আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি পর্ণো গ্রাফীর টুকিটাকির তৃতীয় পর্বে, লেখার শেষে নীচে আগের দুই পর্বের লিঙ্ক দেয়া হল। ইচ্ছে হলে পড়তে পারেন। এবং সিগারেটের প্যাকেটের মতই সতর্কীকরণ হল, পর্ণ মানেই পার্ভারশন। তো চলুন আজকের টপিক গুলো একে একে বলা যাক!
প্লাস্টিক সার্জারী মডেল/স্টারেরা হামেশা করে থাকেন, এধরণের মুভিতে যেহেতু শরীরটাই মুখ্য, তাই এসব পর্ণ অভিনেত্রীরা মোটামুটি মার্কেটে নিজের শরীরের দাম বজায় রাখতে প্রায় পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই প্লাস্টিক সার্জারী করে থাকেন, যার ফলশ্রুতিতে অনেকে ক্যান্সারে পর্যন্ত আক্রান্ত হন। পর্ণ অভিনেত্রীদের সবচাইতে প্রচলিত সার্জারীর মাঝে রয়েছে ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট। আপনি কি আদোউ জানেন, সিলিকনের এই নকল স্তন যে আদতে পেইন ফুল? এর প্রধান কারণ হল, বড় আকারের স্তনের প্রতি আমাদের ছেলেদের দুর্নিবার আকর্ষণ। এছাড়া সিডি কিংবা ডিভিডির কাভারের জন্য বড় স্তন সহ নগ্ন অভিনেত্রীর ফটো কিন্তু আসলেই চটকদার! আগের দুই পর্বে বলা ইরা আইজ্যাক এই দোষেও দুস্ট ছিলেন, কাস্ট করা অভিনেত্রী যদি বুক বড় নয়া করতেন, তবে তিনি তাকে বাদ দিয়ে দিতেন! ইল্লিগ্যাল ইমপ্ল্যান্টের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তিনি ও কাপ নামক একধরণের বিশেষ শেপের প্রতি আবিস্ট ছিলেন! এধরণের ইমপ্ল্যান্ট কে বলা হয় স্টিরিং ইমপ্ল্যান্ট।
স্টিরিং ইমপ্ল্যান্ট এর কারণে স্তনের ভিতর একধরণের তরল ঢুকিয়ে দেয়া হত, যাতে করে তা অস্বাভাবিক আকৃতির দেখায়। এধরণের ইমপ্ল্যান্টের সবচাইতে খারাপ দিক হল, একটা নির্দিস্ট সময় পড়ে পুরো স্তন টিই কেটে আলাদা না করলে (এ ধরণের অপারেশন কে বলা হয় ম্যাস্টেকটমি), যে কোন সময় তা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা অকাল মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়াঁয়।
আমার কাছে লাগা পর্ণের সবচাইতে কুরুচি পূর্ণ ক্যাটাগরী হল ইনসেস্ট বা রক্ত সম্পর্কীয় যৌণ সম্পর্ক। মা-ছেলে, ভাই বোন কিংবা বাবা মেয়ে এধরণের সম্পর্কের মাঝে যৌণ সম্পর্কের অবতারণা হল ইনসেস্ট, এবং পবিত্র সম্পর্ক গুলোকে ভয়াবহ কুরুচিপূর্ণ স্থাপন দুনিয়ার সবচাইতে জঘন্য কাজ গুলোর একটি, যদিও বাস্তবে সবাই অভিনেতা অভিনেত্রী, তারপরেও এধরণের চিন্তা ভাবনা মাথায় আসাটাই অস্বাভাবিক!
পর্ণো সাহিত্য বা চটি জিনিস টি আসলে ছেলেদের চাইতে মেয়েদের মাঝে বেশী জনপ্রিয়।
শতকরা ৮২ ভাগ এসব নোঙ্গরা সাহিত্যের গ্রাহক হল মেয়েরা, এবং পিডিএফ কিংবা কিন্ডেলের মত ইবুক রিডারের মাধ্যমে এগুলোর প্রাপ্যতাও সুলভ। আতি মেয়েরা যেখানে খুশি সেখানে এধরণের উত্তেজক লিটারেচার পাঠের মাধ্যমে যৌণ সুখ লাভ করতে পারেন। এধরণের সাহিত্য রচয়িতারা প্রতি সপ্তাহে মিনিমাম একটি করে প্রাপ্ত বয়ষ্ক উপন্যাস লিখে থাকেন। বর্তমানে সবচাইতে জনপ্রিয় ক্যাটাগরী এক্ষেত্রে- হিপনো-ইনসেস্ট! এই ক্যাটাগরীর চরিত্ররা মাইন্ড কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিবারের বিভিন্ন সম্পর্কের মানূষ গুলোর সাথে যৌণ স্মপর্ক স্থাপন করেন, এমন কি এসব বই বা লিটারেচার এ পশু প্রাণীর সাথেও তারা যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হন। উল্লেখযোগ্য হল-গে কাউবয়, দ্য ম্যান হু রেইজড মি! অথবা হিপনোসিস গে স্টেপ ব্রাদার! অথবা কিপিং ইট ইন আ হাউজ! অথবা ওয়ারউলফ এন্ড টেন্টিকলস!
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে সর্ব বৃহত দোকান এমাজন ডট কম এধরণের বই কিংবা সাহিত্য তাদের স্টোর থেকে ব্যান করেছে, কিন্তু নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এধরণের চটি লেখকরা তা মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছেন! উল্লেখ্য আমাদের দেশ এবং পশ্চিম বঙ্গের বিখ্যাত চটি লেখক ''রসময় গুপ্ত'' কিংবা ইন্ডিয়ার জনপ্রিয় চটি (ইন্ডিয়াতে অনেকেই পানু বলেন) ক্যারেক্টার -সাভিতা ভাবী!! সাধারণত ট্র্যাদিশনাল রোমান্টিক উপন্যাসের নামের আড়ালেও এগুলো বেশ মেলে! এবং মুক্তমনাদের বহুল আলোচিত বাক স্বাধীনতা এধরণের নোঙ্গরা সাহিত্যের অবতারণা সহজ করে দেয়!
ভেনারেল ডিজিজ বা সেক্সুয়ালী ট্রান্সমিটেড ডিজিজ যেমন গণেরিয়া, সিফিলিস, এইডস ইত্যাদি খুব কমন ব্যাপার একজন পর্ণ স্টারের জীবনে। শতকরা ৬৯ ভাগ পুরুষ অভিনেতারা এডাল্ট ফিল্প শ্যুটিং এর সময় কন্ডম ব্যবহার করেন না! আদতে শতকরা দশ ভাগ পর্ণে কন্ডমের ব্যবহার দেখা যায়। তাই যৌন রোগ খুব সহজ একটি বিষয় তাদের জীবনে, সহজ বিষয় হলেও এর ভয়াবহতা ব্যাপক!
২০১৩ সালের ইউসিএল এ গবেষণায় দেখা যায় প্রতি চারজনের একজন পর্ন স্টার কোন না কোন যৌণ রোগে ভুগছেন, হামেশা তারা ক্ল্যামাইডিয়া কিংবা গণোরিয়াতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ক্ল্যামাইডিয়াতে যৌনাঙ্গে ভয়াবহ প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন হয়। ক্ল্যামাইডিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি পরবর্তীতে দৃষ্টি হীণতা কিংবা সন্তান জন্ম দানে অক্ষম হয়ে পড়েন(মেয়েদের)। আর গণোরিয়াতে যদি ট্রিটমেন্ট না করা হয় তবে রোগী মেনিঞ্জাইটিস কিংবা বিভিন্ন হৃদরোগে পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারেন!!!
টিন পর্ন সাধারনত আঠারো কিংবা উনিশ (এইটিন অর নাইন্টিন) বয়সের অভিনেত্রীর যৌণ ক্রিয়ার দৃশ্য কে বলা হয়। টিন পর্ণ হল সেকেন্ড মোস্ট জনপ্রিয় পর্ণ ক্যাটাগরী!! তবে ভয়াবহ বিষয় হল অপ্রাপ্ত বয়সের (আঠারোর নীচে) অভিনেত্রীদের এধরণের পর্ণে অঙ্গশ গ্রহণ ব্যাপক! অতিরিক্ত অর্থ কিংবা দামী একটি ফোন কেনার জন্য বহু মেয়ে এধরণের পর্নে অভিনয় করে থাকেন! এবং আরো ভয়াবহ বিষয় হল প্রাপ্ত বয়ষ্কের সংগা একেক দেশে একেকরকম! এবং আরো ভয়াবহ ব্যাপার হল প্রোডিউসার সহজেই এক দেশের অভিনেত্রীকে অন্য দেশে নিয়ে আইনের ফাকঁ গলে অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়েদের এধরণের পর্ণে অভিনয় করিয়ে নিতে পারেন!
পর্ণের অদ্ভুত সব ক্যাটাগরীর আরেকটি হল নাৎসি পর্ণ! এধরণের উদ্ভট ক্যাটাগরী কিন্তু অনেক আগে থেকেই প্রচলিত যা আপনার কিংবা আমার কাছে সম্পূর্ণ অপ্রচলিত! মানুষ কত খারাপ হয় জানেন? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাজী সৈণ্যদের করা হলোকাস্ট এর থিম নিয়ে বানানো এধরণের পর্ণ সবচাইতে জনপ্রিয় ছিল ১৯৫০ এর দশকে! এবং এর জনপ্রিয়তা সবচাইতে বেশী ছিল খোদ ইজরাইলে! নাজিদের পাশবিকতা কে ঘিরে নির্মিত এধরণের পর্ণ বই কিংবা মুভিকে বলা হত স্ট্যা ল্যাগ ফিকশন! বিভিন্ন কনসানট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদীদের উপর জার্মান এস এস অফিসারদের উদ্ভট যৌণ ক্রিয়া এবং পাশবিকতাই ছিল এর মূল উপজীব্য!
এর মাঝে মেনশন করার মত নাম যেমন- আই ওয়াজ কর্নেল শ্যূলজ'স প্রাইভেট বিচ, যেখানে টিনেজ ছেলেরা ছিল মূল ভিক্টিম! ১৯৬০ সালের পর ইজরায়েল সরকার আইন করে এধরণের পর্ন কে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে।
আমি প্রায়শ একটা উক্তি ব্যবহার করি, ইনসান সে খতরনাক কোই জানোয়ার নেহি হোতা!!!
(চলবে)
পর্ণোগ্রাফীর টুকিটাকি-২
পর্ণোগ্রাফীর টুকিটাকি-১
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:০০