বিষয়টি বর্তমানে আমাদের জাতীয় ইস্যুতে পরিনত হয়েছে,
তাই সময় না থাকা সত্ত্বেও লিখতে বসলাম ।
প্রথমেই বলতে চাই আমাদের দেশের বড় বড় দুধ সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলি
অনেক টাকা পয়সা বিনিয়োগ করে "ডেইরী শিল্প" গড়ে তুলেছে।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে পরিদর্শন করে দেখেছি, তাদের কোন অসৎ উদ্দেশ্য নাই,
খামারীদের কাছ থেকে ক্রয়কৃত দুধকে উচ্চমাত্রায় প্রবাহিত করে অতপর দ্রুত ঠান্ডা
করা হয় এবং কোন প্রকার হাতের স্পর্শ ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় মেশিনে বাজারজাতকরণ
করা হয় ।
তাহলে এতদিন যাবত সরবরাহকৃত যে দুধ মানুষ পুষ্টির জন্য খেয়ে আসছে তাতে হঠাৎ করে
কি এমন হলো যে সকল দুধ কােন একজন এর "পক্ষপাত" মূলক রচনায় কোর্ট থেকে রায় এনে খুবই দ্রুত
অত্যন্ত সুকৈাশলে "ডেইরী শিল্প" ধংস করার সুগভীর ষড়যন্ত্র শুরু হলো ???
"ডেইরী শিল্প" এর প্রতিষ্ঠান মালিকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য না জেনে বা
তাদের আত্তপক্ষ শুনানী না করে দুধ বিক্রী বন্ধ করতে বলা হলো,
আবার ২ দিন অতিবাহিত হবার পর এই নির্দেশনা স্হগিত হলো !!!
নেপথ্য নাটকের কুশীলব কথা :
বাজেট পাশের মাসখানিক আগের ঘটনা , কোন এক সকালে অত্যন্ত শক্তিশালী ইউরোপ দুতাবাস থেকে উর্ধতন কর্মকর্তা (২*৩ জন) বড় একটি দুধপ্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আবদার করে বসল, বাজেটে গুড়ো দুধের দাম বাড়ানো যাবে না, আমাদের কাছে তথ্য আছে আপনারা "ডেইরী শিল্প" এর প্রতিষ্ঠান মালিকরা এ বিষয়ে তদ্বীর করছেন ।
কেন একথা আপনারা বলছেন ???
আমরা ইউরোপ থেকে স্বল্পমূল্যে গুড়োদুধ এনে দরিদ্র জনগনকে পুষ্টি দিতে চাই ।
আলোচনার এক পর্যায়ে কারিগরী ডকুমেন্ট বিনিময় হলো এবং পরবর্তীতে আরও আলোচনা হবে সিদ্বান্ত হলো ।
কারিগরী ডকুমেন্ট পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেখা যায়- যে দুধ পুষ্টিখাদ্য বলে আনয়ন করা হবে তা কোন খাঁটি দুধ নয়।
বিদেশী ভাষায় তাকে বলে পিল মিল্ক , এতে বিন্দুমাত্র খাঁটি দুধের উপাদান নাই, দুধের লেক্টো বা ফ্যাট তুলে নিয়ে
উচ্ছিষ্ট অংশে ভেজিটেবল ফ্যাট ও অন্যান্য উপাদান মিশ্রণ করে উচ্চতাপে গুড়োদুধ তৈরী করে ,অনুন্নত দেশে বিক্রী করে
অমানবিক ব্যবসার পদচারনা ।অতএব দুধপ্রস্ততকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি নাকচ করে দিলো ।
এরপর শুরু হলো ভয়ভীতি এবং প্রলোভন, তাতেও যখন কাজ হলো না, সর্বোচ্চ পর্যায়ে হানা দিলো তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন
করার জন্য, বাজেট ঘোষনার ঠিক পূর্ব মুহুর্ত পর্ষন্ত জয়ী ছিলো তাদের ষড়যন্ত্র,কয়েক সেকেন্ড পূর্বে বা বাতিল হয়ে ৫% অতিরিক্ত ট্যাক্স বহাল থাকল । এবার ফোনে হুমকি এলো তরল দুধের ব্যবসা কি ভাবে করেন আমরা দেখে নেবো ।
এরপর থেকে আমরা দেখতে পেলাম দেশের বিভিন্ন স্হান থেকে দুধ পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা চলছে এবং একতরফাভাবে ঘোষনা
এল সকল দুধ বিভিন্ন উপাদানে দূষিত অতএব সব দুধ বাজারজাতকরণ বন্ধ কর। কিন্ত তাদের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে ২ দিন পর
থেকে দুধ বাজারজাতকরণ শুরু হলো তবে, সাধারন জনগনের মাঝে আতন্ক ছড়িয়ে পড়ল ।
দুধের উৎপাদন এবং বিক্রয় অর্ধেকের নীচে চলে আসলো । বলা চলে বিদেশী প্রভুর এদেশীও দালালদের প্রথম ছোবল
যথেষ্ট ক্ষতি করল "ডেইরী শিল্প" কে ।
এবার আসব, দুধের ভেজাল আর দূষিত উপাদান নিয়ে : -------
............................. ......................... ............................................. .................................. ................
প্রয়ােজনীয় তথ্য উপাত্ত জেনে বলছি, আমরা আজ আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার ।
আমদানীকৃত দুধের উপর ৫% অতিরিক্ত ট্যাক্স বহাল এবং দেশীয় "ডেইরী শিল্প" কোন প্রকারে যেন এই সুবিধা
নিতে না পারে , তারই ড্রেস রিহার্সেল হয়ে গেল ।
দেশীয় দুধ খাবেন এবং গুড়ো দুধ পরিহার করবেন ।
কেন করবেন সেই তথ্য প্রকাশ করব অচিরেই ................
১) মিল্কভিটাসহ ৮টি কোম্পানির দুধ নিরাপদ: চেন্নাইয়ের এসজিএস
...............................................................................................
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটাসহ দেশের ৮টি ব্রান্ডের দুগ্ধ উৎপাদনকারী কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ নিরাপদ। এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেন্নাইয়ের এসজিএস।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের উদ্যোগে চেন্নাইয়ে ওই কোম্পানিগুলোর পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করা হয়।
মিল্ক ভিটা, আড়ং, প্রাণ, ফার্মফ্রেশ, আরডি, ইগলু, সাভার ডেইরি এবং একজন প্রান্তিক খামারীর দুধের ১৬টি নমুনা পাঠায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। তাদের গবেষণায়, এ সব নমুনায় এন্টিবায়োটিক, সালফাড্রাগ এবং সীসা ও ক্রোমিয়ামের উপস্থিতি মেলেনি।
মিল্কভিটা থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিম্নে সংযোজন করা হলো ......
মিল্কভিটার পাস্তুরিত তরল দুধে ক্ষতিকর উপাদান নেই। নমুনা পরীক্ষায় একাধিক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রতিবেদনে সর্বোচ্চ মান অর্জন করেছে বিধায় এটি সকলের জন্য নিরাপদ। বাজেটকে কেন্দ্র করে একটি চক্র ক্ষতিকর গুঁড়া দুধ আমদানির পথ সুগম করতে পাস্তুরিত তরল দুধের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
শনিবার (২৯ জুন) বিকালে তেজগাঁওয়ের দুগ্ধ ভবনে এক সংবাদ সম্মলেনে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্কভিটা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. দেলোয়ার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রান্তিক সমবায়ীরা নিজস্ব গাভী থেকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে কাঁচা তরল দুধ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে গুণগতমান যাচাই বাছাই করে পাস্তুরিত তরল দুধ উৎপাদন করা হয়। যথাযথ তাপ-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ করে। মিল্কভিটার নিজস্ব গবেষণাগারে ফ্যাট, এসএনএফ ও ব্যাকটেরিয়াল কাউন্ট ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই বাজারে তরল দুধ বিপণন করা হয়। ফলে তরল দুধে ক্ষতিকর সীসা বা অনুজীব থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) প্রতিবেদনে ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসজিএস-বিডি এবং আইসিডিডিআরবি’র প্রতিবেদনেও মিল্কভিটার তরল দুধ সর্বোচ্চ মান অর্জন করেছে।
মিল্কভিটার এমডি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভোক্তারা আস্থার সঙ্গে নিরাপদ পাস্তুরিত তরল দুধ খেতে পারেন। লাখ লাখ প্রান্তিক খামারির নিজস্ব গাভীর দুধ সংগ্রহের পর পাস্তুরিত করে মিল্কভিটা বাজারজাত করা হয়। যা গত চার দশকে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর বাজেটকে কেন্দ্র করে একটি অসাধুচক্র তরলদুধ নিয়ে অপপ্রচার শুরু করেছে। আসলে তারা মানহীন ও ক্ষতিকর প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ আমদানি করতে চায়। তাদের লক্ষ্য দেশীয় দুগ্ধশিল্পকে ধ্বংস করা।
গত ২৫ জুন প্রকাশিত ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের একজন গবেষকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের জবাবে তিনি বলেন, এ প্রতিবেদন মিথ্যা। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রতিবেদন নয়। তারপরও জনস্বার্থ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিধায় আমরা ফার্মেসি বিভাগকে যে কোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবিলার কথা ভাবছি। সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে শিগগির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে আলোচনার পর মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মিল্কভিটার অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তরল দুধ নিয়ে যত মাথা ব্যথা। অপপ্রচারে তরল দুধের বিক্রি কমে গেছে। এতে সর্বশান্ত হওয়ার পথে দেশীয় খামারিরা। অথচ গুঁড়া দুধের ক্ষতির দিক নিয়ে কোনো আলোচনা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিদেশ থেকে আমদানি করা গুঁড়া দুধের মান যাচাই করা, বাল্ক গুঁড়া দুধ আমদানিতে করের পরিমান ১০ ভাগ থেকে ২৫ ভাগে উন্নীত করা, উন্নত জাতের গাভী ও ষাড়ের বীজের আমদানি শুল্ক মওকুফ, গো-খাদ্যের কাচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক মওকুফ, গো-খাদ্য বিপণন কর রেয়াত, ডেইরি খাতকে ‘থ্রাস্ট সেক্টর’ ঘোষণা এবং দেশে উৎপাদিত দুগ্ধজাত পণ্যের ১৫ ভাগ কর মওকুফের দাবি জানানো হয়।
এ সময় অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) খন্দকার আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) তোফায়েল আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক (বিপণন, ক্রয় ও কারিগরি) আবু মো. শরিফুল ইসলাম ও উপমহাব্যবস্থাপক (মান নিয়ন্ত্রণ) রেহানা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৪:২৫