আমি মিঠামৈন গিয়েছি গত বছর, অনেক দিন ধরে যেতে চেয়ে এবং এক দুইবার ব্যর্থ হবার পরে। মিঠামৈন ধরে উপরের দিকে বা সুরমা বেয়ে নিচে আসার ইচ্ছে ছিল অনেক দিনের সেগুলি সম্ভব হয় নি নানা কারণে।
মিঠামৈন
যেন এই বাজারের বাইরে কোথাও মানুষ নেই
গ্রাম নেই, গেরস্তালি নেই, দা-বটি, কাস্তে ও কোদাল
বাজারেই ফোটে ফুল, ছোটে শিশু ঘর ও গোয়াল
হাওরে ভাসা নৌকার অতীত কোনো দৃশ্য নেই
এই শরবন অভিসারে
মৎস্যজীবীদের ভনিতা
শ্বাসমূলী হিজলের বনে
কোনোদিন সূর্যাস্ত হয় না
রাত্রিতেও আমরা কৃষ্ণপক্ষ
অথবা চান্দ্রসুধাপান করি
বসন্তভোজনের অধিকারে
কানি বক বসে ঠায়, ফরমায়েসি
পুটির ঝাঁক খোঁজে, অশ্বশাবকেরা
অলস মুখ গোঁজে নতুন উপকূলীয় ঘাসে
রোদ জ্বলা নৌকার অনন্ত মেরামত
চলছে এক অখন্ড পিকনিকস্পটে
সকলেই স্কুল ড্রেসে অথবা ভাঁজ
ভাঙা নতুন কাপড়ে, পর্তুলিকা বাদে
সব ফুল ঝকঝকে ঈদের মতো
আজ, হায় ফুল ফোটে কেন বাজারের
ভিড়ে! দর্শক ও দ্রষ্টব্যের বাইরে
নেই কোনো ফুল-পাখি দস্যু বা তস্কর
নতুন জলে নতুন শব
বারোমাস্যা প্লাবনের মতো
শ্রাবণে আর অতিদুঃখ নেই
অতিদুঃখ নেই মধুমাসে
এমনই পর্যটন এ জীবন
নিত্যানন্দ পরমহংসের
.....…..
এই সব বাজার, নৌকা, তৃণবন
ঘোড়া ও মাছের যৌবন
দেখতে দেখতে আমরা মানুষের
প্রেম, কাম ও ঘামের অর্থ করি
অথচ আদিগন্ত জলরাশি কুত্রাপি
নেমিশূন্য জীবনের অন্যথা করে।