somewhere in... blog

অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্হানীয় বিশ্ববিদ্যালয় “অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি”তে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্হানীয় বিশ্ববিদ্যালয় “অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি”তে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন যে এই বাঁধ বাংলাদেশের জন্য হবে বিপর্যয়কর।

গত শুক্রবার, ৩রা জুলাই, ২০০৯, “ম্যানিং ক্লার্ক সেন্টারে” অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে এ আশংকাও প্রকাশ করা হয় যে, ভারত হয়তো টিপাইমুখকে “Bargaining tool” হিসেবে ব্যবহার করবে।


দক্ষিণ এশিয়ার নদী ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং ‘World Water Forum’ এর পরিচালক জেমি পিটক বাংলাদেশের সরকারের আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনকে (International Watercourse Convention) র‌্যাটিফাই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এই চুক্তিতে বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই। উল্লেখ্য, ভারত ও বাংলাদেশ, দুটো দেশই এ চুক্তিতে সাক্ষর করেনি; যা আন্তর্জাতিক ফোরামে টিপাইমুখকে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধক। বিভিনè উপাত্ত সহকারে তিনি দাবি করেন যে টিপাইমুখ বাঁধ সিলেট অঞ্চলের জৈববৈচিত্র, বিশেষত মৎস্যস্পদকে ধংস করবে যার প্রভাব হবে চিরস্হায়ী । তাছাড়া এ বাঁধের ফলে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বড় ধরনের বন্যার শিকার হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।

ভারতের বড় বাঁধের কারণে সৃষ্ট সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ স্কুল অফ প্যাসিফিক এন্ড এশিয়ান স্টাডিজের ফেলো ডঃ কু›তলা লাহিড়ী দত্ত। তিনি নদীর ওপর বিভিন্ন দেশের সরকার কর্তৃক “অতি নিয়নত্রনের” এর সমালোচনা করেন। টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতায় দুটো দেশের সরকারের বাইরে “তৃতীয় পক্ষ” উভয় দেশের সিভিল সোসাইটির মিলিত কার্যক্রমের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

সিডনী ওয়াটার্সের পরিবেশ বিজ্ঞানী ডঃ নার্গিস আক্তার এই বাঁধের সম্ভাব্য বিপর্যয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন আন্তর্জাতিক আইন না মানা ও স্বচ্ছতার অভাবের জন্য তিনি ভারতীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।

টিপাইমুখকে ভারত সরকার “Bargaining tool” বা দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে অন্য কোন ক্ষেত্রে সুবিধা আদায়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন মানবাধিকার কর্মী, আইটি স্পেশালিস্ট একরাম চৌধুরী। তিনি মনে করেন আধিপত্যবাদী মনোভাব পরিবর্তন করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক পরাশক্তির ভুমিকা পালন করলেই ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়া প্রকৃতপক্ষে উপকৃত হবে। তিনি আরও বলেন, টিপাইমুখ বাঁধের ফলে বাংলাদেশে “Environmental Refugee” র সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বেড়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ বিষয়টিও তুলে ধরা প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের সকল বক্তা উভয় দেশের সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে এই নির্মাণকাজ বন্ধ সম্ভব নয় বলে অভিমত দেন। বিষয়াটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে তাঁরা অভিমত প্রকাশ করেন।

মুল খবরটি প্রিয় অস্ট্রেলিয়ায় সর্বপ্রথম প্রকাশিত।
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

১. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৬

সালাহ্ উদ্দিন শুভ্র বলেছেন: কাজের পোস্ট।

২. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১১

গোয়েবলস বলেছেন: হায় আমাদের civil society ?????

৩. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৫

সিদ্ধার্থ আনন্দ বলেছেন:

নিচের লিংকে গেলে নার্গিস আক্তার বানুর পেপারটি পাবেন।





Click This Link

৪. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৬

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: প্লাস। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সচেতন ও সম্পৃক্ত করার এই উদ্যোগকে স্বাগতম জানাই।

৫. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৮

আবু সালেহ বলেছেন:



শুধু আমাদের সরকারই বুঝলো না যে বাঁধের ফলে দেশে কি বড় ধরনের ক্ষতি হবে....



আর বুঝবেই বা কেমনে দাদাদের খুশি করা নিয়েই তো মত্ত.....

৬. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪২

অমি রহমান পিয়াল বলেছেন: আবু সালেহ, যেইটা বললেন সেইটা হইলো গা বাচাইন্না কথা। সরকারের শক্তি হইলো জনগণ, জনসমর্থন। নাগরিক হিসেবে রাস্তায় নামেন, তারপর দেখেন সরকার কারে খুশী করে। এইসব ডায়লগ তো সত্তর সালে কাইয়ুম খান, গোলাম আজমরা দিতো; ২০০৯ সালেও এইগুলা দিয়া কি লাভ। মিছিলে আসেন।

৭. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৯

অলস ছেলে বলেছেন: সুশীল সমাজতো দালাল আমাদের দেশে। ভারতের সুশীল সমাজ নিশ্চিত ভারতের স্বার্থই দেখবে।



জানানোর জন্য ধন্যবাদ।

৮. ১৭ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:০৯

রাসেল ( ........) বলেছেন: গণমাধ্যম সোচ্চার আর প্রযুক্তির সহজলভ্যতা তেমন নৃশংসভাবে প্রতিরোধ দমনে সহায়তা করছে না, তাই টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সোচ্চার হয়েও মানুষেরা এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছে।



টিপাইমুখ বাঁধ নির্মিত হবে, পাশার দান দেওয়া হয়ে গেছে। এখন এটা ঠেকাতে পারে ভারতের জনসাধারণ এবং তাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। ভারত বাংলাদেশের সাথে যেহেতু দ্বিপাক্ষিক পানিবন্টন চুক্তিতে সাক্ষর করেছে, সুতরাং সে নীতিগত ভাবে বাংলাদেশকে সকল তথ্য উপাত্ত দিয়ে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু যদি সেটা না করে তবে বাংলাদেশ প্রতিবাদী হয়েও তেমন বড় কিছু করতে পারবে না।



আন্দোলনটা করতে হবে ভারতের মনিপুর মিজোরামের বাসিন্দাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে, এবং একই সাথে ভারত জুড়ে অনেক জায়গায় নির্মিত বাঁধে উদ্বাস্তু মানুষদের সাথে পাওয়া যাবে।



১৮ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ৮:১৩

লেখক বলেছেন: যেহেতু আমরা কিছু করতে পারবো না তাই মুখে আঙুল আইসক্রিম মনে করে চুষতে থাকি ? তাই না ? ভালোই বলেছেন। এই বিষয়ে আপনার সাথে আমি একমত নই। আলোচনা / বিতর্ক ফারুক ওয়াসিফ বা পি মুন্সির ব্লগেই হোক। আমি শুধু একটা খবর শেয়ার করলাম।



আমি যেকোনো রকম বাঁধ/ ড্যাম/ ব্যারেজের বিরুদ্ধে। ভারতের চুতিয়ামী নতুন না। এরা ফাণক তাকে পুন মেরে যাবে আর আমাদের সুশীলরা আরামে উহ আহ করবে ! ! ভালো ভালো

৯. ১৮ ই জুলাই, ২০০৯ সকাল ১০:০১

জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার লেখা। আপনারা যারা বিদেশে ভাল অবস্থানে আছেন-তাঁরা আরো বেশী সচেতন হলে এবং এমন কিছু সভা সেমিনার আয়োজন করে আমাদের ন্যায্য দাবী আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরে জনমত সৃস্টিতে সহায়ক হতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে অনেক ধন্যবাদ জানাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সচেতন ও সম্পৃক্ত করার এই উদ্যোগের জন্য।

১০. ১৯ শে জুলাই, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৪

সামছা আকিদা জাহান বলেছেন: হায় রে সুশীল সমাজ।। কে কাকে মানুষ বলব??

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শুভ জন্মদিন নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৪



জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল নাহিদ ইসলাম।তোমরা এই জেন-যি প্রজন্ম সবাই আমার সন্তানের বয়সি বলে তুমি হিসাবে সম্বোধন করে এই পোস্ট লিখছি। রাজপথের মিটিং মিছিল থেকে জুলাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দূর্নীতিমুক্ত ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০৬


কালের কন্ঠ(বসুন্ধরা গ্রুপ) গত ২১শে এপ্রিল সংবাদ করেছিলো দুদকের চেয়ারম্যান মন্তব্য করেছেন "অন্তবর্তী সরকার দূর্নীতিমুক্ত"। তিনি কিভাবে জানলেন যে সরকার দুর্নীতিমুক্ত ? একজন সংবিধিবদ্ধ স্বতন্ত্র সংস্থার প্রধান হয়ে কোনোরূপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেহেশত - দোযখ আর ফেরেশতা নিয়ে আমার চিন্তা-ভাবনা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১৩

আমার প্রিয় মানুষদের একজন রাজীব নূর ভাই। তিনি তাঁর মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলছেন। আমি তাঁর ভিডিওগুলো দেখি। সেগুলো আমাকে মনে করিয়ে দেয়, আমি তাঁর সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের পাশে আমেরিকা-ইসরায়েল। পাকিস্তানের পাশে কারা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩


গত রাতে ইসরায়েল থেকে ভারতে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে গেছে একটি কার্গো বিমান। তাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড মিসাইল বিপুল পরিমাণে আছে। এই মিসাইলগুলো অতি নিখুঁতভাবে মেঘ, বৃষ্টি বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৩



ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×