্য আশ্রয়স্থল, ফলে ছায়া ও পাহাড় আমাকে বোবাদর্শক বানায়। ইচ্ছে হলে সামনে এসো, প্রসারিত করো হাত, দেখবে প্রথমপ্রেমিকা ওইছায়া,শেষপ্রেমিকাও সে। বয়সেও আমাদের সমান। চেহারায়ও মিল। সারাক্ষণ আমরা পাশাপাশি থাকি সুখ-দুঃখ-হাসি-বেদনা ভাগাভাগি করি। সে অর্ধেক ঘুমিয়ে নেয়, আমিও অর্ধেক ঘুমাই। যখন আসে না ঘুম, পাশাপাশি বসে আকাশ দেখি, ছায়াকে প্রশ্ন করি, তুমি কি বলতে পারো : পাশের মানুষ দেখতে আসলেই কেমন?

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৫:৪৫
১০৮ বার পঠিত
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈশ্বরের ভুল ছায়া – পর্ব ৩ | ভূমিকা-ব্রীজ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৮



"তুমি যদি বাতাসকে ভালোবাসো, তাকে বশ করো না—তার সুর বোঝো। কারণ বাতাস একবার থেমে গেলে, তার কণ্ঠ আর কখনো শোনা যায় না।"

“ঈশ্বরের ভুল ছায়া” সিরিজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৫৮


শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কনফ্লিক্ট জোনে পরিণত করলো ড. ইউনুসের অবৈধ দখলদাররা ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:২১



শেষ পর্যন্ত ড.ইউন তার আন্তর্জাতিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখালেন! উনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কখনোই কোন কাজ করেননি ।আমাদের কোনো দুর্যোগে কখনো পাশে দাঁড়িয়েছেন তার কোনো দৃষ্টান্ত নেই । যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত একটি মানবিক দেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৩৮



যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। আমরা বাংলাদেশি তোমরা ভারতীয়। আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই। ভারতের বাংলাদেশের সাথে সাংস্কৃতিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×